ভূমিকা ‘বিক্ষুদ্ধ বলাকা’র ডানায় আজ ভর করেছে এক পৃথিবী রক্তরাঙ্গা মেঘ; বিক্ষুদ্ধ বলাকার কণ্ঠ জুড়ে আর্তনাদধ্বনি। একদিন স্বাধীন বলাকা’র একটা মুক্ত আকাশ ছিল,সে আকাশে চাঁদ ছিল; বলাকার তারা ভরা একটা মুক্ত আকাশ ছিল । দিনের শেষে গােধূলি আলােয় আপন মনে গান গেয়ে বলাকা তার নীড়ে ফিরে আসতাে। আজ সবই কেবল দুঃসহ স্মৃতি। বিক্ষুব্ধ বলাকার আজ স্বাধীনভাবে উড়ার কোন আকাশ নেই; অচেনা কোন এক অবহেলার আগুনে পুড়ে গেছে সমস্ত আকাশ। সমস্ত আকাশ আজ অবরুদ্ধ ; রক্ত মেঘের ঘনঘটা সমস্ত আকাশ জুড়ে। বলাকার কণ্ঠে আজ কোন গান নেই; বলাকার কণ্ঠনালী জুড়ে অবরিত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বিক্ষুদ্ধ বলাকা একটি শােকগাথা, পৃথিবীর সকল ব্যর্থ মানুষের কিছু অব্যক্ত কথার দলীল। বিক্ষুদ্ধ বলাকা' কাব্যগ্রন্থের প্রতিটি পংক্তি জুড়ে দ্রোহ ও শােকের মিছিল। ‘তুমিও তাদের একজন’, ‘অতঃপর আমি অমানুষ’, ‘আমার আত্মহত্যার পরে, ‘শেকলে বাধা বর্ণমালা’, ‘নিহত নক্ষত্রের নিশিকান্না’, ‘বিষন্ন এ ব-দ্বীপে', ‘অবিন্যস্ত অভিধান’, ‘দ্বিধা’, আমি এক যুদ্ধাহত মুক্তিযােদ্ধা বলছি’, ‘বিজয়ের প্রতীক্ষায়’, ‘অচেনা শ্রাবণ’, ‘নতুন আয়ােজন ইত্যাদি কবিতাসহ গ্রন্থের মােট ২৮টি কবিতায় ছন্দ, গদ্য, অলঙ্কারের যে সন্নিবেশ ও মিলন ঘটেছে তা পাঠক হৃদয়কে আলােড়িত করবে। বিচ্ছেদকাতর মনের এক অসামান্য সৃষ্টি, এক অনবদ্য কাব্যকলার নাম বিক্ষুদ্ধ বলাকা’। কষ্টের আগুনে পুড়ে ক্ষতবিক্ষত কবি হৃদয়ের পঙক্তিগুলাে সকল কবিতা প্রেমীর মন ছুঁয়ে যাবে মনে রেখে যাবে কষ্টের কিছু স্থায়ী ছাপ আল্পনা। যত দিন মানুষ আছে, ততদিন কবিতা থাকবে, যতদিন কবিতা থাকবে ততদিন শােকের মশাল জ্বালিয়ে বিক্ষুব্ধ বলাকা সাহিত্যের আকাশে উড়তে থাকবে; উড়তে থাকবেই।