কবিতা দাঁত ভাঙে নিজের কিংবা অন্য কারো কালোত্তীর্ণ কবিদের কথাই ধরুন- তারা নিজেরই জানতেন না একটি কবিতা কীভাবে তার লেখা অন্য একটি কবিতা অতিক্রম করে কিংবা কালজয়ী একটি কবিতা সৃষ্টির পরে আর কোন কবিতা জয়ী হওয়ার স্বপ্নই দেখে না। কবি ও কবিতারও একটি কাল আছে তাই স্রষ্টা ও সৃষ্টি একই অর্থে নয় ভিন্ন ভিন্ন ব্যঞ্জনায় কখনো বেঁচে থাকতে হয় সে কবি কিংবা কবিতার মতো যতো সত্যই হোক। কবি ও কবিতা-পৃষ্ঠা/৩৭ এ কবিতাটির রচয়িতা খান চমন-ই-এলাহি। ‘অবরোধে প্রণয়রাত’ কাব্যগ্রন্থের একটি অন্যতম কবিতা এটি। খান চমন-ই-এলাহি বাংলা সাহিত্য জগতে ইতিমধ্যেই একটি পরিচিত নাম হয়ে উঠেছেন। তার নিজস্ব চিন্তা ও উপস্থাপনভঙ্গি তাকে অনেকের থেকে ভিন্ন করে তুলেছে। আসলে কবিতার মাধ্যমে নিজেকে চেনানো কিন্তু সহজ সাধনা নয়। কবিতা দিয়ে কবিতাকে অতিক্রম করা, নিজের সাথে নিজের প্রতিদ্ব›দ্বীতা করার মধ্য দিয়ে কবি হয়ে ওঠেন অনেকের কাছেই অপ্রতিদ্ব›দ্বী । কবিতার বিষয়, ভাষা এক হলেও এর চিন্তা কবিকে করে তোলে অনন্য। বুকে বুক রেখে আমি অন্যালয়ে যাকে নিয়ে অভিসারে শুদ্ধ পালাই সে বোঝে অন্য কিছু আমি তোমাতে এখন কেবলি স্বর্গ-সুখ চাই। অভিসার-পৃষ্ঠা/৩৯ প্রেমের এক মনোবিশ্লেষণ এ কবিতাটি। একই সাথে দ্বৈত-সত্তা কাজ করে মানুষের মনোজগতে। এর কি কোনো ব্যাখ্যা আছে? প্রেম যেমন অলৌকিক বোধ এ-ও ঠিক তাই। প্রেমের যেন কোনো নিয়ম নেই, বাধা নেই। কবির প্রেমিক হৃদয় থেকে উৎসারিত এ পংক্তিগুলো যেনো সে কথাই স্বাক্ষ্য দিচ্ছে। ৬৪টি পৃষ্ঠার এ বইটিতে রয়েছে ৫৬ টি কবিতা। এক এক ভাবনা আর ভাষা ব্যাকরণের উৎকর্ষতা লক্ষণীয় কবিতার পরতে পরতে। সব শেষ কবিতাটির শিরোনাম দিয়ে এ বইটির নামকরণ করেছেন কবি। দেশ এবং দেশের মানুষের নানা অন্তর জ্বালা আর বঞ্চনার কথা কবি খুবই দৃঢ়ভাবে তুলে ধরেছেন। কাব্যপাঠকদের জন্য এ বইটি একটি বিস্ময় হতে পারে।