"ভাষা আন্দোলন-মুক্তিযুদ্ধ-বাংলাদেশ" বইটির মুখবন্ধ থেকে নেয়াঃ বাঙালি ও বাংলাদেশের ইতিহাস হলাে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি উল্লেখযােগ্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও পর্বের সমষ্টিগত রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও বিজয়ের ইতিহাস। প্রথমেই আমাদের প্রিয় মাতৃভাষা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রাপ্তির আন্দোলন। দ্বিতীয়ত বাঙালির স্বাধীকার তথা স্বায়ত্ত্বশাসনের আন্দোলন। তৃতীয়ত ও সর্বোপরি স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম ও এর মুক্তির জন্য ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ। এসবই অবিচ্ছিন্ন ও ধারাবাহিক আন্দোলন, সংগ্রাম ও যুদ্ধের গৌরবােজ্জ্বল বিজয় ও সফল পরিণতি, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক উপাদান। এ সকল উপাদান ও পর্বে বিভিন্ন সময়ে আপামর বাঙালি জনগণকে সংগঠিত করতে নেতৃত্ব দিয়েছেন অনেক শ্রদ্ধেয় দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দ। এসব মহান ব্যক্তিত্বদের মাঝে যিনি পুরােধা ও অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে বাঙালিদের জীবনে ও বিশ্বে স্থান করে নিয়েছেন তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই যথার্থই বলা হয়ে থাকে বাংলাদেশের ইতিহাস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অবিচ্ছিন্ন সত্ত্বা। নিজের কর্মগুণে, নেতৃত্বের দক্ষতা, সক্ষমতা ও বিচক্ষণতায় তিনি বিজয়ের মুকুট অর্জন করেছেন। তাইতাে তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। এই গ্রন্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে সংশ্লিষ্ট এসব বিষয় নিয়েই আলােচনা করা হয়েছে। এই গ্রন্থের কয়েকটি প্রবন্ধ রচনায় আমি পূর্বে প্রকাশিত বিভিন্ন লেখা, বিশেষ করে গ্রন্থ, পত্রিকার প্রবন্ধ থেকে এবং গুগল সার্চ করে তথ্য সংগ্রহ ও সংযােগ করেছি। কোনাে বিশেষ নাম উল্লেখ না করে আমি বিনীতভাবে এসব লেখার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল লেখক, সাহিত্যিক, গবেষক ব্যক্তিত্বদের নিকট আমার বিনীত ঋণ স্বীকার করছি ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। এই গ্রন্থটি লেখার পিছনে আরেকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের ভূমিকাকে আমি বিশেষভাবে স্মরণ করছি। তিনি আড়াই হাজার বাসীর প্রিয় মানুষ, জনগণ-মননন্দিত রাজনীতিবিদ, মহান জাতীয় সংসদের সম্মানিত সাংসদ, আমার প্রিয় ও স্নেহভাজন জনাব আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম বাবু। তিনি আড়াইহাজার সফর আলী সরকারি কলেজে একুশে ফেব্রুয়ারি শহিদ দিবস উপলক্ষে আয়ােজিত একাধিক অনুষ্ঠানে আমাকে অতিথি বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। গ্রন্থের দুটি মূল প্রবন্ধ ঐ সব অনুষ্ঠানে আমার প্রদানকৃত বক্তৃতারই অংশ। গ্রন্থটি লেখার অনুপ্রেরণাও সেখান থেকেই পেয়েছি।
জন্ম ৩০ ডিসেম্বর ১৯৫৪, নারায়গঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলাধীন বিনাইরচর গ্রামে। পিতা আবুল কাসেম খান, মাতা রহিমা খাতুন। স্থানীয় সেন্ট্রাল করোনেশন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক(সম্মান) ও স্নাতকোত্তর। ১৯৭৯ সালে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি জীবন শুরু। পরবর্তীতে বিসিএস ৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা হিসেবে আডিট এন্ড একাউন্টস সার্ভিসে সহকারী মহা হিসাবরক্ষক পদে যোগদান করেন। প্রতিরক্ষা অডিট অধিদপ্তরের মহাপরিচলাক পদে কর্মরত অবস্থায় ৩০/১২/২০১৪ পিআরএল ২০১৫ সালে অবসর গ্রহণ করে। নিয়মিত চাকুরি থেকে অবসরের পর বিশ্বব্যাঙ্ক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন এজেন্সিতে পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। প্রশিক্ষণ ও সরকারি কার্যোপলক্ষে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন। চাকুরি জীবনের পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজকল্যাণমূলক কাজ ও সংগঠনের সাথে জড়িত আছেন। বিনাইরচর ইসলামিক সেন্টার কমপ্লেক্স-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ অফিসার্স ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ছিলেন ও আড়াই হাজার উপজেলা চাকুরিজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১-এ ভারতে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। বর্তমানে রূপালী ব্যাংক লি: এর পরিচালনা পর্ষদের সম্মানিত পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।