"সীরাত স্মারক-২০২১"বইটির প্রসঙ্গে কিছু কথা: সকল প্রশংসা আল্লাহ তাআলার, দরূদ ও সালাম মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (আলায়াঃ এর প্রতি, শান্তি বর্ষিত হােক তার পরিজন, সাহাবা কিরাম ও সকল মুমিনের প্রতি । সীরাতপাঠ ও প্রতিযােগিতা ২০২০ ছিল আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের এ যাবৎকালের সবচেয়ে মহৎ ও সবচেয়ে পরিশ্রমসাধ্য কাজগুলাের একটি। এরচেয়ে ব্যবয়বহুল অনেক কাজ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন ইতােমধ্যে আঞ্জাম দিয়েছে, কিন্তু এরচেয়ে পরিশ্রমসাধ্য কাজ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন আর সম্পন্ন করে নি। তারপরও আল্লাহর রহমত ও তাওফীকে এটি সুসম্পন্ন করতে পেরেছি। সকল প্রশংসা আল্লাহ তা'আলার। শেষ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) পৃথিবীর ২০০ কোটি মুসলমানের সবচেয়ে প্রিয়ভাজন ব্যক্তিত্ব। এটি জেনেও তথাকথিত সভ্য বিশ্বের একটি দেশ রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে সুপরিকল্পিতভাবে পৃথিবীর সবচেয়ে মহত্ত্বর ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছিল, তার ব্যাঙ্গচিত্র অঙ্কন ও প্রদর্শন করছিল। কথিত সভ্যরাষ্ট্র ফ্রান্সের এহেন জাতিঘৃণামূলক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সকল মুসলমান যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদ করেছে। আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনও পৃথিবীর সকল মুসলমানের সঙ্গে একাত্ম হয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে। তবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন প্রতিবাদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ও অনন্য রকম কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যেন প্রতিবাদটা কয়েকদিন পরই ইস্যুর স্রোতে হারিয়ে না যায়; যাতে প্রতিবাদের চেতনা মুমিন-হৃদয়ে স্থায়ীভাবে জাগরূক থাকে। সেটি সীরাতপাঠ ও প্রতিযােগিতা ২০২০। যার বিরুদ্ধে এত ষড়যন্ত্র, যার আদর্শ বিলীন করার এত অপচেষ্টাতার শিক্ষা ও আদর্শ আমাদের সামর্থানুযায়ী অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়াই ছিল এই আয়ােজনের উদ্দেশ্য। আলহামদু লিল্লাহ এই কর্মসূচির আওতায় আমরা ৩০ হাজার মানুষের কাছে সীরাতগ্রন্থ পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিযােগিতায় ৪০ হাজার মানুষ অংশ নিয়েছেন। তাদের অংশগ্রহণও এই কর্মসূচির প্রত্যক্ষ প্রভাব। পরােক্ষভাবে আরাে কত সংখ্যক মানুষ এতে প্রভাবিত হয়েছেন, আমাদের কাছে এর সঠিক পরিসংখ্যান নেই। রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে ভালােবাসে না, এমন মুমিন পাওয়া যাবে না। কারণ তাঁকে ভালাে না বেসে তাে মুমিনই হওয়া যায় না। তা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ (এয়াইএর পূণাঙ্গ জীবনী আদ্যন্ত একবার পাঠ করেছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নিঃসন্দেহে। হাতেগােনা। সীরাতপাঠ ও প্রতিযােগিতা ২০২০-এর আওতায় এই সংখ্যাটা আমরা সামান্য হলেও বাড়াতে পেরেছি বলেই আমাদের ধারণা। আমাদের আহ্বানে নারী-পুরুষ ও ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার এত মানুষ সাড়া দিয়েছেন, তা ছিল আমাদের কল্পনারও বাইরে। এত মানুষের অংশগ্রণের একমাত্র কারণ রাসূল (এলআই-এর প্রতি ভালােবাসা। আমরা শুধু মানুষের ভালােবাসাকে উপজীব্য করে একটি মহৎকর্ম সম্পন্ন করেছি। আমরা শুধু এটুকুই করেছি। আল্লাহ তাওফীক না দিলে কাজটি আমরা করতে পারতাম না। এজন্য আমরা মহান আল্লাহর তা'আলার নিকট যার-পরই নেই কৃতিত্ব। সীরাতপাঠ ও প্রতিযােগিতা ২০২০-এর একটি পর্বে ছিল রচনা প্রতিযােগিতা। আমরা কথা দিয়েছিলাম, প্রতিযােগীদের নির্বাচিত রচনা দিয়ে একটি স্মারকগ্রন্থ প্রকাশ করব। আলহামদু লিল্লাহ সেটি আপনাদের হাতে পৌঁছে দিতে পেরেছি। আমরা মনে করি, স্মারকগ্রন্থটি পড়লে রাসূলুল্লাহ (লগ-এর জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক সম্পর্কে জানতে পারবেন। যারা সীরাতপাঠ ও প্রতিযােগিতায় অংশ নিয়েছেন, স্মারকগন্থ সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য-সহযােগিতা করেছেন, অন্তত উৎসাহ দিয়ে পাশে থেকেছেন'তাদের কারাে নাম উল্লেখ করে খাটো করতে চাইছি না। তাদের সকলের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আল্লাহ সবার কল্যাণ করুন।
শায়খ আহমাদুল্লাহ একজন সুপরিচিত ইসলামী বক্তা। তিনি ১৯৮১ সালের ১৫ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরের বশিকপুরে জন্মগ্রহণ করেন।প্রাথমিক শিক্ষা বশিকপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এরপর কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। কয়েক বছর নোয়াখালীর কয়েকটি মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করার পর তিনি হাতিয়ার ফয়জুল উলূম মাদ্রাসায় ভর্তি হন। সেখানে কিংবদন্তি আলেম দ্বীন মুফতি সাইফুল ইসলাম (রহ.)-এর সান্নিধ্য ও ছাত্রত্ব লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়। এরপর দেশের বৃহত্তম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দারুল উলূম হাটহাজারী মাদরায় ভর্তি হন। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) (সানুবিয়া) উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ১০ তম স্থান, স্নাতক (ফজিলত) ৩য় স্থান এবং ২০০১ দাওরায়ে হাদীসে সম্মিলিত মেধা তালিকায় ২য় স্থান অর্জন করেছে। দাওরায় হাদিস শেষ করে খুলনা দারুল উলূম থেকে ইফতা সম্পন্ন করেন। তিনি একজন ইসলামিক স্কলার যিনি কোরআন ও হাদিস নিয়ে গবেষণা করেন। শায়খ আহমাদুল্লাহ বিভিন্ন বিষয়ে শতাধিক গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে ইসলামী সমাজে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তাঁর কাজগুলি ইসলামী বিশ্বাসের প্রতি তাঁর দক্ষতা এবং নিবেদন প্রদর্শন করে। তিনি ইসলামী সম্প্রদায়ের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন এবং তার কাজের মাধ্যমে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিস্তার চালিয়ে যাচ্ছেন।