অমিত গোস্বামীর 'কবিতার ক্লাস্রুম' যখন ধারাবাহিক হিসেবে পড়েছিলাম তখন মনে হয়েছিল এই লেখা আমার প্রাত্যহিক কবিতা জীবনকে আন্দোলিত করেছে। প্রতিদিনের চলের মধ্যে যে ছন্দ আছে তা ধারন করেছে এই ধারাবাহিক। কলকাতায় দুপুরে ফেরিওয়ালার 'শিল কাটাবে গো, শিল কাটাবে' যে কাব্যের যে ছন্দের সৃষ্টি করে তার উৎস সম্পর্কে সন্ধান দিয়েছে এই বই। কবিতার ছাত্র-ছাত্রীদের এই বইটি ধর্মগ্রন্থ হিসেবে নেওয়া উচিৎ। নিজেকে অন্য কেউ করে তোলাটাই এক জন মানুষের কবি হয়ে ওঠা।সেখানে রয়েছেন অমিত গোস্বামীর 'কবিতার ক্লাসরুম; নিয়ে। তাঁর স্বীকারোক্তির কবিতার নবপ্রসূত ধারাবাহিকতা থেকে এক পারম্পর্যে চলে আসা জীবন বদলাবদলি নিয়ে বিশদ আলোচনা... নানা চরিত্রের ভিড় হয়ে হারিয়ে যেতে থাকে প্রতি মুহুর্তে। চোখের কোণে সামান্য জল এনে দেওয়া আর ঠোঁটের কোণে চিলতে হাসি ফুটিয়ে তোলা একই সঙ্গে সাধ্য হয়েছে প্রায় ক্ষণে ক্ষণে।এক জন মানুষের কাজ তাঁর কাছে কতখানি, ‘প্রায়রিটি’ নামক বহুব্যবহৃত শব্দ ব্যবহার না করেই তা বুঝিয়ে দেওয়া যায় কোনও কোনও ঘটনায়। অতি যত্নে সে কাহিনিও বর্ণনা করেছেন অমিত গোস্বামী। রবার্ট ফ্রস্ট বলেছিলেন, গরম স্টোভের উপরে বরফের টুকরো যে ভাবে গলে যায়, একটি কবিতা সেই ভাবেই গলতে গলতে নামবে। কবিতার এই আপাত-সারল্যের সঙ্গে তার গভীরতার কোনও দ্বৈরথ নেই।সাধারণ পাঠকের মনটিকে খুব ভাল বোঝা না থাকলে এত বেশি করে তাদের সঙ্গে মিলেমিশে কবিতাকে পেশ করা সম্ভব নয়। পাদপীঠ থেকে নেমে আসা এই অমিত গোস্বামী আমাদের উপহার দিয়েছেন এই বইয়ের মাধ্যমে। - কবি সঞ্জয় গুহ ঠাকুরতা,কলকাতা