পৌষ মাস চলছে। বাইরে ভীষণ শীত। রাত বেশ গভীর। পুবাইলের অদূরে ঝলমলিয়া গ্রাম। মতি মিয়ার চায়ের দোকানে একলাছ সাহেব বসে আছেন। উনি অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার। দোকানে অন্য কোনো ক্রেতা নেই। এ সময় লাল ফ্রক পরা রহস্যময় একটি ছোট্ট বালিকার আবির্ভাব ঘটে। সেই সঙ্গে কিছু নীল ফড়িং। লাল ফ্রক পরা রহস্যময় ছোট্ট বালিকাটি জানায় তার নাম নাফিলা। তার বাবার নাম একলাছ। একলাছ সাহেব ঘাবড়ে যান। হারিকেনের আলোয় ছোট্ট বালিকাটিকে দেখতে থাকেন। মতি মিয়া, একলাছ সাহেবকে সতর্ক করে দেন, এ মেয়েটি অলৌকিক, রহস্যময় কোনো কিছু। এর আগেও এই মেয়েটি অন্য কোনো এক ভদ্রলোকের সঙ্গে এই দোকানে, এমনই রাতের আঁধারে কথা বলেছিল। ঐ ভদ্রলোককেও লাল ফ্রক পরা এ রহস্যময় বালিকাটি একইভাবে, ভদ্রলোকের নিজের কন্যার নামে, নিজের নাম বলেছিল! পরদিন ওই ভদ্রলোকের নিজের কন্যাটি পুকুরের পানিতে ডুবে মারা যায়। একলাছ সাহেব ভয় পেয়ে যান। অজানা আতঙ্কে ভোগেন। উনার একমাত্র মেয়ের নাম নাফিলা। এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। নাফিলাকে উনি প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসেন। এলাকার মেধাবী ছেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাবেরের সঙ্গে নাফিলার প্রেমের সম্পর্ক চলছে। মাখন, নাফিলার সঙ্গে সাবেরের এই সম্পর্ককে মেনে নিতে পারছে না। মাখন নিজেও নাফিলাকে ভালোবাসতে শুরু করেছে। নাফিলার ওপর ক্ষোভ ও অভিমান নিয়ে সাবের বিদেশ পাড়ি জমায়। গৃহশিক্ষক বেলাল মাস্টারও নাফিলাকে ভালোবাসতে শুরু করে। নাফিলা এখন কী করবে? গল্পটি নাটকীয়ভাবে এগুতে থাকে। সাবের ও নাফিলার ভাগ্যে কী আছে? নাফিলা কি বেঁচে থাকবে? শেষ মুহূর্তে আবারও একটি নীল ফড়িং ও ছোট্ট সেই রহস্যময় বালিকার আবির্ভাব ঘটে। এখন কী হবে? সবকিছুর ব্যাখ্যা হয় না- ব্যাখ্যা খুঁজতে নেই!
আব্দুল্লাহ শুভ্র। পুরো নাম মোঃ আব্দুল্লাহ আল ইয়াছিন শুভ্র। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। তার লেখা প্রথম উপন্যাস শেষ ট্রেন। শেষ ট্রেন উপন্যাসটি উপন্যাস প্রেমীদের ব্যাপক প্রশংসা ও পাঠপ্রিয়তা পায়। তার লেখা নীলফড়িং উপন্যাসটি অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১ এ পাঠকপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা উপন্যাস গুলোর মধ্যে একটি। তারপর একে একে তিনি লিখেন- মাখনের দেশলাই, তৎপুরুষ উপন্যাস। এ দুটো উপন্যাস পাঠক মহলে সমাদৃত হয়। পাঠকদের অনুরোধে ২০২৪ এর বইমেলায় লিখেছেন কালপিয়াসী জ্যোৎস্না। উপন্যাস লেখার পাশাপাশি কবিতা লেখায় ও তিনি সমান দক্ষ। তার প্রকাশিত প্রথম কবিতা রাজ মঞ্জুরী অর্চনা। দৈনিক প্রথম আলো ২০০৮ সালের ১২ই সেপ্টেম্বরের সাহিত্য পাতায় তা প্রকাশিত হয়। এছাড়াও নিয়মিতভাবে তিনি যুগান্তর পত্রিকায় কবিতা লেখেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ গুলো- ফাগুন রঙা শব্দ, চলে এসো এক কাপড়ে, কস্মিনকালেও তুমি প্রেমী ছিলে না এবং এখনো প্রমিথিউস। আব্দুল্লাহ শুভ্রের ভিতর বাস করে এক দেশপ্রেমী আর রোমাঞ্চ প্রিয় ভালবাসার সত্তা। সঙ্গে দার্শনিক মনন। এজন্য তার রচনা হয়ে ওঠে সাজুয্য উপমায় সাবলীল স্রোতধারা।