চার্লি চ্যাপলিন নাম শুনলেই ছোট-বড় সবার মুখে হাসি ফোটে, চোখে ভেসে ওঠে ঢোলা প্যান্ট, কোট টাইট, ছোট টুপি, বড় জুতো। হাতে ছড়ি। ঠোঁটের ওপর ছোট্ট একটু গোঁফ। এই সাজেই ভবঘুরের আত্মা ভর করে চ্যাপলিনের মগজে। অভিনয় শেষ হলে সাজ মুছে ফেলেন যে মানুষটি, কি তাঁর পরিচয়? কেমন তাঁর শৈশব, কোন পথ, কত পথ পার হয়ে তিনি বিশ্ববাসীর হৃদয়ের আসন দখল করেছিলেন? কে তাঁর সিনেমার কাহিনীকার? কার স্ক্রিপ্ট? নির্দেশনা কে দেন? এত সব কাজের ও সাজ মুছে ফেলা আসল মানুষটির গল্প কে বলবে? বলেছেন তিনি নিজেই। নিজের কথা নিজের মতো করে বলাতেও যে এমন সহজ পটুত্ব চার্লির, তাঁর আত্মজীবনী প্রকাশিত হওয়ার আগে তা জানাই যায়নি। অকপট মানুষটির সহজ কলমে তরতরিয়ে চলেছে গল্পের পর গল্প। এক মহান শিল্পী ও নিতান্ত সাধারণ, গরীবির তকমা লাগানো বালক থেকে পৃথিবীর হৃদয়েশ্বর হয়ে ওঠা চার্লির আত্মজীবনীর নির্মাণ। বস্তির দৈন্য থেকে বিলাসের বৈরাগ্য, সবই আঁকা হয়েছে নিরবচ্ছিন্ন বুনোটের নৈপূণ্যে। নিজের সিনেমার গল্পকার তিনি নিজে, স্ক্রিপ্টও নিজেরই রচনা, নির্দেশনায় সেই তিনিই, আর ভবঘুরের চরিত্রকে জীবন্ত করে তোলার দায়িত্বও তাঁর। যন্ত্রণাকে কেমন সহজ নির্বিকার ভঙ্গিতে বলা যায়, তারই দলিল চার্লি চ্যাপলিনের ‘মাই অটোবায়োগ্রাফি’। বাংলায় ভাষান্তর করেছেন রমা চৌধুরী।