ইসলামের অপার সৌন্দর্য হলো এর প্রতিটি বিধান দলীল-প্রমাণ ভিত্তিক। ইসলামের মূলনীতি নির্ধারিত হয়েছে ওহীর মাধ্যমে। মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ স.-এর জীবদ্দশাতেই ইসলামের পূর্ণতা ঘোষণা করেছেন। ফলে কিয়ামত পর্যন্ত ইসলামের আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত ও মৌলিক বিষয়সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন বা নতুন কিছু সংযোজনের প্রয়োজন পড়বে না। আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ স. -এর পূর্ণতার বাইরেও যদি কেউ দীনের মৌল বিষয়গুলোতে নতুন কিছু যুক্ত করে তা বিদ‘আত হিসেবে গণ্য হবে। বিশ্বাস ও আমল তথা প্রায়োগিক ক্ষেত্রে দীন ইসলামের বিকৃতির বিষয়টিকেই আল্লাহর রাসূল স. বিদ‘আত নামে অভিহিত করেছেন। সেই সাথে রাসূলুল্লাহ স. বিদ‘আতের ব্যাপারে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। কেননা দীনের মধ্যে বিদ‘আতের অনুপ্রবেশ এর মৌলিকত্ব বিনষ্ট করে। বিদ‘আত এমন এক ব্যাধি যা মুসলিম উম্মাহকে দীনের মূল চেতনা থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেয়। পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কারণে ইহুদী ও খ্রিস্টধর্ম বিকৃতির শিকার হয়েছে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন বিকৃতির ঊর্ধ্বে; আল্লাহ তাআলা নিজেই এর হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। ফলে কুরআনুল কারীমে বিকৃতি সাধনের অবকাশ নেই। কিন্তু আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ এবং ইসলামের বিধানগুলো প্রয়োগ ও প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বিকৃতির শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পথ ও মাধ্যমে ইসলাম সম্প্রসারিত হওয়ায় এবং ইসলামী জ্ঞানের স্বল্পতা হেতু এ অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন বিদ‘আত অনুপ্রবেশ করেছে এবং দিন দিন এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারা চলতে থাকলে দীন ও শরীয়ত এক সময় বিদ‘আতের বেড়াজালে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে পড়বে যে, বিদ‘আতের আগাছা থেকে দীন ও শরীয়তের মূল রূপ উন্মোচন করা কষ্টকর হয়ে পড়বে এবং ধীরে ধীরে ইসলাম মৌলিকত্ব হারিয়ে একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকাচারে পর্যবসিত হবে। ইসলামী জীবনাদর্শ যাতে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে তার মূল সৌন্দর্য নিয়ে স্বরূপে দীপ্তিমান থাকে সে জন্য প্রয়োজন প্রচলিত বিদ‘আতসমূহ চিহ্নিত করা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক ড. আহমদ আলী এ প্রয়োজনীয়তা পূরণে অগ্রসর হয়েছেন। তিনি প্রচলিত বিভিন্ন বিদ‘আত নিয়ে রচনা করেছেন ‘বিদ‘আত’ সিরিজ। আট খণ্ডে সমাপ্য এ সিরিজে তিনি বিদ‘আতের পরিচয়, মৌলিক নীতিমালা, শ্রেণি বিভাজন, পরিণাম আলোচনাসহ আকীদা, ইবাদাত, জানাযা, কবর, কবর যিয়ারাত, ঈছালে সওয়াব, ধর্মীয় দিবস, তাসাউফ, আধুনিক বিভিন্ন মতবাদসংশ্লিষ্ট বিদআতগুলো তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার নতুনভাবে বিন্যস্ত এ সিরিজ প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ খ- প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে আদৃত হয়েছে। এটি এই সিরিজের পঞ্চম খ-; এতে ঈদে মীলাদুন্নবী, ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিদ‘আতের সংশ্লিষ্ট বিধান তোলে ধরা হয়েছে। যাতে আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে আচরিত ঈদে মীলাদুন্নবী, ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিদ‘আতগুলো চিহ্নিত হয় এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ তা থেকে বেঁচে থেকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ অর্জন করতে পারেন। মহান আল্লাহ সবাইকে তাঁর বিধান অনুধাবন ও পালনের তৌফিক দান করুন। আমীন। ইসলামের অপার সৌন্দর্য হলো এর প্রতিটি বিধান দলীল-প্রমাণ ভিত্তিক। ইসলামের মূলনীতি নির্ধারিত হয়েছে ওহীর মাধ্যমে। মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ স.-এর জীবদ্দশাতেই ইসলামের পূর্ণতা ঘোষণা করেছেন। ফলে কিয়ামত পর্যন্ত ইসলামের আকীদা-বিশ্বাস, ইবাদাত ও মৌলিক বিষয়সমূহে কোন পরিবর্তন-পরিবর্ধন বা নতুন কিছু সংযোজনের প্রয়োজন পড়বে না। আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ স. -এর পূর্ণতার বাইরেও যদি কেউ দীনের মৌল বিষয়গুলোতে নতুন কিছু যুক্ত করে তা বিদ‘আত হিসেবে গণ্য হবে। বিশ্বাস ও আমল তথা প্রায়োগিক ক্ষেত্রে দীন ইসলামের বিকৃতির বিষয়টিকেই আল্লাহর রাসূল স. বিদ‘আত নামে অভিহিত করেছেন। সেই সাথে রাসূলুল্লাহ স. বিদ‘আতের ব্যাপারে কঠোর সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন। কেননা দীনের মধ্যে বিদ‘আতের অনুপ্রবেশ এর মৌলিকত্ব বিনষ্ট করে। বিদ‘আত এমন এক ব্যাধি যা মুসলিম উম্মাহকে দীনের মূল চেতনা থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে দেয়। পূর্ববর্তী আসমানী কিতাবসমূহে পরিবর্তন-পরিবর্ধনের কারণে ইহুদী ও খ্রিস্টধর্ম বিকৃতির শিকার হয়েছে। মহাগ্রন্থ আল-কুরআন বিকৃতির ঊর্ধ্বে; আল্লাহ তাআলা নিজেই এর হেফাজতের দায়িত্ব নিয়েছেন। ফলে কুরআনুল কারীমে বিকৃতি সাধনের অবকাশ নেই। কিন্তু আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণ এবং ইসলামের বিধানগুলো প্রয়োগ ও প্রতিপালনের ক্ষেত্রে বিকৃতির শিকার হচ্ছে। বাংলাদেশে বিভিন্ন পথ ও মাধ্যমে ইসলাম সম্প্রসারিত হওয়ায় এবং ইসলামী জ্ঞানের স্বল্পতা হেতু এ অঞ্চলের মুসলিমদের মধ্যে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে বিভিন্ন বিদ‘আত অনুপ্রবেশ করেছে এবং দিন দিন এর ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ধারা চলতে থাকলে দীন ও শরীয়ত এক সময় বিদ‘আতের বেড়াজালে এমনভাবে আবদ্ধ হয়ে পড়বে যে, বিদ‘আতের আগাছা থেকে দীন ও শরীয়তের মূল রূপ উন্মোচন করা কষ্টকর হয়ে পড়বে এবং ধীরে ধীরে ইসলাম মৌলিকত্ব হারিয়ে একটি কুসংস্কারাচ্ছন্ন লোকাচারে পর্যবসিত হবে। ইসলামী জীবনাদর্শ যাতে বিকৃতির হাত থেকে রক্ষা পেয়ে তার মূল সৌন্দর্য নিয়ে স্বরূপে দীপ্তিমান থাকে সে জন্য প্রয়োজন প্রচলিত বিদ‘আতসমূহ চিহ্নিত করা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের স্বনামধন্য অধ্যাপক ড. আহমদ আলী এ প্রয়োজনীয়তা পূরণে অগ্রসর হয়েছেন। তিনি প্রচলিত বিভিন্ন বিদ‘আত নিয়ে রচনা করেছেন ‘বিদ‘আত’ সিরিজ। আট খণ্ডে সমাপ্য এ সিরিজে তিনি বিদ‘আতের পরিচয়, মৌলিক নীতিমালা, শ্রেণি বিভাজন, পরিণাম আলোচনাসহ আকীদা, ইবাদাত, জানাযা, কবর, কবর যিয়ারাত, ঈছালে সওয়াব, ধর্মীয় দিবস, তাসাউফ, আধুনিক বিভিন্ন মতবাদসংশ্লিষ্ট বিদআতগুলো তুলে ধরেছেন। বাংলাদেশ ইসলামিক ল’ রিসার্চ এন্ড লিগ্যাল এইড সেন্টার নতুনভাবে বিন্যস্ত এ সিরিজ প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ খ- প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠকমহলে ব্যাপকভাবে আদৃত হয়েছে। এটি এই সিরিজের পঞ্চম খ-; এতে ঈদে মীলাদুন্নবী, ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সংক্রান্ত বিদ‘আতের সংশ্লিষ্ট বিধান তোলে ধরা হয়েছে। যাতে আমাদের সমাজে যুগ যুগ ধরে আচরিত ঈদে মীলাদুন্নবী, ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট বিদ‘আতগুলো চিহ্নিত হয় এবং ধর্মপ্রাণ মানুষ তা থেকে বেঁচে থেকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ অর্জন করতে পারেন। মহান আল্লাহ সবাইকে তাঁর বিধান অনুধাবন ও পালনের তৌফিক দান করুন। আমীন।
ড, আহমদ আলী ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম জেলার লােহাগাড়া উপজেলাধীন পশ্চিম কলাউজান গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছাত্রজীবনের শুরু থেকে প্রতিটি স্তরে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে বি.এ. (অনার্স) ও মাস্টার্স পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জনসহ পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। অতঃপর সৌদি আরবের রিয়াদস্থ কিং সাউদ ইউনিভার্সিটি থেকে আরবি ভাষার শিক্ষক প্রশিক্ষণের ওপর উচ্চতর ডিপ্লোমা অর্জন করেন।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি চুনতী হাকীমিয়া আলিয়া মাদরাসা, চট্টগ্রাম-এর মুহাদ্দিস ও উপাধ্যক্ষ ছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যােগদান করেন। বর্তমানে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে প্রফেসর হিসেবে নিয়ােজিত আছেন এবং বাংলাদেশ ইসলামিক ল' রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা। থেকে প্রকাশিত ত্রৈমাসিক গবেষণা পত্রিকা ‘ইসলামী আইন ও বিচার'-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক।
তিনি দেশেবিদেশে বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সেমিনারে গবেষণাপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। ইতােমধ্যে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা থেকে তাঁর 'ষােলটি গবেষণামূলক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তন্মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলাে- খলীফাতু রাসূলিল্লাহ আবু বাকর আস-সিদ্দীক (রা.), বিদ'আত (১ম-৪র্থ খণ্ড), মুসলিম লিপিকলা: উৎপত্তি ও বিকাশ, আধুনিক আরবী কাব্যের ইতিহাস ১ম খণ্ড, ইসলামের শাস্তি আইন, তাযকিয়াতুন নাফস (আত্মশুদ্ধি), ইসমাতুল আম্বিয়া, ইসলামে বাসস্থানের অধিকার ও নিরাপত্তা, ইসলামের দৃষ্টিতে পােশাক, পর্দা ও সাজসজ্জা, সার্বভৌমত্ব: ইসলামী দৃষ্টিকোণ, গণতন্ত্র ও ইসলাম। তাছাড়া আরবি ভাষা ও সাহিত্য, লিপিকলা, ইসলামের ইতিহাস, জীবনদর্শন, আইন ও সমাজ ব্যবস্থার ওপর তার নানা বিষয়ে লিখিত পঞ্চাশােধিক গবেষণাপ্রবন্ধ দেশবিদেশের বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।