ফেরদৌসী রহমান তাঁর শৈশব ও কৈশোরকাল কাটিয়েছেন বাংলার নদীমাতৃক সবুজ শ্যামল প্রাকৃতিক দৃশ্যের আবরণে, পরিবারের সাথে চল্লিশ বছর পাকিস্তান, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও কুয়েতে বাস করেছেন, ভ্রমণ করেছেন পঞ্চাশটিরও বেশি রাষ্ট্র। স্বদেশে ও প্রবাসে তাঁর কর্মতৎপর জীবনের নানান অনুভূতিই তিনি রোমন্থন করেছেন কথা ও স্মৃতি নামের দুই মলাটে আবদ্ধ এই লেখাগুলোতে। ফেরদৌসী রহমান আজীবন সমাজসেবায় যুক্ত ছিলেন, যখনই সুযোগ পেয়েছেন আত্মনিয়োগ করেছেন দুঃখী মানুষের সেবায়, আর্থিক অনুদান ও সহযোগিতার পাশাপাশি নানান সংগঠনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থেকেছেন। জীবনের পথ চলতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করেছেন আপনজন হারানোর বেদনা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, দেশের অরাজকতা, ও দরিদ্রদের হতাশা। প্রবাস জীবনে প্রত্যক্ষ করেছেন সাদ্দাম হোসেনের কুয়েত দখল ও পরবর্তী ঘটনাবলি, এছাড়াও মালয়েশিয়াসহ নানান বিদেশ-বিভূঁইয়ে ঘনিষ্ঠভাবে দেখেছেন প্রবাসের বিচিত্র সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবন। সমাজসেবা ও সাংস্কৃতিক তৎপরতার সূত্রেও পরিচয় ঘটেছে বিচিত্রসব মানুষের সাথে, তাদের মাঝে কেউবা বিদগ্ধজন, কেউবা সাধারণ গৃহকর্মী। এইসব অভিজ্ঞতার নির্যাস মিলবে কথা ও স্মৃতি নামের এই স্মৃতিচারণে। এখানে তিনি লিখেছেন প্রবীণ নারীদের সংগঠন। হেমন্তিকার নানান আনন্দ-অনুষ্ঠানের বিবরণ, প্রসঙ্গক্রমে এসেছে হেমন্তিকার প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর আখতার ইমাম-এর অবদানের কাহিনি, আরও এসেছে সেকাল এবং একালের উৎসব। উদ্যাপনের ভিন্নতা, লিখেছেন নানান সামাজিক বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের সুখ হারিয়ে যাওয়ার কথা। বলেছেন। হেমন্তিকার নিজস্ব ভবনের জন্য তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমের কথা। • নারীদের প্রতি সমাজের বৈষম্যমূলক নিষ্ঠুর আচরণ এবং প্রবীণদের অবহেলিত ও কষ্টকর জীবন সম্পর্কেও লিখেছেন, নানান সামাজিক সমস্যার সমাধান সম্পর্কে তিনি তাঁর মতামত ব্যক্ত করেছেন। কথা ও স্মৃতি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে বিভিন্ন সময়ে লেখা তাঁর। কিছু কবিতাও। কয়েক দশকের পরিবর্তনশীল একটি সমাজের চিত্র তার বর্ণনায় মিলবে, মিলবে ফেরদৌসী রহমানের বিশাল মনেরও একটা প্রতিচ্ছবি।