'তিনি এলেন মুসলিমরা তখন বিচ্ছিন্ন তাদের আকাশে ক্রুসেডার আতঙ্কের ঘনঘটা, তিনি এলেন, তার উন্মুক্ত তলোয়ারের ছটায় ভেসে গেল যত বাতিলের খরকুটো শত্রুরা পালিয়ে গেল মুসলিম ভূখণ্ড ছেড়ে আল-আকসা ফিরে পেল তার প্রতীক্ষিত মুক্তি।' . এই দিগ্বিজয়ী মহানায়কের নাম সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি৷ লাখো মুসলিম যুবকের স্বপ্নের নায়ক। অসীম সাহসিকতা আর বীরত্বের সৌকর্য দিয়ে তিনি হয়ে আছেন মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের মধ্যমণি৷ প্রিয় পাঠক, ইতিহাসকোষের ধারাবাহিক প্রকাশনায় আমাদের আরেকটি অনবদ্য সংযোজন—আমাদের ইতিহাসের আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বলতর নক্ষত্রগুলোর অন্যতম চরিত্র—মহাবীর সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি। ক্রুসেড যুদ্ধের ভয়াল বিভীষিকার বিপরীতে নির্ভীক চিত্তে ন্যায়ের পতাকা হাতে ঝড়ের বেগে আত্মপ্রকাশ-করা এক মহাবীর! ইতিহাস যাকে ‘ক্রুসেডারদের আতঙ্ক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। শুধু যুদ্ধ জয়ই নয়; বীরত্ব আর মহানুভবতায় শত্রুর চোখেও তিনি ছিলেন ‘দি গ্রেট সালাহুদ্দিন’। আপোষহীন অকুতোভয় এক মহানুভব সুলতান। পাঠক, তার জন্ম থেকে নিয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া, একের পর এক রাজ্য দখল করে ক্রুসেডারদের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দেওয়া, মুসলিমদের প্রথম কিবলা বাইতুল মাকদিস বিজয় করা, এমন অসংখ্য নাটকীয়তাভরা এ মহান শাসকের বর্ণিল জীবন। সৈনিক-জীবন থেকে বাইতুল মাকদিস বিজয়ের এ দীর্ঘ অভিযাত্রায় তিনি এক রহস্যরোমাঞ্চকর চরিত্র—দিগ্বিজয়ী সুলতান! তার জীবন যেখানেই গেছে, সেখানেই গড়ে উঠেছে ইতিহাস। এই বই মহাবীর সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবির সেই রুদ্ধশ্বাস জীবনেরই অনবদ্য দাস্তান! এই বই ক্রুসেড যুদ্ধের ইতিহাসধারার পাঙ্ক্তেয় ও অনিবার্যতম দলিল। এই দুনিয়ায় আপনাকে স্বাগত।
Title
মহাবীর সুলতান সালাহুদ্দিন আইয়ুবি - ১ ম খন্ড ও ২ খন্ড
ফকিহ, রাজনীতিক ও বিশ্বখ্যাত ইতিহাসগবেষক। ইসলামের ইতিহাসের উপর বিশ্লেষণধর্মী তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে দুনিয়াজোড়া খ্যাতি অর্জন করেছেন। এই মহা মনীষী ১৯৬৩ সনে লিবিয়ার বেনগাজি শহরে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পড়াশোনা বেনগাজিতেই করেন। যৌবনের প্রারম্ভেই গাদ্দাফির প্রহসনের শিকার হয়ে শায়খ সাল্লাবি আট বছর বন্দি থাকেন। মুক্তি পাওয়ার পর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি সাউদি আরব চলে যান। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়া ও উসুলুদ্দিন বিভাগ থেকে ১৯৯৩ সনে অনার্স সম্পন্ন করেন। তারপর চলে যান সুদানের উম্মু দুরমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানে উসুলুদ্দিন অনুষদের তাফসির ও উলুমুল কুরআন বিভাগ থেকে ১৯৯৬ সনে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ১৯৯৯ সনে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ফিকহুত তামকিন ফিল কুরআনিল কারিম’। ড. আলি সাল্লাবির রাজনৈতিক দীক্ষাগুরু বিশ্বখ্যাত ফকিহ ও রাজনীতিক ড. ইউসুফ আল কারজাবি। কারজাবির সান্নিধ্য অর্জনে তিনি ১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে কাতার গমন করেন। নতুন ধারায় সিরাত ও ইসলামি ইতিহাসের তাত্ত্বিক গ্রন্থ রচনা করে ড. আলি সাল্লাবি অনুসন্ধিৎসু পাঠকের আস্থা ও জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। নবিজির পুর্ণাঙ্গ সিরাত, খুলাফায়ে রাশিদিনের জীবনী, উমাইয়া খিলাফত, আব্বাসি খিলাফত, উসমানি খিলাফতের উত্থান-পতনসহ ইসলামি ইতিহাসের সাড়ে তেরোশ বছরের ইতিহাস তিনি রচনা করেছেন। তা ছাড়া ইসলামি ইতিহাসে বিশেষ খ্যাতি অর্জন করা ব্যক্তিদের নিয়ে তিনি আলাদা আলাদা গ্রন্থ রচনা করেছেন। ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির রচনা শুধু ইতিহাসের গতানুগতিক ধারাবর্ণনা নয়; তাঁর রচনায় রয়েছে বিশুদ্ধতার প্রামাণিক গ্রহণযোগ্যতা, জটিল-কঠিন বিষয়ের সাবলীল উপস্থাপনা ও ইতিহাসের আঁকবাঁকের সঙ্গে সমকালীন অবস্থার তুলনীয় শিক্ষা। এই মহা মনীষী সিরাত, ইতিহাস, ফিকহ ও উলুমুল কুরআনের উপর আশির অধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন। তাঁর রচনাবলি ইংরেজি, তুর্কি, ফরাসি, উর্দু ও বাংলা ভাষায় অনূদিত হয়ে পৃথিবীর জ্ঞানগবেষকদের হাতে হাতে পৌঁছে যাচ্ছে। আল্লাহ তাঁকে দীর্ঘ, নিরাপদ ও সুস্থ জীবন দান করুন। আমিন। —সালমান মোহাম্মদ লেখক, অনুবাদক ও সম্পাদক ২৪ মার্চ ২০২০