দমনে রাখবেন হাইপের রহস্যের শেষভাগে আপনি যখন উন্মোচনের আনন্দ পান তখন কিন্তু সব সময় আপনি নিজেকেই আবিষ্কার করে থাকেন! তো আসুন আপাতঃদৃষ্টিতে রহস্যময়, জটিলতার এক জগতে নিজেদের প্রলুব্ধ করি। অতঃপর উপভোগ করি রহস্যময়তার মুগ্ধতা! সস্তা প্রেম-ভালোবাসার কাব্য তো বাজারেও বিকোয়। আমরা চাই রহস্যর ধূসরাভ গভীর জটিলতা। পাজলের ঘোরে আত্ম অনুসন্ধান!!’ এভাবেই বলা হয়েছে হাইপোথিসিস সাহিত্যের অন্তর্নিহিত বোধের কথা এই বইটির মুখবন্ধে। ‘ঘোর’ (The Hype) ফেসবুক সাহিত্য গ্রুপটি তাদের মটো হাইপকে সামনে রেখে এই বইটি প্রকাশ করতে যাচ্ছে। যাতে রয়েছে এরকম বিস্ময়কর সব রহস্যময় সাহিত্য বোধের অনুরণন। একটি অপ্রচলিত সাহিত্য ধারা, তারচেয়েও জটিল সাহিত্য উপস্থাপনকে কি সুনিপুণ লেখনীতে এই বইটাতে গ্রুপটির লেখকরা তুলে ধরেছেন তা না পড়লে বুঝা বা অনুধাবন করা কঠিন। হাইপ সাহিত্যে বিস্তারিত বর্ণনা যতটা না থাকে তারচেয়েও বেশি থাকে জটিলতা আর রহস্য। হাইপোথিসিস ধারার সাহিত্যগুলাতে তাই অবলীলায় ফিলোসফি, সুরিয়ালিজম, প্যারা নরমাল বিবরণ, ম্যাজিক রিয়ালিজম, মেটাফোর ইত্যাদি সকল ধারাই সংযুক্ত হয়ে যায়। এডগার এলান পো, এরিস্টটল, প্লেটো, বার্ট্রান্ড রাসেল, পিকাসো, সালভাদর দালির মতো লিজেন্ডারি কবি, দার্শনিক, চিত্রশিল্পীগণ মূলত হাইপোথিসিস ধারাতেই কাজ করেছেন। বাংলা সাহিত্যে হাইপোথিসিস ধারার অবিসংবাদিত মুকুটহীন সম্রাট জীবনানন্দ দাশ হয়ে পরবর্তীতে হ্যাংগ্রী মুভমেন্টের কবিদের লেখায় এই ধারাটি ব্যাপকভাবে ফুটে উঠেছে। সুকান্ত ভট্টাচার্য, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ, মহাদেব সাহা প্রমূখ সেরা কবিরাও একই ধারায় তাদের বিভিন্ন কবিতা লিখেছেন। আর এই ধারাকেই অনুসরণ করে হাইপোথিসিস নিযে কবিতা লিখেছেন এই বইটির বিভিন্ন লেখকগণ। যদিও বইটির কিছু কবিতা এই ধারার বাইরে। তবুও সেগুলো ছিলো সাহিত্যিক মানে কোনও অংশেই ফেলে দেবার মতো নয়। অথচ এই বইটির কোনও লেখকই জনপ্রিয় ও পরিচিত কবি নন। বেশিরভাগেরই এর আগে ছাপার আকারে কোনও বইয়ে লেখা যায়নি। কিন্তু বইটির লেখাগুলো পড়ে বিস্ময়ে অভিভূত হতে হয় যে, এই অন্তরালে থাকা লেখকরা কি দুর্দান্ত সব কবিতা তাদের ভান্ডারে লুকিয়ে রেখেছেন। পড়তে গিয়ে ভাবতে বাধ্য হতে হয় তাদের হাইপ ঘরানার কবিতাগুলো নিয়ে।