কবি মোশতাক আল মেহেদী চার দশকের অধিক সময় বাংলা সাহিত্যে নিভৃতে তার সৃজনের চাষ করে যাচ্ছেন। বইয়ের সংখ্যা ১৫ অধিক। পূর্ব প্রকাশিত ৫টি কবিতা বই এবং অপ্রকাশিত ৫০ অধিক কবিতা নিয়ে প্রকাশিত ‘নির্বাচিত কবিতা’। নির্বাচিত কবিতা নিয়ে আসমা চৌধুরী বলেন- যখন কাব্যগ্রন্থের নাম হয়, ‘জোড়া লেগে ছিঁড়ে যাই’ তখন আমাদের এপার-ওপার সব ঘণ্টা থেমে যায় কারণ এই সত্য সকলেরই জানা। এই অতি সরল সত্য যে গভীর দর্শন হয়ে ওঠে মোশতাক আল মেহেদীর কলম তা জানে। তিনি কবি। তিনি গল্পকার। তিনি উপন্যাসের কারিগর, শিশু সাহিত্যিকও। সব পরিচয়কে ছাপিয়ে তিনি অসামান্য হয়ে ওঠেন কবি পরিচয়ে। ‘সেই কষ্ট নদী জানে’ প্রথম কাব্যগ্রন্থ থেকে আজ পর্যন্ত যা লিখে যাচ্ছেন সেখানে বাস করছে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন, অপূর্ব শৈশব, মুক্তিযুদ্ধ ও বন্ধু হারানোর শোক। আছে জীবনানন্দের রূপসীবাংলা নিয়ে রূপসী সাঁতার। তাঁর লেখার চরিত্র, পাশের স্বজন, কেউ যেন আমাদের অপরিচিত নয়। সেই রুইখ্যা পাগলী, বন্ধু আনন্দ, লোভী মানুষের জগৎসংসার। বরিশালের প্রতিদিনের আঁকা ছবি, আঞ্চলিক ভাষায় লেখা কাব্যগ্রন্থ ‘লছমী দিচ্ছে হাঁড়িতে’। আন্ধারমানিক, পায়রা, আগুনমুখা নদীর ছায়া সব আমাদের নিজস্ব। আমাদের অস্তিত্ব। তবু এক ঘোরÑসারাদিন মাথায় ফেরি করা অপূর্ব শব্দের বীজ। কিছু আলো-আঁধারি, তীর্যক প্রশ্নবান, শব্দের খোঁচা, কবি মোশতাক আল মেহেদীকে বাঁচিয়ে রাখবে অনন্তকাল। তাঁর কবিতার শব্দে ছবি আঁকে, ‘জল-সূর্য সোনা’। ‘আউশের ফ্যানে লবণ গলতে থাকা মাটির বাসনে আনন্দের ঢেউগুলো ধোঁয়া হয়ে উড়ছে আকাশে।’