১৯৫৩ সালে সিলেটের বিয়ানীবাজার থানার লাউতা বাউরভাগ গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম ব্যবসায়ী পরিবারে ডা. ফয়জুল ইসলামের জন্ম। পড়াশোনা কুলাউড়া, বিয়ানীবাজার ও সিলেটের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ১৯৭০ সালে সিলেট এমসি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ (বর্তমান সরকারি কলেজ) ছাত্রসংসদ নির্বাচনে বার্ষিকী সম্পাদক নির্বাচিত। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে অংশগ্রহণ ও মুক্তিযুদ্ধে যোগদান। ১৯৭৩ সালে সিলেট সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের কার্যকরী পরিষদ সদস্য নির্বাচিত। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সিলেট জেলায় ছাত্রলীগকে পুনর্গঠিত করতে মুখ্য ভূমিকা পালন ও জেলা ছাত্রলীগের প্রথমে যুগ্ম-আহ্বায়ক নির্বাচিত। ১৯৭৬ সালে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ লবিতে দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ ও ‘সূর্য সারথী' নামে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা। ১৯৭৭ সালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দান। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সাল পর্যন্ত সামরিক স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে জেলা ছাত্রলীগ নেতৃত্বের পুরোভাগে অবস্থান। ১৯৮১ সালে সিলেট মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস। ১৯৮৩ সালে বিসিএস উত্তীর্ণ। ১৯৮২ সালে সহকারী সার্জন হিসেবে সরকারি চাকরিতে যোগদান ও দাম্পত্যজীবনও শুরু। ১৯৯০ সালে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে যুক্তরাজ্যে বসবাস। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি প্রবাসীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও কল্যাণে বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হয়ে বাংলাদেশি ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার মান বৃদ্ধিতে প্রতিষ্ঠা করেন মাদারটাং ও সাপ্লিমেন্টারি স্টাডি সাপোর্ট সেন্টার। সমাজসেবামূলক কাজে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০০ সালে গোল্ডেন জুবিলি সিভিক অ্যাওয়ার্ড লাভ। ২০০১ সালে মিলেনিয়াম কমিশনের আজীবন ফেলোশিপ প্রদানে লন্ডনে বিভিন্ন প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি স্কুল পরিচালনা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন। এখন সর্বইউরোপীয় বঙ্গবন্ধু পরিষদের চেয়ারম্যান। একই সঙ্গে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, শেখ কামাল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও জাতীয় চার নেতা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। সেইভ দ্য লাইফ নামের একটি সমাজসেবামূলক সংস্থার মাধ্যমে পাশে দাঁড়িয়েছেন অসহায় মানুষদের। এক নাগাড়ে ৮ বছর দায়িত্ব পালন ইস্ট লন্ডন এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের নির্বাচিত গভর্নর হিসেবে। চার সন্তান ফাহমিদ জাহান ইসলাম, তৌসিফ জাহান ইসলাম, শামসাদ জাহান ইসলাম ও ইফ্্ফাত জাহান ইসলাম যুক্তরাজ্যে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে এখন চাকরি করছেন।
আল আজাদ মূলত একজন গণমাধ্যম কর্মী। প্রায় সাড়ে চার দশক পার করেছেন সাংবাদিকতায়। একই সঙ্গে বিচরণ করেছেন শিশু-কিশাের সংগঠন আর সাহিত্য-সংস্কৃতির জগতে। অত্যন্ত সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন স্বৈরাচার ও মৌলবাদ বিরােধী প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে। নিরলস গবেষণা করছেন মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। ইতােমধ্যে মুক্তিযুদ্ধ পাঠাগার এবং মুক্তিযুদ্ধ অনুশীলন নামে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন। সিলেটে মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আল আজাদের লিখিত, অনুলিখিত ও সমপাদিত বইয়ের তালিকায় পঞ্চম সংযােজন সিলেটে মুক্তিযুদ্ধ। প্রস্তুত করেছেন একাধিক পাণ্ডুলিপি। এই জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বাঙালি জাতির গর্ব আর গৌরবের একাত্তরকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরাকে নিজের একটি বড়াে দায়িত্ব বলে মনে করেন।