প্রেসিডেন্টকে বলো, সবাইকে কোর্টমার্শাল করে ফিনিশ করে দিতে হবে। ফাঁসির দড়ি ওদের জন্য ঝুলছে। পাগল নাকি! চুঙ্গা ফুঁকাইয়া দেশ স্বাধীন করবে! ওটা একটা পাগল। * লোকটা যখন বক্তৃতা শুরু করলো, তখনি আমার বাবার কথা মনে হয়েছে, বাবা ঠিক এ রকম নেতার কথাই বলতো। তিনি নাকি বাবাকে বলেছিলেন, পাকিস্তানের কাছ থেকে একদিন পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন হবে। এই দেশের মানুষকে আর না খেয়ে থাকতে হবে না। এই নেতার জন্যই নাকি বাবা সবকিছু ভুলে.....তিনি.... তিনি.... তিনি.... বাবা এই নেতার কথা বলতো.... তিনি.... * ভবিষ্যতে আমাগো যেমনি ওই উর্দুওয়ালা জিন্না সাহেব, লিয়াকত আলী, খাজা নাজিমুদ্দিনগো লগে লড়াই করতে হইবো, তেমনি এই বাঙালি হিন্দু ভাইদের লড়তে হইবো দিল্লী-গুজরাটওয়ালাদের লগে। কিন্তু জাইনা রাখো, একদিন আইবো, আমরা চিৎকার দিয়া কমু, কেউ আমাগো দাবায়া রাখতে পারবো না। হেই লড়াই কেডায় করবো? মধুমালা, গৌরাঙ্গ, সোহরাওয়ার্দী, খোকা, আবুল হাশিম, আজিজ, যোগেন মণ্ডল...হ্যাঁ আমরা সবাই। * আর তখন দেখা গেল প্রামাণিক উকিল মাটির রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে আসছেন, চিৎকার দিয়ে বলছেন, মুজিব তোমার শত্রু কে? কোন শত্রু তোমাক মারলু? কোন শত্রু আমার ব্যাটা দুটাক মারলু? মুজিব, তোমার শত্রু কে? এরপর আর কেউ প্রামাণিক উকিলকে এখানে দেখেন নাই, আমরা তার খবর আর রাখি না।
আহমদ বশীরের প্রথম গল্পগ্রন্থ অন্য পটভূমি প্রকাশিত হয় ১৯৮১ সালে, যা হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছিল ১৯৮২-তে। তারপর আরো দুটো ছোটগল্প সংকলন প্রকাশিত হলেও লেখক কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সাহিত্যজগৎ তেকে স্বেচ্ছা-নির্বাসনে চলে যান। হঠাৎ মৌনতা ভেঙে, কোনো এক মহাশক্তির কল্যাণে, আবার লেখালেখি শুরু করেছেন। রাহুচক্রের আহ্বানে আবার যদি কৃষ্ণগহ্বরে হারিয়ে যান এই লেখক, কারও বুঝি কিছু বলার থাকবে না সেই দিন।