একাত্তরের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ, ছাত্র ইউনিয়ন, ট্রেড ইউনিয়ন, কৃষক সমিতি প্রভৃতি বামপন্থি, র্যাডিক্যাল, প্রগতিশীল শক্তির তাৎপর্যপূর্ণ অবদান ছিল। এটি ঘটনাক্রমের আকস্মিকতায় ঘটে যাওয়া কোনো ব্যাপার ছিল। দশকের পর দশক ধরে পরিচালিত সচেতন, কষ্টসাধ্য ও আত্মত্যাগী ভূমিকার দ্বারা এসব। বামপন্থি সংগঠন জাতীয় মুক্তির সংগ্রামকে সৃজন করেছে, প্রসারিত ও বেগবান করেছে, সেই সংগ্রামে গভীরতা আনতে অবদান রেখেছে। মোটকথা, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনপর্ব এবং পাকিস্তানের ঔপনিবেশিক ধরনের শাসনপর্ব-উভয় পর্বেই বামপন্থিরা এই দায়িত্ব পালনে বলিষ্ঠ এবং অনেক ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট ও বামপন্থিদের অবদান কালের পরিক্রমায় ভুলিয়ে রাখার প্রয়াস চালানো হয়েছে রাজনৈতিক গণ্ডিবদ্ধতার স্বার্থে। মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্টদের অবদান ভুলিয়ে রাখা বা ভুলে থাকা হবে অপরাধ। এই বইয়ে মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট ও বামপন্থিদের ভূমিকা নিয়ে কিছু দৃষ্টিপাত করা হয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সক্রিয় সমর্থন-সহযোগিতা দিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং একইসঙ্গে ভারতকে সরাসরি সামরিকসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করতে সাহস জোগায়। এছাড়াও বিভিন্ন শিরোনামে মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক আরো কয়েকটি লেখাও যুক্ত করা হলো।