মুক্তিযুদ্ধের ওপর কতিপয় ব্যতিক্রম ছাড়া, ভেতর-তাড়না থেকে খুব একটা লেখালেখি হয়েছে বলে মনে হয় না– না স্মৃতিচারণায়, না সৃজনকর্মে, না ইতিহাসের ক্ষেত্রে। এ ভারি লজ্জা ও পরিতাপের কথা– মুক্তিযুদ্ধটা যেন বা অগ্নিঝরা এক রঙিন ফানুস– নিশিনীলিমায় আলো ছড়িয়ে যা হারিয়ে গেছে। এই যে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু লেখা হচ্ছে না-নির্মম এই অভিযোগটা কারো কারো বিবেকে ঘা দিয়ে থাকবে হয়তো, তাই কেউ কেউ কলম হাতে এগিয়ে আসছেন, লিখছেন দু’ছত্র। মণিমুক্তো পাচ্ছি নে বলবো না, তবে অহংপূর্বিকার দৌরাত্ম্যও বড় কম নয়। গল্প-উপন্যাসের জগটা এমনিতেই হ্রস্ব-আলোচ্য বিষয়ে হ্রস্বতর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে বুড়ি-ছোঁয়া মাত্র। ব্যক্ষমান ‘একাত্তরের স্মৃতিচারণ’ বস্তুতপক্ষে ওপরের কোনো এলাকাতেই পড়ে না-এটা এক রকম জোর করে লেখানো। না, অস্ত্রের মুখে নয়,-‘কখনো সাহিত্য করিনি, কাজেই মুক্তিযুদ্ধের ওপর কিছু লেখা শ্বেতকাক বই আর কিছু নয়’-এই ডাহা মিথ্যেকে দিনের পর দিন আঘাত হেনে, আত্মবিশ্বাসের গোড়ায় জলসিঞ্চন করে, কলম ধরিয়ে, লিখিয়ে তবে গিয়ে বাঘের আড়ি-র ক্ষান্তি,-দীর্ঘ তিন বছর [১৯৮৮-৯০] মদীয় পত্রিকায় যা কিস্তিবন্দি হয়ে আহমেদ রেজার জয় ঘোষণা করছে।