ভূমিক একসময় হাঁস-মুরগি বনের সাধারণ পাখির মতই স্বাধীন জীবনযাপন করতো। ধারণা করা হয়, প্রায় দুইহাজার বছর আগে ঘরোয়া পদ্ধতিতে বনের এইসব হাঁস-মুরগি ধরে এনে মাংস ও ডিমের যোগানদার হিসেবে পালন এবং উৎপাদন শুরু হয় ইউরোপ মহাদেশের ইটালিতে। তারপর থেকে দিনে দিনে হাঁস-মুরগি পালনের বিষয়গুলো বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা শুরু হয়। এই নিয়ে শুরু হয় বিস্তর গবেষণা। আর বিজ্ঞানীদের সেই গবেষণায় আজ যত্নে রাখা একটি মুরগি বছরে দিচ্ছে ৩০০-র ওপরে ডিম, যেখানে মুক্ত অবস্থায় বছরে পঞ্চাশটাও দিত। কিনা সন্দেহ। আগে সাত সপ্তাহে মাংস ৫০০ গ্রাম হলে আজ হচ্ছে ২ কেজিরও বেশি। পূর্বে সাধারণ গৃহস্থ বাড়িতে হাঁস-মুরগি পালন করা হতাে বাড়িতে মেহমান এলে বা বিশেষ কোন উল্লেখযোগ্য দিনে সেগুলো জবাই করে মাংশ রান্না করে খাবার জন্যে অথবা, প্রাত্যহিক চাহিদার যোগান হিসেবে কয়েকটা ডিম পাবার জন্যে। কিন্তু আজ হাঁস-মুরগি পালন শুধুমাত্র কয়েকটা ডিম আর দুয়েক কেজি মাংশের জোগান দেবার জন্য নয়। এটা এখন একটা লাভজনক ব্যবসা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। সারা বিশ্বের "মািনক মানুষই প্রকৃত লাভজনক পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন হাঁস-মুরগি পালনকে। তবে সেগুলো অবশ্যই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। প্রকৃতঅর্থে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বলতে বিশেষ কোন জটিল পদ্ধতি নয়। বরং এই পদ্ধতি হলো, আমাদের প্রচলিত পদ্ধতিতে হাঁসমুরগি পালনেরই একটি উন্নত ও সার্থক রূপ। শহরে অথবা গ্রামে- যে-কোন জায়গায় উন্নত পদ্ধতিতে হাঁস-মুরগি পালনের মাধ্যমে সমাজের বেকারত্বের ভার অনেকখানি হালকা হয়ে যাবেই এই বিষয়টাই বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত। আমাদের দেশের সরকারও বেকার যুব সমাজকে এই বিষয়ে উৎসাহ যুগিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এরই ফলশ্রুতিতে আজ আমাদের দেশের অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলেও হাঁস-মুরগির খামার করার মাধ্যমে নিজেদের তথা পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করতে পারছেন তারা। এই বইতে আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করে কীভাবে স্বল্প খরচে ও কম জায়গায় হাঁস, মুরগি, কোয়েল ও কবুতর পালন করে নিজের তথা পরিবারের আর্থিক উন্নয়ন সাধন করা যায় সেই বিষয়ে বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়েছে। প্রয়োজনে ব্যবহার করা হয়েছে ছবি। আর বিষয়ভিত্তিক বর্ণনার মাধ্যমে একেবারে যে কোন বসবাসরত মানুষের ঘরের মধ্যেই কীভাবে ছােটখাট খামার তৈরি করে মাংস ও ডিমের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থ সমাগম করানাে যায় তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে। এছাড়া, এক বা একাধিক বৃহৎ আকারের খামার তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ সহ কম খরচে বেশি উৎপাদনের বিভিন্ন কলাকৌশল সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। বইটি প্রকৃত খামারীদের পাশাপাশি এই বিষয়ে উৎসাহীদের উপকার করবে বলে আমার বিশ্বাস। - ডাঃ নাসরিন সুলতানা জলি
সূচিপত্র অধ্যায়-০১ ৪ হাঁস মুরগির খামার ও পরিবেশ * খামারের আবহাওয়া ঠান্ডা রাখার নিয়ম -১০ * মুরগি-ঘরের যথাযথ তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ প্রক্রিয়া -১১ * সুষ্ঠু বাতাস চলাচল ব্যবস্থা -১৩ * উষ্ণ আবহাওয়ায় মুরগির খাবার খাওয়ার পরিবর্তন -১৩ * তাপের চাপ ঠেকানোর উপায় -১৫ * খামারে অ্যামোনিয়া দূষণ -১৬ * অ্যামোনিয়া দূষণে মুরগিদের বেলায় যা ঘটে -১৬ * অ্যামোনিয়া গ্যাস জমার প্রকৃত কারণ -১৭ * খামারে অ্যামোনিয়া গ্যাস নিয়ন্ত্রণ -১৭ * খামারের অ্যামোনিয়া গ্যাস দুরিকরণ -১৯ * খামার তৈরি সংক্রান্ত কতিপয় বিধিনিষেধ -১৯ * প্রতিবেশীর অভিযোগের গুরুত্ব দেয়া -২০ * মিউনিসিপ্যালিটি সাথে ভাল সম্পর্ক -২১ * খামারী বিধি নিষেধগুলি মেনে চলা -২২ * খামারে গাছপালা, ফল-ফুলের বাগান -২২
অধ্যায়-০২, ৪ হাঁস মুরগি খামার থেকে বাড়তি উপার্জন * মুরগির বিছানার উপকারী উপাদানসমূহ -২৩ * মুরগির মল-মূত্রের উপাদানসমূহ -২8 * বিছানা থেকে খাবার তৈরির উপযোগিতা -২৫ * মুরগির ঘরের বিছানা ব্যবহারের নিয়ম -২৫ * মুরগি খাদ্য তৈরির সহজ নিয়ম -২৬ * গবাদি পশুর খাদ্য আকারে বিক্রি করার পদ্ধতি -২৭
অধ্যায়-০৩ঃ মুরগির বিভিন্ন উন্নত জাত ও শ্রেণীবিভাগ * আকার আকৃতি অনুযায়ী মুরগির শ্রেণীবিভাগ -২৮ * রঙ অনুযায়ী মুরগির শ্রেণীবিভাগ -২৯ * এশিয়ায় মুরগির বিভিন্ন শ্রেণীবিভাগ -৩০ * আমেরিকান মুরগি ও তাদের শ্রেণীবিভাগ -৩২ * দো-আঁশলা ও ব্ৰয়লার মুরগি -৩৪ * ভারতীয় মুরগির বৈশিষ্ট্য -৩৫ * ইংল্যাণ্ডের মুরগির বৈশিষ্ট্য -৩৬ * স্পেনদেশীয় মুরগির বৈশিষ্ট্য -৩৬ * মুরগির প্রজনন প্রক্রিয়া -৩৮
অধ্যায়-০৪ঃ ছোট জায়গা এবং খাচায় মুরগি পোষা * খাঁচায় মুরগি পোষার সুবিধা ও অসুবিধা -৪৩ * মুরগির খাঁচার আকার আকৃতি -৪৫ * খাঁচার মুরগিদের খাওয়াবার নিয়ম -৪৬ * খাঁচার ডিমপাড়া মুরগির পরিচর্যা -৪৭ * খাঁচার মুরগির চিকিৎসা পদ্ধতি -৪৭
অধ্যায়-০৫ঃ ব্ৰয়লার মুরগি পালন ও পরিচর্যা * ব্ৰয়লার মুরগির ব্যবসা সম্প্রসারণ -৫১ * খামারের সুষ্ঠু পরিচালনা প্রক্রিয়া -৫৩ * ব্ৰয়লার মুরগি বা জাত নির্ধারণ -৫৩ * ব্ৰয়লার মুরগির বিশেষ যত্ব -৫৪ * খামার বাড়ি তৈরি প্রক্রিয়া -৫৭
অধ্যায়-০৬ঃ দেশী মুরগি পালন ও পরিচর্যা * দেশী মুরগি ও আর্থিক লাভ -৬০ * দেশী মুরগির ঘরের মাপ -৬১ * পানি খাওয়াবার জায়গা -৬২ * বিভিন্ন উপযোগিতা ও সুবিধা প্রয়োগ -৬৩ * খাদ্যের বিভিন্ন উপাদান -৬৪ * দেশি মুরগির বিভিন্ন রোগ ও প্রতিকার -৬৫ * রোগ নিরাময়ের উপায় -৬৬ * দেশি মোরগ-মুরগির মধ্যে যৌন মিলন -৬৬
অধ্যায়-০৭ঃ মুরগি পালনে পুষ্টি বিধান * মুরগির খাবার ব্যাপারে যত্ব -৬৯ * মুরগির পরিপাক অঙ্গ এবং তাদের কাজ -৭০ * মুরগির খাদ্যের উপাদান -৭৩ * পুষ্টিজনিত অ্যামাইনো অ্যাসিডের বিভাগ -৭৮ * উদ্ভিজ আমিষ দ্বারা প্রাণিজ আমিষের অভাব দূর করা-৭৯ * শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য -৮০ * সুষম খাদ্যে খনিজ লবণ ও প্রয়োগ -৮০ * মুরগির শরীরে ভিটামিনের প্রভাব -৮১ * খাবারের সহযোগী উপাদান -৮৫ * মুরগির দরকারি খাদ্য উপাদান -৮৭ * মুরগিকে খাওয়াবার সঠিক পদ্ধতি -৮৮ * গরম আবহাওয়ায় মুরগিকে খাওয়ানোর প্রক্রিয়া -৯১ * খাদ্য গুদামজাতের উপায় -৯৪
অধ্যায়ঃ ৮ ডিম সংরক্ষণ ও বিপনন প্রক্রিয়া * সাইজের ডিমপাড়া বন্ধের উপায় -৯৬ * ডিম্বাণু নিক্ৰমণ -৯৭ * মুরগির ডিমের নিষিক্তকরণ -১০১ * ডিমপাড়া মুরগির ডিম দেবার পর্যায় -১০৪ * ডিমের বিবিধ ব্যবহার -১০৫ * ডিমের আকার এবং চেহারার পরিবর্তন -১১০ * বাতিল ডিম -১১২ * ডিমের সংরক্ষণ ও পরিবহন -১১৪ * ডিম পচার কারণ ও প্রতিকার -১১৬ * ডিমের সঠিক সংরক্ষণ-১১৬
অধ্যায়-০৯ঃ খামারে হাঁস পালন ও পরিচর্যা * হাঁস পালতে পানির প্রয়োজনীয়তা ১১৭ * হাঁসের প্রজনন ও পানির গুরুত্ব -১১৯ * বিভিন্ন জাতের হাঁস ও তাদের বৈশিষ্ট্য -১১৯ * হাঁসের ডিম ও হাঁসের মাংস -১২০ * হাঁস পালনের বিশেষত্ব-১২১ * খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস -১২১ * হাঁস ও মুরগির তুলনামূলক পার্থক্য -১২৩ * হাঁসের উপযোগী খাবার -১২৪ * হাঁসের মাংস ও ডিম বিক্রয় -১২৫ * ডিম ফোটাবার যন্ত্র (ইনকিউবেটর) -১২৬
অধ্যায়-১০ঃ কিছু মারাত্মক রোগ ও তার প্রতিকার * রোগ প্ৰতিষেধক এবং রোগ প্রতিরোধকরণ -১২৯ * চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি প্রয়োজনীয় তথ্য -১২৯ * মুরগির রোগের শ্রেণীবিভাগ -১৩১ * মুরগির বসন্ত রোগ ও তার প্রতিকার -১৩১ * মুরগির সংক্ৰামক সর্দি ও তার প্রতিকার -১৩৪ * রানীক্ষেত রোগ ও তার প্রতিকার -১৩৬ * মুরগির কলেরা রোগ ও তার প্রতিকার -১৩৯ * যক্ষ্মা বা ক্ষয়রোগ ও তার প্রতিকার -১৪২ * টাইফয়েড রোগ ও তার প্রতিকার -১৪৩ * অধ্যায়-১১ঃ কবুতর পালন ও চিকিৎসা পদ্ধতি -১৪৫ অধ্যায়-১২ঃ কোয়েল পালন ও চিকিৎসা পদ্ধতি -১৪৫
Title
বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে হাঁস-মুরগী কোয়েল কবুতর পালন ও চিকিৎসা