ফিলিস্তিন সংকট ও বিশ্বরাজনীতি

ফিলিস্তিন সংকট ও বিশ্বরাজনীতি (হার্ডকভার)

book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Similar Category eBooks

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

ফিলিস্তিন কোনো সাধারন ভূখন্ড নয়। এর এমন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুক্তির সংগ্রাম করতে এবং লড়াই চালিয়ে যেতে বিশেষভাবে আগ্রহী ও অনুপ্রানিত করে তোলে। এই ভূখন্ডে ৬৩৪ সালের ৩০ জুলাই আজনাদাইনের মতো ইসলামের কিছু স্মরণীয় যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ইব্রাহিম (আ:), দাউদ (আঃ), ইসহাক(আঃ), ইয়াকুব(আঃ) এবং মুহাম্মদ(সাঃ) সহ অগনিত নবী রাসূল এখানে এসেছেন। ফিলিস্তিনের জেরুজালেম অঞ্চলের ইতিহাসকে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ “সাইমন জোনাথান সেবাগ মন্টেফিওরি” পৃথিবীর ইতিহাস বলে মন্তব্য করেছেন। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের সাথে বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক দ্বন্ধ এবং ভূমি দখলের ইতিহাস জড়িত। এর কারণ হলো- ফিলিস্তিন মুসলমান, ইহুদি এবং খ্রিস্টান এই তিনটি ধর্মের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা এই তিন মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে ফিলিস্তিন। বর্তমানে, আরবের যারা এই অঞ্চলটিকে নিজেদের ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা ফিলিস্তিনি হিসাবে পরিচিত এবং দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনের জনগন এই অঞ্চলে একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের লড়াই করে আসছে। ফিলিস্তিন সংঘাতের ইস্যুটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাসে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। ফিলিস্তিন ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীভূক্ত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং ইহুদী সংখ্যালঘু ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রন নেয় ব্রিটেন। তারা ইহুদী জনগোষ্ঠীর জন্য ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ১৯২০, ১৯২১, ১৯২৮, ১৯২৯, এবং ১৯৩৬ সালে আরবদের সাথে ইহুদীদের সংঘর্ষ হয় এবং ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। ইহুদী এবং আরব উভয়ই অঞ্চলটিকে নিজেদের পূর্ব পুরুষদের ভূমি হিসেবে দাবি করতে থাকে। ১৯৩৩ সালে অ্যাডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসলে ইহুদীদের উপর ব্যাপক দমন নিপীড়ন শুরু হয়। ইউরোপে ইহুদী নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক হারে ইহুদী নিধনযজ্ঞের পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে নতুন এক মাতৃভূমি তৈরির স্বপ্ন দেখে। ১৯৪৭ সালের ২৯ শে নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ ফিলিস্তিনকে দুই ভাগ করে দুটি পৃথক ইহুদী এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোট দিলে আরবরা তার বিরোধিতা করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নীলনকশা ইহুদীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করে। ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ফিলিস্তিন ত্যাগ করে ব্রিটিশরা। সেদিনই ইহুদীরা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষনা দেয়। পরদিন আরব দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ বাধে ইসরায়েলের। পরাজিত আরব রাষ্ট্রের একটা বড় অংশ দখলে নেয় ইসরায়েল। শরনার্থী হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি। লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে নিজ আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। যারা ফিলিস্তিনে অবস্থান করে তারা নিজ ভূমে পরবাসী বা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের এই আচরনের প্রক্রিয়াটিকে ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ “ইলান পেপে” তার “দ্য এথনিক ক্লিনজিং অব প্যালেস্টাইন বইতে” “ ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নিশ্চিহ্নকরন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারপরেও বেশকিছু আরব রাষ্ট্র বেশিরভাগ সময় ফিলিস্তিনের বিপক্ষেই ভূমিকা রেখেছে। ইরান ইসরায়েলের জন্মলগ্ন থেকেই বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। ১৯৫৩ সালে ইরান ইসরায়েলের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে যদিও ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর তা ছিন্ন হয়। ১৯৬৪ সালে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির সংগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। ইয়াসির আরাফাত ১৯৬৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের কুখ্যাত ”ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের” কারনে আশির দশকের মাঝামাঝি পিএলও এর প্রানশক্তি প্রায় নিঃশেষিত হয়ে আসে। এছাড়াও ১৯৭৮সালে আনোয়ার সা‘দাতের নেতৃত্বে মিশর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিলে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরব ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি হয়। ১৯৮৭ সালে তরুন নেতৃত্বের মাধ্যমে “ইনতিফাদা” আন্দোলন শুরু হলে ইসরায়েল আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে। ইসরায়েলীরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আগ্রহী হয়। তবে স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের কারণে এই প্রক্রিয়া হোঁচট খায়। পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র কৌশলে ১৯৯৩ সালে করিয়ে নেয় “অসলো চুক্তি”। এই চুক্তি অনুসারে চুক্তির মেয়াদ সাত বছর হলে এবং এর মধ্যে কোনো চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর না হলে ইয়াসির আরাফাত নিজেই স্বাধীনতা ঘোষনার কথা বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধীতা এবং অধিকৃত এলাকা ইসরায়েলের ভূখন্ড হিসেবে গ্রহন করে নেয়ার হুমকির মুখে ইয়াসির আরাফাত স্বাধীনতা ঘোষনা করেননি। পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১১ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মধ্যস্ততায় শুরু হওয়া ক্যাম্প ডেভিড শান্তি আলোচনাও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১২ সালের ২৯শে নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাশ হওয়া প্রস্তাব মতে, ফিলিস্তিনকে 'নন মেম্বার অবজারভার স্টেট' বা পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়া হয়। ফলে ফিলিস্তিন এখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিতর্কে অংশ নিতে এবং জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠাগুলোর কাজেও অংশ নিতে পারে। ২০১১ সালে একটি পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করে তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আপত্তির কারণে তা সফল হয়নি। বিশ্ব সংস্থার স্বীকৃতি না মিললেও জাতিসংঘের প্রায় ৭০ ভাগ সদস্য রাষ্ট্রই ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে। ২০১৫ সালের সেপেম্বরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাইরে ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলনেরও স্বীকৃতি মিলে। ১৪ই মে ২০১৮ সাল- ছিল ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। আর ফিলিস্তিনিরা সেই দিনটি পালন করে 'নাকবা' বা বিপর্যয় হিসেবে। আর এরকম এক স্পর্শকাতর দিনেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছিল জেরুজালেমে। এটি ফিলিস্তিনিদের সাংঘাতিক ক্ষুব্ধ করে তুলে। ফিলিস্তিনিরা মনে করে পূর্ব জেরুজালেম হবে তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী আর যুক্তরাষ্ট তাদের দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নিয়ে কার্যত পুরো নগরীর উপর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে। সেদিন ৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আহত হয় তিন হাজারের বেশি। পরের কয়েক সপ্তাহে একশোর বেশি ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলি এবং বোমায় নিহত হয়। ফিলিস্তিনিরা তাদের এই বিক্ষোভের নাম দেয় 'গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন'। অর্থাৎ নিজের স্থানে ফিরে যাওয়ার মিছিল। বিগত বছরগুলোতে থেমে থেমে অনেক শান্তি আলোচনা হয় তবে সংঘাতের কোনো সমাধান এখনো হয়নি। সর্বশেষ ১০ মে ২০২১ সালে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের ঘটনায় টানা ১১ দিনের তান্ডবের পর ২১ শে মে মধ্যরাত থেকে যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয় ইরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তবে এখন দেখার বিষয় ফিলিস্তিনের সংঘাত কবে, কিভাবে বন্ধ হয়। ফিলিস্তিন কোনো সাধারন ভূখন্ড নয়। এর এমন বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা মুক্তির সংগ্রাম করতে এবং লড়াই চালিয়ে যেতে বিশেষভাবে আগ্রহী ও অনুপ্রানিত করে তোলে। এই ভূখন্ডে ৬৩৪ সালের ৩০ জুলাই আজনাদাইনের মতো ইসলামের কিছু স্মরণীয় যুদ্ধ সংগঠিত হয়। ইব্রাহিম (আ:), দাউদ (আঃ), ইসহাক(আঃ), ইয়াকুব(আঃ) এবং মুহাম্মদ(সাঃ) সহ অগনিত নবী রাসূল এখানে এসেছেন। ফিলিস্তিনের জেরুজালেম অঞ্চলের ইতিহাসকে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ “সাইমন জোনাথান সেবাগ মন্টেফিওরি” পৃথিবীর ইতিহাস বলে মন্তব্য করেছেন। ফিলিস্তিনের ইতিহাসের সাথে বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক দ্বন্ধ এবং ভূমি দখলের ইতিহাস জড়িত। এর কারণ হলো- ফিলিস্তিন মুসলমান, ইহুদি এবং খ্রিস্টান এই তিনটি ধর্মের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা এই তিন মহাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক অবস্থানে রয়েছে ফিলিস্তিন। বর্তমানে, আরবের যারা এই অঞ্চলটিকে নিজেদের ভূমি হিসেবে আখ্যায়িত করে তারা ফিলিস্তিনি হিসাবে পরিচিত এবং দীর্ঘদিন ধরেই ফিলিস্তিনের জনগন এই অঞ্চলে একটি স্বাধীন ও স্বতন্ত্র রাষ্ট্র গঠনের লড়াই করে আসছে। ফিলিস্তিন সংঘাতের ইস্যুটি মধ্যপ্রাচ্যের প্রাচীন ও আধুনিক ইতিহাসে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। ফিলিস্তিন ছিল অটোমান সাম্রাজ্যের অধীভূক্ত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে অটোমানদের পরাজয়ের পর আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ এবং ইহুদী সংখ্যালঘু ফিলিস্তিনের নিয়ন্ত্রন নেয় ব্রিটেন। তারা ইহুদী জনগোষ্ঠীর জন্য ফিলিস্তিনে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ১৯২০, ১৯২১, ১৯২৮, ১৯২৯, এবং ১৯৩৬ সালে আরবদের সাথে ইহুদীদের সংঘর্ষ হয় এবং ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। ইহুদী এবং আরব উভয়ই অঞ্চলটিকে নিজেদের পূর্ব পুরুষদের ভূমি হিসেবে দাবি করতে থাকে। ১৯৩৩ সালে অ্যাডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসলে ইহুদীদের উপর ব্যাপক দমন নিপীড়ন শুরু হয়। ইউরোপে ইহুদী নিপীড়ন এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক হারে ইহুদী নিধনযজ্ঞের পর তারা সেখান থেকে পালিয়ে নতুন এক মাতৃভূমি তৈরির স্বপ্ন দেখে। ১৯৪৭ সালের ২৯ শে নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারন পরিষদ ফিলিস্তিনকে দুই ভাগ করে দুটি পৃথক ইহুদী এবং আরব রাষ্ট্র গঠনের পক্ষে ভোট দিলে আরবরা তার বিরোধিতা করে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নীলনকশা ইহুদীদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথকে সুগম করে। ১৯৪৮ সালের ১৪ই মে ফিলিস্তিন ত্যাগ করে ব্রিটিশরা। সেদিনই ইহুদীরা ইসরায়েল রাষ্ট্রের ঘোষনা দেয়। পরদিন আরব দেশগুলোর সঙ্গে যুদ্ধ বাধে ইসরায়েলের। পরাজিত আরব রাষ্ট্রের একটা বড় অংশ দখলে নেয় ইসরায়েল। শরনার্থী হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ ফিলিস্তিনি। লাখ লাখ ফিলিস্তিনিকে নিজ আবাসভূমি থেকে বিতাড়িত করা হয়। যারা ফিলিস্তিনে অবস্থান করে তারা নিজ ভূমে পরবাসী বা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ফিলিস্তিনিদের প্রতি ইসরাইলের এই আচরনের প্রক্রিয়াটিকে ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ “ইলান পেপে” তার “দ্য এথনিক ক্লিনজিং অব প্যালেস্টাইন বইতে” “ ফিলিস্তিনিদের জাতিগত নিশ্চিহ্নকরন” হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তারপরেও বেশকিছু আরব রাষ্ট্র বেশিরভাগ সময় ফিলিস্তিনের বিপক্ষেই ভূমিকা রেখেছে। ইরান ইসরায়েলের জন্মলগ্ন থেকেই বেশ ঘনিষ্ঠ ছিল। ১৯৫৩ সালে ইরান ইসরায়েলের সাথে আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক স্থাপন করে যদিও ১৯৭৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর তা ছিন্ন হয়। ১৯৬৪ সালে ফিলিস্তিনিদের মুক্তির সংগ্রামের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও)। ইয়াসির আরাফাত ১৯৬৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত সংগঠনটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের কুখ্যাত ”ব্ল্যাক সেপ্টেম্বরের” কারনে আশির দশকের মাঝামাঝি পিএলও এর প্রানশক্তি প্রায় নিঃশেষিত হয়ে আসে। এছাড়াও ১৯৭৮সালে আনোয়ার সা‘দাতের নেতৃত্বে মিশর ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিলে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আরব ঐক্যে ফাটল সৃষ্টি হয়। ১৯৮৭ সালে তরুন নেতৃত্বের মাধ্যমে “ইনতিফাদা” আন্দোলন শুরু হলে ইসরায়েল আতংকগ্রস্থ হয়ে পড়ে। ইসরায়েলীরা পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আগ্রহী হয়। তবে স্নায়ু যুদ্ধের অবসানের কারণে এই প্রক্রিয়া হোঁচট খায়। পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্র কৌশলে ১৯৯৩ সালে করিয়ে নেয় “অসলো চুক্তি”। এই চুক্তি অনুসারে চুক্তির মেয়াদ সাত বছর হলে এবং এর মধ্যে কোনো চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষর না হলে ইয়াসির আরাফাত নিজেই স্বাধীনতা ঘোষনার কথা বলেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধীতা এবং অধিকৃত এলাকা ইসরায়েলের ভূখন্ড হিসেবে গ্রহন করে নেয়ার হুমকির মুখে ইয়াসির আরাফাত স্বাধীনতা ঘোষনা করেননি। পরবর্তীতে ২০০০ সালের ১১ জুলাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের মধ্যস্ততায় শুরু হওয়া ক্যাম্প ডেভিড শান্তি আলোচনাও আলোর মুখ দেখেনি। ২০১২ সালের ২৯শে নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে পাশ হওয়া প্রস্তাব মতে, ফিলিস্তিনকে 'নন মেম্বার অবজারভার স্টেট' বা পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা দেয়া হয়। ফলে ফিলিস্তিন এখন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বিতর্কে অংশ নিতে এবং জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠাগুলোর কাজেও অংশ নিতে পারে। ২০১১ সালে একটি পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন জাতিসংঘের স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করে তবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের আপত্তির কারণে তা সফল হয়নি। বিশ্ব সংস্থার স্বীকৃতি না মিললেও জাতিসংঘের প্রায় ৭০ ভাগ সদস্য রাষ্ট্রই ফিলিস্তিনকে একটি রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকার করে। ২০১৫ সালের সেপেম্বরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের বাইরে ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা উত্তোলনেরও স্বীকৃতি মিলে। ১৪ই মে ২০১৮ সাল- ছিল ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকী। আর ফিলিস্তিনিরা সেই দিনটি পালন করে 'নাকবা' বা বিপর্যয় হিসেবে। আর এরকম এক স্পর্শকাতর দিনেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের দূতাবাস সরিয়ে নিচ্ছিল জেরুজালেমে। এটি ফিলিস্তিনিদের সাংঘাতিক ক্ষুব্ধ করে তুলে। ফিলিস্তিনিরা মনে করে পূর্ব জেরুজালেম হবে তাদের ভবিষ্যত রাষ্ট্রের রাজধানী আর যুক্তরাষ্ট তাদের দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নিয়ে কার্যত পুরো নগরীর উপর ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণের পক্ষে সমর্থন দিচ্ছে। সেদিন ৫৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়। আহত হয় তিন হাজারের বেশি। পরের কয়েক সপ্তাহে একশোর বেশি ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারী ইসরায়েলি সৈন্যদের গুলি এবং বোমায় নিহত হয়। ফিলিস্তিনিরা তাদের এই বিক্ষোভের নাম দেয় 'গ্রেট মার্চ টু রিটার্ন'। অর্থাৎ নিজের স্থানে ফিরে যাওয়ার মিছিল। বিগত বছরগুলোতে থেমে থেমে অনেক শান্তি আলোচনা হয় তবে সংঘাতের কোনো সমাধান এখনো হয়নি। সর্বশেষ ১০ মে ২০২১ সালে আল-আকসা মসজিদ চত্বরে ইসরায়েলি পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষের ঘটনায় টানা ১১ দিনের তান্ডবের পর ২১ শে মে মধ্যরাত থেকে যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয় ইরায়েল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেন ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেছেন। তবে এখন দেখার বিষয় ফিলিস্তিনের সংঘাত কবে, কিভাবে বন্ধ হয়।
Title ফিলিস্তিন সংকট ও বিশ্বরাজনীতি
Author
Publisher
Edition 1st Published, 2021
Number of Pages 192
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

ফিলিস্তিন সংকট ও বিশ্বরাজনীতি

সাখাওয়াত মজুমদার

৳ 258 ৳300.0

Please rate this product