"আধপোড়া সানকি" বইটির প্রথম ফ্ল্যাপ-এর লেখাঃ আধপােড়া সানকি নাটকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বিমূর্ত হয়েছে নান্দনিকতায়। অভিশপ্ত পাল বাড়ির কাল পুরুষ মাধাই পাল প্রতিক্ষায় দিন গুনছে, একদিন অভিশাপ ভেঙে সাঁচ থেকে লাল টকটকে সাকি উঠে আসবে। সেই দুই শতাব্দীর দেয়া অভিশাপমাধাইপালের পর দাদার পিসিকে গােরা সৈনিকেরা ছিনিয়ে নিয়ে গেল, সাত ভাই মিলে বােনকে আগলাতে না। পারায় অভিশপ্ত হলাে বাড়ি, এ বংশে আর মেয়ে জন্মালাে না। সেই থেকে সাকির সঁচটা অমনি পড়ে আছে। এ বাড়ীর বৌয়েরা চেষ্টা করেছে অনেক, কিন্তু সাকি হয় নি। কিন্তু এখন তাে মাধাই শব্দ শুনছে, আকাশের রঙ বদলাতে দেখছে, বাতাসের গন্ধ শুকছে—আর ভাবছে এইতাে সময় এসে গেছে। খুঁজছে একটি মেয়ে যার গর্ভে জন্মাবে এ বাড়ীর মেয়ে শিশু, যে শিশুর জন্ম চিকারে চুরমার হয়ে যাবে অভিশাপ। পাওয়া গেল ফাল্গুনীকে। বিয়ে হল মাধাইপালের ছােট নাতির সাথে। কিন্তু একি? নিশীথে কে ওর রক্ত শুষে নিয়ে যায়, কারা যেন বাঁধা দেয় ওর ভ্রুণ জন্মাতে। উচ্চারিত হলাে পিশাচ বধের মন্ত্র। শুরু হল পিশাচ আর এ পক্ষের যন্ত্রবান যুদ্ধ। এ যুদ্ধে পরাজিত হলাে পিশাচ মাত্র আট মাস একুশ দিনে। অমনি সুতীক্ষ্ম চিৎকারে সমস্ত অভিশাপ ভেঙে গর্ভস্থ শিশু জন্ম নিল মাটিতে, সঁচ থেকে উঠে আসলাে সাকি। তবুও মাধাই যেন কেন দ্বিধাগ্রস্থ-এ যে অসম প্রসব, একটা আধপােড়া সাকি। নাটকটির প্রথম মঞ্চায়ন ৯ই এপ্রিল ১৯৭৯ 'ভাসানী হল’ টাঙ্গাইল।