ইমতিয়াজ; নিঃসন্দেহে ভালো একজন মানুষ, যত্নশীল স্বামী, দায়িত্বশীল পিতা। এদিকে তিথিও সুন্দরী, আধুনিকা, পুতুলের মতো তিন বছর মেয়ে পুতুলকে নিয়ে সুখী সংসার। বাইরে থেকে ভেতর আন্দাজ করা মুশকিল। এমন সুখী সংসারে হঠাৎ বাজলো ভাঙনের সুর। তছনছ হয়ে গেলো ছোট্ট পুতুলের মা বাবাকে নিয়ে নিয়ে সাজানো পুতুলের খেলাঘর।
হঠাৎ কী এমন হলো? কেনো ইমতিয়াজ আর তিথি সংসারের বাঁধন কেটে দিলো? সবার প্রশ্ন সেখানে কি এসেছিলো তৃতীয় কেউ যার জন্য তিথি নিজের হাতে সব ভেঙ্গে দিলো? নাকি বুকের ভেতর অভিমানের পাহাড়টা একদিন ধ্বসে গিয়ে বাঁধ ভেঙ্গে দিলো সহ্যের? কার দোষে পুতুলের সেই নরম দুটি হাত, কঁচি দুটি চোখ জন্মদাতা আর জন্মদাত্রীকে ঘৃণা করে, মা বাবার ভেবে আশ্রয় নিলো অন্য এক নিঃসন্তান দম্পত্তির কাছে?
তারপর বিচ্ছেদের দুর্বিষহ ছোবল সামলে দুজনেই সুখের খোঁজে বেছে নিয়েছিল অন্য নীড়। সেই নীড়েও কি সুখ মিলেছিল? নাকি সেখানেও ছিল বোবা কান্না? যদি তা না ই হয় তবে জীবনের ক্রান্তি লগ্নে এসেও কেনো তিথি থমকে দাঁড়িয়েছিল একটা অস্পষ্ট চেনা মুখের অবয়ব দেখে? সেই বহুবছর আগে শুনে আসা একটা কন্ঠস্বর ওরকম বুকের ভেতর লেগেছিল কী ভেবে? ঝাপসা চোখে যখন দেখেছিলো অস্পষ্ট চেনা সেই মুখটি ইমতিয়াজের। আর সেই ভাঁজ পরে যাওয়া চোখ দুটিও অপলক দেখছে তিথিকেই; কাঁচা পাঁকা চুল, দেহে স্পষ্ট ক্লান্তি নিয়ে ইমতিয়াজের সে চোখেও শত সহস্র জমানো কথা ! বিচ্ছেদের এত বছর পর ও দুজনের জিঘাংসু দৃষ্টি। কী বলা হয়নি? কারাগারে বন্দী কোন সে অনভূতি যা বন্ধ কারাগারের অন্ধকার থেকে বের হতে না পেরে প্রবল আক্ষেপে তিথির ঠোঁটের কোণে জমে গেলো?
এই যে এত প্রশ্ন!! সব প্রশ্নের উত্তর বন্দী রয়েছে "অনুভুতির কারাগারে!” অনুভূতি গুলোকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে হলে অবশ্যই পড়তে হবে "অনুভূতির কারাগার"