যে মানবমুক্তির কথা তিনি বলেন তাতে দেখা যায় যে, লৈঙ্গিক সমানাধিকার—এর দর্শনে তিনি বিশ^াসী ছিলেন। ভারতীয় সংস্কৃতিতে মেয়েদের অবদমিত করে রাখবার যে প্রবণতা তার প্রচণ্ড বিরোধী ছিলেন রোকেয়া। মেয়েদের প্রতি শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রান্তিকতা তৈরি করা হত না, বরং সম্পত্তির অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হত। শহর কোলকাতাকে কেন্দ্র করে যে, শিক্ষার পরিকাঠামো গড়ে উঠেছিল তাতে মেয়েদের শিক্ষার কোনো সুযোগ ছিল না। রোকেয়া সর্বপ্রথম ৫ জন মেয়ে নিয়ে এই ভাগলপুরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শাহ আবদুল মালেকের সরকারি বাসভবন গোলকুটিতে ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গালর্স স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। আজ থেকে শতবর্ষ পূর্বে যে সৌরশক্তিকে নবায়নযোগ্য শক্তি করা যায় তা যখন কোনো বিজ্ঞানী ভাবেননি, তখন, রোকেয়া তা ভেবেছিলেন, যা তার বিজ্ঞান মনস্কতা, দূরদর্শিতার পরিচয় দেয় শিক্ষায় সংখ্যা যে কোনো ব্যাপার নয়, তা তিনি প্রমাণ করেন মাত্র ৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ভাগলপুরে স্কুল আরম্ভ করেন। শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে নিয়ে এসে তিনি ভর্তি করান স্কুলে। ভারতবর্ষের লৈঙ্গিক বৈষম্য, ধর্মীয় বৈষম্যকে প্রত্যাখান করে নারী—শিক্ষার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেন।