পৃথিবীতে বৈষম্য বাড়ছে নাকি কমছে? খুব উপর থেকে দেখলে একরকম মনে হবে। ধারণা হবে সবই সমান, উঁচু-নীচু নেই । কিন্তু নীচে থেকে দেখে যখন কেউ উঁচুকে, অন্য কিছু দেখার আগে পার্থক্যটাই দেখে ফেলে সবচেয়ে বড়ো করে। চোখে পড়ে উঁচু কত উঁচু, নীচু কেমন নীচু। পৃথিবীতে উন্নতির কোনো অবধি নেই। সভ্যতা সমাগত এগুচ্ছে। এগুলো ধুলোবালি কিছু না কিছু তারদিকে ছড়িয়ে পড়বেই। বিষাক্ত গ্যাস বের হবে, দুষিত হবে পরিবেশ, বিপন্ন হবে পৃথিবী । অবধারিত। এসব ঘটনা। ঘটবেই। এবং তা নিয়ে হট্টগোলও হচ্ছে বড়ো কম নয়। ওদিকে মানবাধিকারের প্রশ্ন নিয়েও পৃথিবীর দুশ্চিন্তার কোনো অবধি নেই, বিরামও নেই। চীনে রাষ্ট্রবিরোধী একটি দলকে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতার দায়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল, কিছুদিন আগে। ঘটনার পরে এ যুগে মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে প্রধান সেনাপতি আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্র যেই একটি হুমকি দিয়েছে, অমনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অতবড়ো দেশ চীন, এককালে যে বিখ্যাত ছিল মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের প্রতি আপোসহীন বিরোধিতার জন্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাকে স্বীকার করত না বলে খোড়াই কেয়ার যে করত, সেই গণপ্রজাতান্ত্রিক মহাচীন প্রায় মা চাওয়ার মতো করে ওই অপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছে। মানবাধিকারের এখন বুঝি জয়জয়কার।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম. ১৯৩৬) পেশায় সাহিত্যের অধ্যাপক এবং অঙ্গীকারে লেখক। এই দুই সত্তার ভেতর হয়তো একটা দ্বন্দ্বও রয়েছে, তবে সেটা অবৈরী, মোটেই বৈরী স্বভাবের নয়। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক, অবসরগ্রহণের পর ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রফেসর এমেরিটাস হিসাবে মনোনীত হয়েছেন। তিনি শিক্ষা লাভ করেছেন রাজশাহী, কলকাতা, ঢাকা এবং ইংল্যান্ডের লীডস ও লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে। লেখার কাজের পাশাপাশি তিনি ‘নতুন দিগন্ত’ নামে সাহিত্য-সংস্কৃতি বিষয়ক একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা সম্পাদনা করছেন। তার গ্ৰন্থসংখ্যা আশির কাছাকাছি। তার অকালপ্রয়াত স্ত্রী ড. নাজমা জেসমিন চৌধুরীও লিখতেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন।