আস সালাতু ওয়াস সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলা রাব্বিল আলামীন। আল্লাহপাকের শোকর। দীর্ঘদিন পরে হলেও আমার লিখিত ‘ইজহারে হক' গ্রন্থটি প্রকাশ লাভ করেছে। ইহা সৈয়দ আহমদ বেরলভী ও মৌলভী ইসমাইল দেহলভীর মতবাদের উপর একটি সমালোচনামূলক পুস্তক । প্রিয় পাঠক! মানব সৃষ্টির ঊষা লগ্ন থেকেই হক বাতিলের পরিচয় চলে আসছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা চলবেই। বাতিলেরা যখন তাদের বাতিল মতবাদ প্রচারে তৎপর হয়ে উঠে তখন হকপন্থীদের উপর হক জাহির করা ওয়াজিব হয়ে যায়। জানা আবশ্যক বালাকোট আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন মৌলভী ইসমাইল দেহলভী ও তার পীর সৈয়দ আহমদ বেরলভী। তাদের চিন্তা-চেতনা ও মতবাদ ছিল বিভ্রান্তিকর ওহাবী মতবাদ। মূলত তারা উভয়ের নিরলস প্রচেষ্টা ও আন্দোলনের মাধ্যমেই এই ভারতবর্ষে ওহাবী মতবাদের প্রচার ও প্রসার ঘটে। এই আন্দোলনের নাম কখনো ওহাবী আন্দোলন, আবার কখনো তরীকায়ে মোহাম্মদীয়া আন্দোলন নামে অভিহিত হয়। তাদের এই আন্দোলনকে জোরদার করার জন্য তারা ইংরেজদের পক্ষ অবলম্বন করেছিলেন। পরিশেষে ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দে তথাকথিত বালাকোট আন্দোলনে তারা উভয়ই নিহত হন এবং এর পরিসমাপ্তি ঘটে। কিন্তু বর্তমানে তাদের অন্ধ অনুসারিরা সৈয়দ আহমদ বেরলভী ও ইসমাইল দেহলভীকে সুন্নি জামায়াতের একনিষ্ট খাদিম ও ইংরেজবিরোধী আন্দোলনের নেতা বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। সম্প্রতি ‘বালাকোট চেতনায় উজ্জীবন পরিষদ' ফুলতলী ভবন ১৯/এ নয়াপল্টন ঢাকা' এর প্রকাশনায় চেতনায় বালাকোট সম্মেলন স্মারক ২০১০ বাজারে বের হয়েছে।
১৮৯৯ সালের ২৪ মে (১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে কাজী নজরুল ইসলামের জন্ম। তিনি একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গীতিনাট্যকার, অভিনয়শিল্পী, সুরকার ও প্রবন্ধকার। নজরুলের বাল্যকাল কেটেছে দুঃখ-দুর্দশায়। তাই তাঁর ডাকনাম ছিলো দুখু মিয়া। তাঁর বৈচিত্র্যময় শিক্ষাজীবন শুরু হয় গ্রামের মক্তবে। পিতৃহীন হওয়ার পর তিনি পড়ালেখা ছেড়ে যোগ দেন লেটোর দলে, যেখান থেকে তিনি কবিতা ও গান রচনার কৌশল রপ্ত করেন। পরবর্তীতে এক বছর ময়মনসিংহের দরিরামপুর হাই স্কুলে পড়ে পুনরায় চুরুলিয়ায় রানীগঞ্জের শিয়ারসোল রাজ স্কুলে ভর্তি হন, এবং সেখানে তিন বছর অধ্যয়ন করেন। প্রবেশিকা পরীক্ষার আগেই তাকে পড়ালেখা ছাড়তে হয় যুদ্ধে যোগদানের জন্য। যুদ্ধের দিনগুলোতে নানা জায়গায় অবস্থান করলেও তার করাচির সৈনিকজীবনই উল্লেখযোগ্য, কেননা সেসময়েই তার প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায় ‘বাউণ্ডেলের আত্মকাহিনী’ নামক গল্প প্রকাশের মাধ্যমে। কাজী নজরুল ইসলাম এর বই সমূহ’র বিষয়বস্তু বিবিধ। তবে কাজী নজরুল ইসলাম এর বই-এ সমকালীন রাজনৈতিক ও সামাজিক যন্ত্রণা এবং সাম্যবাদের ধারণা প্রকটভাবে স্থান করে নিয়েছে। রাবীন্দ্রিক যুগে তার সাহিত্য প্রতিভা উন্মোচিত হলেও তার সৃষ্টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাজী নজরুল ইসলাম এর বই সমগ্র এর মাঝে উল্লেখযোগ্য হলো ‘রিক্তের বেদন’, ‘দোলনচাঁপা’, ‘বিষের বাঁশি’, ‘সাম্যবাদী’, ‘সর্বহারা’, ‘প্রলয়শিখা’ ইত্যাদি। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী নজরুল ‘সাপ্তাহিক লাঙল’, দ্বিসাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ধূমকেতু’র সম্পাদক ছিলেন। বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম ২৯ আগস্ট ১৯৭৬ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।