আমাদের দেশে অন্যান্য পেশার তুলনায় অ্যাকাউনটেন্সি পেশা অপেক্ষাকৃত নতুন। এখনও দেশের অধিকাংশ মানুষ তথা অভিভাবকগণ এ পেশা সম্পর্কে অবগত নন। এ কারণেই তারা ছেলেমেয়েদেরকে তাদের অতি পরিচিত পেশা যেমন- চিকিৎসা, প্রকৌশল, আইন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষিত করতে চান। তাদের অজ্ঞতার প্রধান কারণ হচ্ছে- আমাদের দেশে আদিম কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির প্রাধান্য, অর্থনীতিতে দেশীয় ও বহুজাতিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের স্বল্পতা, ব্যবসা-বাণিজ্যে অনগ্রসরতা ইত্যাদি। তবে আশার কথা, বর্তমানে আমাদের অর্থনীতিতে শিল্পখাতের অবদান ক্রমশ বাড়ছে। আর অজ্ঞতার ফলশ্রুতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক স্তরের কোনো ‘রচনা' বইতে জীবনের লক্ষ্য 'আমি ভবিষ্যতে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট হতে চাই' এ ধরনের কোনো রচনার দেখা পাওয়া যায় না। তদ্রূপ কোনো ঔপন্যাসিক বা চিত্রনাট্যকার তার উপন্যাস, চিত্রনাট্য বা চলচ্চিত্রে মূল নায়কের চরিত্রে বা খলনায়ক হিসেবেও কোনো চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টকে উপস্থাপন করতে দেখা যায় না। কিছুদিন আগ পর্যন্ত বিবাহ-শাদীর ক্ষেত্রেও বর বা কনে হিসেবে কেউ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট খুঁজতো না, তবে অধুনা ওই অবস্থার বেশ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
দেশের প্রথম শত্রুমুক্ত জেলা যশোরের অভয়নগর থানার অন্তর্গত মথুরাপুর গ্রামে আব্দুল্লাহ আল মামুনের পৈতৃক নিবাস। ছবির মতো সুন্দর এই গ্রামেই তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। তিনি স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষাজীবনের সকল পর্যায়ে শিক্ষাবৃত্তি লাভ করেছেন। অদম্য মেধাবী মামুন ২০০৫ ও ২০০৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ থেকে যথাক্রমে বিবিএ ও এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) থেকে কৃতিত্বের সঙ্গে সিএ সম্পন্ন করেন। প্রথম সুযোগেই সিএ পরীক্ষার সবগুলো লেভেল পাস করার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিএ সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালে অর্জন করেন আইসিএবি'র ফেলো মেম্বারশিপ। বর্তমানে মামুন দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় সিএ ফার্ম একনাবিন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসে ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। বিচারক সহধর্মিণী, দুই সন্তান মানহা ও মাহাদ এবং মা-বাবার সঙ্গে তিনি ঢাকায় বসবাস করেন। কর্মজীবনের অসম্ভব ব্যস্ততার পাশাপাশি লেখালেখিতেও সিদ্ধহস্ত মামুন। ইতোমধ্যে তাঁর লেখা সিএ জীবনের গল্প এবং সিএ কেন পড়ব নামক বই দুটি সাধারণ শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণির পাঠকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এছাড়াও, প্রকাশিত হয়েছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং মনের ডায়েরি শিরোনামে তাঁর লেখা আরও দুটি গ্রন্থ। অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ উপলক্ষ্যে প্রকাশিত সিএ কীভাবে পড়ব মামুনের লেখা পঞ্চম বই।