অনুবাদকের কথা : পাওলো কোয়েলহোকে নিয়ে আমি বলার কে? সে ধৃষ্টতা না করি। আমি কেবল উপন্যাসটি নিয়ে আমার অনুভূতি আপনাদের জানাতে পারি। অনুবাদ করতে করতে আমার প্রায়ই মনে হতো মূল উপন্যাসটি আসলে আমারই লেখা, অর্থাৎ সুক্ষ্মভাবে নগর-প্রভাবিত বাংলাদেশের গল্প যা আমারই লেখা উচিত ছিল, যেটা সুদূর ব্রাজিলে বসে মহামতি পাওলো কোয়েলহো বাংলা থেকে অনুবাদ করেছেন এবং প্রেক্ষাপটের দায় চাপিয়ে দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের ঘাড়ে। মোদ্দাকথা এডাল্টারির মূল চরিত্রটি আধুনিক বিশ্বের ব্যস্ততম অর্থনীতির কাছে দ্বিধান্বিত, হতাশাপ্রবণ অবহেলিত বিপুল সংখ্যক বিবাহিত শিক্ষিত নারী সমাজের একটি সমন্বিত অবয়ব যারা বিত্তবৈভবের চেয়ে একজন সাধারণ সঙ্গীর কাছে মাথাটি রাখার জন্য একটি প্রশস্ত ঘাড় খুঁজতে হয়রান। অনুবাদকের কথা পাওলো কোয়েলহোকে নিয়ে আমি বলার কে? সে ধৃষ্টতা না করি। আমি কেবল উপন্যাসটি নিয়ে আমার অনুভূতি আপনাদের জানাতে পারি। অনুবাদ করতে করতে আমার প্রায়ই মনে হতো মূল উপন্যাসটি আসলে আমারই লেখা, অর্থাৎ সুক্ষ্মভাবে নগর-প্রভাবিত বাংলাদেশের গল্প যা আমারই লেখা উচিত ছিল, যেটা সুদূর ব্রাজিলে বসে মহামতি পাওলো কোয়েলহো বাংলা থেকে অনুবাদ করেছেন এবং প্রেক্ষাপটের দায় চাপিয়ে দিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের ঘাড়ে। মোদ্দাকথা এডাল্টারির মূল চরিত্রটি আধুনিক বিশ্বের ব্যস্ততম অর্থনীতির কাছে দ্বিধান্বিত, হতাশাপ্রবণ অবহেলিত বিপুল সংখ্যক বিবাহিত শিক্ষিত নারী সমাজের একটি সমন্বিত অবয়ব যারা বিত্তবৈভবের চেয়ে একজন সাধারণ সঙ্গীর কাছে মাথাটি রাখার জন্য একটি প্রশস্ত ঘাড় খুঁজতে হয়রান।
ব্রাজিলিয়ান ঔপন্যাসিক পাওলো কোয়েলহো ডি’সুজা ১৯৪৭ সালের ২৪ আগস্ট দেশটির রাজধানী রিও ডি জেনেরিওতে জন্মগ্রহণ করেন। একই শহরে তার শিক্ষাজীবনের শুরু এবং বেড়ে ওঠা। আইন বিষয়ে কিছুদিন পড়াশোনার পর ভ্রমণের নেশায় তা আর শেষ করতে পারেননি। ঐ সময়টা ভবঘুরের ন্যায় ঘুরে বেড়িয়েছেন মেক্সিকো, উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, চিলিসহ ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চলে। এর পরপরই ছোটবেলার স্বপ্ন বই লেখাকে বাস্তবে রূপ দেন। ১৯৮২ সালে ‘হেল আর্কাইভস’ নামক বই দ্বারা সাহিত্য অঙ্গনে প্রবেশ করেন। তবে এই প্রবেশ আকর্ষণীয় ছিলো না। এমনকি দ্বিতীয় প্রকাশিত বই ‘প্রাক্টিক্যাল ম্যানুয়েল অব ভ্যাম্পায়ারিজম’ তার নিজেরই অপছন্দের তালিকায় ছিলো। ১৯৮৭ সালে ‘পিলগ্রিমেজ’ এর পর ১৯৮৮ সালে প্রকাশ পায় তার আরেক বই ‘দ্য আলকেমিস্ট’। পাওলো কোয়েলহো এর বই হিসেবে ‘দ্য আলকেমিস্ট’ বইটিই মূলত কোয়েলহোর লেখক-জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তবে ‘৮৭ সালে বইটি প্রকাশিত হয়েছিলো ব্রাজিলের একটি ছোট প্রকাশনা সংস্থা থেকে, যারা ন’শোর বেশি কপি ছাপাতে নারাজ ছিলো। ১৯৯৩ সালে একই বই আমেরিকার বিখ্যাত প্রকাশনী হারপার কলিন্স থেকে প্রকাশিত হলে পাঠক মহলে হুলুস্থুল পড়ে যায়। বইটি এখন পর্যন্ত মোট ৮০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, যা পাওলো কোয়েলহো এর বই সমূহ এর মাঝে অনন্য। কোয়েলহোর কাহিনীগুলোর বিশেষত্ব হলো তার কল্পনাশক্তির জাদুকরী মোহ। কোনো সরল গল্প দ্বারা তিনি গভীর জীবন দর্শনবোধ পাঠকদের মাঝে সঞ্চালন করতে চান, এবং সফলতার সাথে করেও এসেছেন। পাওলো কোয়েলহো এর বই সমগ্র-তে স্থান পাওয়া উপন্যাসগুলোর মাঝে ‘দ্য আলকেমিস্ট’, ‘ব্রিদা’, ‘দ্য ডেভিল এন্ড মিস প্রাইম’, ‘দ্য জহির’, ‘দ্য ভ্যালকাইরিস’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও ‘দ্য মাডি রোড’, ‘দ্য রং গিফট’, ‘দ্য জায়ান্ট ট্রি’, ‘দ্য ফিশ হু সেভড মাই লাইফ’, ‘আই উড র্যাদার বি ইন হেল’, ‘রিবিল্ডিং দ্য ওয়ার্ল্ড’ এর মতো ছোটগল্পগুলোতেও দর্শনের প্রমাণ মেলে, যা পাঠকদের গভীরভাবে ভাবতে শেখায়। পাওলো কোয়েলহোর আরেক পরিচয় তিনি গীতিকার। বেশ কিছু জনপ্রিয় ব্রাজিলীয় গানের জনক তিনি।