কৈশোর জীবনে তো বটেই এই ষাটোর্ধ বয়সেও জড়িয়ে আছি শিশু-কিশোর ও যুবকদের নানা সংগঠন, নানা কর্মকান্ডের সাথে। তাদের শারীরিক অসুস্থতা, মানসিক বিকাশ আর চিত্তবিনোদনের জন্য সংগঠিত নানা কর্মসূচিতে যুক্ত ছিলাম। এখনো আছি। এদেশের শিশু-কিশোর ও যুবকদের অমিত সম্ভাবনা, অসাধারণ কর্মদক্ষতা আর সৃজনশীলতায় অভিভূত হয়েছি বারবার। যখনই কিছু করার জন্য একটা সুযোগ বা একটা মঞ্চ পেয়েছে নিজেদের কাজ আর উপস্থাপনা দিয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছে ওরা। তাৎক্ষণিক চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে এমন সাবলীল উপস্থাপনা তুলে ধরেছে যে, রীতিমতো বিস্মিত হয়েছি। এসব অনবদ্য উপস্থাপনার একটা বড় মঞ্চ শিশু-কিশোর ও যুব ক্যাম্প। ক্যাম্প শব্দের সাধারণ অর্থ অস্থায়ীভাবে বসবাসের একটি স্থান; যেখানে কুঁড়েঘর, তাঁবু বা অন্যান্য কাঠামোতে সৈনিক, উদ্বাস্তু, পর্যটক বা অন্যান্যদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। অর্থ্যাৎ ক্যাম্প হতে হলে নিদেনপক্ষে অস্থায়ী বসবাসের একটা জায়গা থাকতেই হবে। এমনকি তা হতে পারে কোনো পার্ক বা অবকাশ যাপন কেন্দ্রে, ঘরে বা তাঁবুতে অবস্থান। ক্যাম্প প্রশিক্ষণেরও জায়গা। শীতকালীন মহড়ার জন্য সেনা-সদস্যদের ক্যাম্প বহুল পরিচিত। ক্যাম্পের একটা সাধারণ বৈশিষ্ট্য চেনা পরিসরের বা শহরের বাইরে দূরে কোথাও কোনো তাঁবু বা অস্থায়ী কাঠামোতে একত্র অবস্থান। গার্হস্থ্য জীবনের বিপরীতে একটি সামাজিক জীবন। ক্যাম্পকে আটপৌরে জীবনের বাইরে একটি পরিশীলিত সৃজনশীলতা ও আনন্দময় জীবনাচারের আয়োজন হিসেবেও দেখা হয়।
বিশিষ্ট আইনজীবী এ.কে.এম. বদরুদ্দোজা সিলেটের এক সম্ভান্ত পরিবারে ১৯৫৮ সনের ৩১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম এ. এ. ওয়াদুদ ছিলেন শুল্ক দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। মাতা মরহুমা ময়মুন নেছা খাতুন। জনাব বদরুদ্দোজা ১৯৭৩ সালে সিলেট সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে এস.এস. সি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৫ সনে ঐতিহ্যবাহী এম.সি. কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে এইচ.এস.সি এবং পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অর্থনীতি বিষয়ে সম্মানসহ মাষ্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ঢাকা ল' কলেজ থেকে ১৯৮২ সনে এল.এল.বি ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৮৫ সনে ঢাকা বার এবং ৯০ সনে সুপ্রীম কোর্ট বারে যোগ দেন। ২০শে ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে আপীল বিভাগের আইনজীবি হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। র কোম্পানি ও বাণিজ্যিক আইন বিষয়ে তিনি একজন নেতৃস্থানীয় আইনজ্ঞ। জনাব বদরুদ্দোজা ১৯৭৪ সনে সিলেটে আঞ্চলিক শিশু সংগঠন গোলাপকুঁড়ির আসর এবং ১৯৭৮ সনে ঢাকায় জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ফুলকুঁড়ি আসরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ফুলকুঁড়ির প্রধান পরিচালক পদে ১৯৮২ সন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে আসরের কেন্দ্রীয় খেলাধুলা ও ব্যয়াম উপদেষ্টা। এর পাশাপাশি তিনি শিশু সংগঠন আবাবীলের উপদেষ্টা এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ফোরামের সভাপতি। তিনি ১৯৯২ সনে লায়নিজমে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি লায়ন্স জেলা ৩১৫-এ১ এর সংবিধান বিষয়ক সাব কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি সেন্টার ফর ন্যাশনাল কালচারের একজন ট্রাস্টি। জনাব বদরুদ্দোজা একজন কলামিস্ট এবং লেখক। ২০০৪ সনে 'নিজেকে জানা নিজকে গড়া' নামে তার একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশিত হয়। ২০০৭ সনে তার দুটো প্রবন্ধ সংকলন 'বাংলাদেশ নবাব সলিমূলাহ থেকে জিয়া' এবং 'আত্ম-গঠন স্বাস্থ্য ও বিশ্ব ভাবনা" প্রকাশিত হয়। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী লুৎফা বেগম, কন্যা রেহনুমা মেহজাবীন অরিন ও পুত্র ফারদিন হাসিনকে নিয়ে তার রয়েছে একটি সুখী পরিবার। অরিন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ৫ম বর্ষের এবং হাসিন আইইউটির ট্রিপল 'ই এর শেষ বর্ষের ছাত্র। ২০১০ সনের একুশে বইমেলায় প্রকাশিত তার প্রথম উপন্যাস 'পবিত্র শহরের গল্প' পাঠককুলকে শিহরিত করে। ২০১৬ সনের বইমেলায় প্রকাশিত হয় তার একাদশ তম উপন্যাস 'ইন্টার' ৭৪ এবং 'খেলারসাথি'। ২০১৭ সনের বইমেলায় তিনি নিয়ে এসেছেন চতুর্থতম প্রবন্ধ সংকলন 'নিজেকে গড়ার পাথেয়'। সংকলনটিতে আত্মজিজ্ঞাসা, আত্ম পরিচয় ও আত্ম গঠন মূলক একগুচ্ছ প্রবন্ধ সন্নিবেশিত হয়েছে। আমরা বইটি প্রকাশ করতে পেরে আনন্দিত।