শায়েখ তখন কোনো ধরা-বাঁধা নিয়মের বাইরে, কোনো ভান-ভণিতা বা কৃত্রিমতা না করে, আগত সুধীমণ্ডলী তরবিয়ত, আত্মশুদ্ধি ও সর্বজনীন শিক্ষার জন্য কিছু নসীহত পেশ করতেন। সেখানে তিনি বুযুর্গানে দ্বীনের বিভিন্ন ঘটনা ও অবস্থাও শোনাতেন―যা শ্রোতামণ্ডলীর হিম্মত উঁচু করত, মনোবল মজবুত করত। তাসাওউফ ও সুলূকের কিছু সূ²তত্ত¡ও পেশ করতেন। সেই বয়ানে মাঝে কিছু কিছু ইলমী তাহকীকও উঠে আসত। এর বাইরে তিনি তাঁর জীবনের উল্লেখযোগ্য শিক্ষণীয় ঘটনাও বলতেন। কখনো কখনো বিভিন্ন ভুল-ভ্রান্তি, উদাসীনতা ও নির্লিপ্ততার ওপরও ধর-পাকড় করতেন। মোটকথা, অবস্থার চাহিদা বিবেচনা করে যা কিছু আল্লাহ তাঁর মনে ঢেলে দিতেন, সেগুলোই তিনি পেশ করতেন। বলার সময় কোনো ধরনের ভণিতার আশ্রয় নিতেন না। তাঁর সেই মূল্যবান কথাগুলো আমরা পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে শ্রবন করতাম। অনেকের কাছে তো তাঁর কথাগুলো সঞ্জীবনা সুধার মতো মনে হতো।… এ কথা জেনে আমি খুবই খুশি হয়েছি যে, প্রিয় মৌলভী তকিয়ুদ্দীন নদভী মাযাহেরী (১৩৮৭-৮৯ হিজরী) সেগুলোকে লিখিত আকারে সংরক্ষণ করেছেন। একদিকে তিনি হযরতের বিশেষ ছাত্র ও মুরীদ, অন্যদিকে তিনি মেধাবী লেখক ও যোগ্য শিক্ষক। এ কারণে তিনি যা লিখেছেন, আশা করি, অবশ্যই পূর্ণ সতর্কতা ও সচেতনার সঙ্গে, বোধ ও উপলব্ধির সঙ্গে লিখেছেন। আমি এই মালফুযাত (অমীয় বাণী সংকলন) বিষয়ক গ্রন্থটির বিভিন্ন স্থানে নযর বুলিয়েছি। সেখানে আমি পূর্বোক্ত আশাবাদগুলোর সত্যতা দেখতে পেয়েছি। আমি আশা করি, তিনি হযরতের কথার মর্মগুলো স্বার্থকভাবে ফুটিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছেন। এই সংকলগ্রন্থে যে কথাগুলো উঠে এসেছে, তা অবশ্যই প্রকাশ ও পাঠযোগ্য।