তত্ত্বতালাশ প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হল জুলাই ২০২১ সংখ্যা হিসাবে। ত্রৈমাসিক হিসাবে পরের সংখ্যা আমরা এ বছরের অক্টোবরেই প্রকাশের পরিকল্পনা করছি। আমাদের প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও করোনা-পরিস্থিতি, লকডাউন ইত্যাদির কারণে প্রথম সংখ্যার প্রকাশ একটু দেরিতে হল। আমাদের আহ্বানে বেশ দ্রুততার সাথে লেখা দিয়েছেন এ সংখ্যার প্রাবন্ধিকেরা। দুটি লেখা অবশ্য আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে একটু ঘুর-পথে। পরে লেখকদের অনুমতি নিয়েছি আমরা। যাঁরা আমাদের আহ্বানে লেখার শ্রম স্বীকার করলেন, আর যাঁরা লেখা প্রকাশের অনুমতি দিলেন, সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সংখ্যাটি বের করতে আমরা খানিকটা তড়িঘড়ি করেছি মুখ্যত আমাদের আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে একটা আন্দাজ লেখক-পাঠকদের দেয়ার জন্য। পত্রিকার বিষয় ও বিন্যাসে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা কাজ করে নাই। আশা করি, সংখ্যাটি সার্বিক যোগাযোগ স্থাপনে আমাদের সাহায্য করবে। বলা যায়, প্রবন্ধের একটা কাগজ বের করার পেছনে দুটি দিক প্রধান ভিত্তি হিসাবে কাজ করেছে। এক. গত দু্-দশকে বাংলাদেশের তুলনামূলক কম-বয়সী লেখকদের মধ্যে জ্ঞানতত্ত্ব ও পদ্ধতির দিক থেকে চিন্তার নতুন নানা ইশারা দেখা যাচ্ছে। তার অন্তত কিছু অংশকে পত্রিকার আকারে মূর্ত করা। দুই. সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ও অনলাইন প্রকাশ-মাধ্যমে চিন্তা ও তৎপরতার যেসব রোশনাই দেখা যাচ্ছে, তার অন্তত একটা অংশকে প্রবন্ধের তুলনামূলক দায়িত্বশীল আঙ্গিকে অনুবাদের চেষ্টা। নিদেনপক্ষে কলা ও সমাজবিজ্ঞানের, এবং সম্ভব হলে বাণিজ্য আর বিজ্ঞানেরও, তত্ত্ব ও প্রণালি-পদ্ধতি বাংলায় সম্ভবপর করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। দেশ-দুনিয়ার চালু ভাবসকল তো আছেই। প্রাথমিকভাবে অন্তত চার সংখ্যায় আমরা বিষয়গত কোনো পরিকল্পনা করতে চাই না। এ সংখ্যাগুলোতে লেখক ও পাঠকদের সাথে যথেষ্ট খায়-খাতির হলে কিছু দূরবর্তী ও উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নেয়া যেতে পারে। আর আমাদের যাবতীয় সাধ্য-সাধনা সত্ত্বেও লেখক-পাঠক তরফে যদি সাড়া না মেলে, তাহলে ধরে নেব, এ ধরনের পত্রিকার কোনো সামাজিক চাহিদা নাই। তত্ত্বতালাশের প্রকাশ ও বিপণনের দায়িত্ব নিয়েছেন কবি-প্রকাশক মাহবুবুর রহমান, আদর্শ প্রকাশনীর পক্ষে। লেখক-সম্মানীসহ অপরাপর খরচের দায়িত্ব নিতে আগ্রহী হয়েছেন তরুণ বিদ্যোৎসাহী মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। ধন্যবাদ জানাই সম্ভাব্য পাঠকদেরও, বিশেষত সক্রিয় পাঠকদের। প্রকাশিত লেখার ব্যাপারে পাঠকের পর্যালোচনা ও ভিন্নমত প্রত্যাশা করছি। সূচিঃ তৈমুর রেজা উপনিবেশি বঙ্গে বাহাছ ও গণতান্ত্রিক রসম: মহাম্মদ নইমুদ্দীনের আদেল্লায় হানিফীয়া সুকন্যা সর্বাধিকারী শঙ্খ-সংসারের স্থান-কাল-পাত্র এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক ভাবনার এক পুনর্মূল্যায়ন শিশির ভট্টাচার্য্য অনুবাদের তিন পদ্ধতি: সেমিওসিস, মিমেসিস ও সেমিওমিমেসিস পারভেজ আলম ‘ম্যাড ম্যাক্স: ফিউরি রোড’: পুঁজিবাদী বাস্তবতাবাদ ও ভৌতিক আইন নিয়ে খেলা আহমেদ শামীম শব্দ যখন ইতিহাসের চাবি অনুপম সেন অমি বস্তি এবং নারী-শরীর: সম্ভাব্য ভায়োলেন্সের জমিন মোহাম্মদ আজম বাঙালি মুসলমানের ‘স্বদেশ প্রত্যাবর্তন’: এক হীনম্মন্য মিথের ইতিহাস-ভূগোল এ সংখ্যার লেখক
প্রাবন্ধিক ও গবেষক। জন্ম ২৩ আগস্ট, ১৯৭৫ নোয়াখালীর হাতিয়ায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে এমএ এবং পিএইচডি। বর্তমানে ওই বিভাগে অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত। পিএইচডি গবেষণার বিষয় ‘বাংলা ভাষার উপনিবেশায়ন ও বি-উপনিবেশায়ন’। আগ্রহের বিষয় সাহিত্য, নন্দনতত্ত¡, ইতিহাস, রাজনীতি ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন। ছোট-বড় শতাধিক প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন। অনুবাদ করেছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু তাত্ত্বিক রচনা। প্রকাশিত গ্রন্থ বাংলা ভাষার উপনিবেশায়ন ও রবীন্দ্রনাথ [২০১৯]; বাংলা ও প্রমিত বাংলা সমাচার [২০১৯]; কবি ও কবিতার সন্ধানে [২০২০]; হুমায়ূন আহমেদ : পাঠপদ্ধতি ও তাৎপর্য [২০২০]; বিষয় সিনেমা : তিনটি অনূদিত প্রবন্ধ [২০২০]। সম্পাদিত গ্রন্থ নির্বাচিত কবিতা : সৈয়দ আলী আহসান [২০১৬]