বারাণসী (হিন্দুস্থানী উচ্চারণ: [ʋaːˈraːɳəsi] (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)) হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের বারাণসী জেলার একটি শহর। শহরটি স্থানীয়ভাবে বেনারস[৩] নামে এবং বাঙালিদের কাছে কাশী (Kāśī [ˈkaːʃi] (এই শব্দ সম্পর্কেশুনুন)) নামে অধিক পরিচিত। শহরটি গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউ শহরের থেকে এই শহরের দূরত্ব ৩২০ কিলোমিটার (২০০ মা)। হিন্দুধর্ম ও জৈনধর্মের সাতটি পবিত্রতম শহরের ("সপ্তপুরী") একটি হল বারাণসী। শুধু তাই নয়, বৌদ্ধধর্মের বিকাশেও বারাণসী শহরের বিশেষ ভূমিকা ছিল। হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, বারাণসীতে মৃত্যু হলে মৃত ব্যক্তি মোক্ষ লাভ করেন।[৪] বারাণসী ভারত তথা বিশ্বের প্রাচীনতম শহরগুলির অন্যতম।[৫] খ্রিস্টীয় দ্বাদশ শতাব্দীতে মহম্মদ ঘোরি বারাণসীর অনেক মন্দির লুণ্ঠন ও ধ্বংস করেছিলেন। এই শহরের মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলি অষ্টাদশ শতাব্দীতে বর্তমান রূপ পেয়েছে।[৬] কাশীর মহারাজা (ইনি "কাশী নরেশ" নামে পরিচিত) হলেন বারাণসীর প্রধান সাংস্কৃতিক পৃষ্ঠপোষক। বারাণসীর সব ধর্মীয় উৎসবের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ তিনি।[৭] গঙ্গানদীর সঙ্গে বারাণসীর সংস্কৃতির বিশেষ যোগ আছে। বিগত কয়েক হাজার বছর ধরে বারাণসী উত্তর ভারতের এক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। বারাণসীর ইতিহাস বিশ্বের অনেক প্রধান ধর্মসম্প্রদায়ের ইতিহাসের চেয়েও প্রাচীন। হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সংগীতের বারাণসী ঘরানার উৎপত্তি এই শহরে। এই শহরে অনেক বিশিষ্ট ভারতীয় দার্শনিক, কবি, লেখক ও সংগীতজ্ঞ বাস করেছেন। বারাণসীর কাছে সারনাথের গৌতম বুদ্ধ প্রথম বৌদ্ধধর্ম প্রচার করেছিলেন।[৮] বারাণসী ভারতের আধ্যাত্মিক রাজধানী। তুলসীদাসের রামচরিতমানস সহ একাধিক বিখ্যাত গ্রন্থ এই শহরে রচিত হয়েছিল। বারাণসীর সঙ্কটমোচন হনুমান মন্দিরটিকে তার স্মরণে "তুলসীমানস মন্দির" বলা হয়। বারাণসীর কাশী হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় এশিয়ার প্রাচীনতম আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি। বারাণসীকে "মন্দিরনগরী", "ভারতের পবিত্র নগরী", "ভারতের ধর্মীয় রাজধানী", "আলোকনগরী", "শিক্ষানগরী" ও "বিশ্বের প্রাচীনতম জীবন্ত নগরী"-ও বলা হয়।[৯]