ঘুম থেকে উঠে স্মার্টওয়াচে টাইম দেখে ‘ও মাই গড’ বলে উঠল অনিক। আজকেও ক্লাসে যেতে দেরি। তড়িঘড়ি করে গাড়ি চালাতে গিয়ে গেটের সাথে ধাক্কা খেল। তার মনটা বিচলিত হয়ে গেল, দারোয়ানকে বকাঝকা করল। এত বেলা হয়ে গেল, গেট কেন খোলেনি। দারোয়ান গেট খুলল। হাইস্পিডে গাড়ি চালিয়ে ফেনী ইউনিভার্সিটির উদ্দেশে রওনা হলো অনিক। রাস্তায় এক সুন্দরী ললনা দাঁড়িয়ে ছিল। লণ্ডভণ্ড সড়কপথ। সারা পথে কাদাপানি আর গর্তে ভরা। গর্তের কাদাপানিতে ললনার মুখমণ্ডলসহ পুরো জামাকাপড় নষ্ট হয়ে গেল। সেদিকে খেয়াল না করে গাড়ি চালাতে লাগল অনিক। জ্যাম লাগল রেল গেটে। জ্যাম খুলল। ক্লাসে প্রবেশ করল অনিক। ক্লাসে প্রফেসর নেই। কিন্তু তার আসনে যোবায়ের বসে ছিল। মনের মধ্যে অস্থিরতা থাকলেও ঝকঝকে হাসি দিয়ে বলল, তুই তো সব সময় মেয়েদের পাশে বসিস, আজ কেন আমার সিটে বসলি? যোবায়ের রাগে গর গর করে বলল, তোকে রাগাব বলে। তুই তো রাগ না করে সামঞ্জস্যপূর্ণ চেহারা নিয়ে ষোলোআনা হাসি দিয়ে কথা বলার কারণে চলে যাচ্ছি আমার কোমল প্রেমের সিটগুলোতে। অনিক হাসিমাখা মুখে বলল, তুই ওদের সাথে মন ভরে চুটিয়ে প্রেম করতে থাক। ক্লাসমেটদের সাথে প্রেম করার মজাই আলাদা। আমার প্রেম-ভালোবাসা ভালো লাগে না। প্রেম বড়ই নিষ্ঠুর, বড়ই রুক্ষ ও দীর্ঘতর ভয়ংকর। যেমন: গলায় আটকে থাকে যেভাবে বাঁকা কাঁটা। যোবায়ের মৃদু হেসে বলল, তুই যখন স্বর্গের অপ্সরা পাবি তখন ঠিকই প্রেমের আবেগটি হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে চাইবি। তোর মন তখন প্রেমলিপ্সায় দ্বিগুণ প্রেমময় হবে। গ্রীষ্মের উষ্ণতায় ফুলগাছে ফুল ধরলে উচ্ছ্বাসে মন যেমন তৃপ্ত হয় তেমনি প্রেমলীলার অনেক ঊর্ধ্বে বিচরণ করবি। অনিক বলল, মনের দীর্ঘশ্বাসের বাষ্প দিয়ে তৈরি হয় প্রেম। আবার প্রেমের দুঃখের সময়গুলো বড়ই দীর্ঘ। তা শেষ হয় চোখের জল দিয়ে। হায় প্রেম! ভাবতে তোমাকে সুপ্রভার মতো খুব বেশি বেশি ভালো লাগে। যা চাঁদের মতো, কিন্তু প্রেম তুমি বড়ই কঠোর। বড়ই কাতর ও যন্ত্রণাময়।