আপনি জীবনে সফল হতে চান! আপনি একটি বাড়ি চান এবং ব্যাংকে রেখে যেতে চান অর্থ। সম্ভবত আপনি অন্যান্য সুবিধাগুলির সাথে নিজের একটি গাড়িও চান। কাজের ব্যস্ততায় না থেকে এসব উপভোগ করতে চান। আপনার কাছে এই সমস্ত কিছুই থাকবে এবং সম্ভবত আরও অনেক কিছু, আপনি যদি সফলতার রাস্তাটিকে অনুসরণ করেন। এটি অনুসরণ করলে অন্যান্য বার্তাগুলো আপনার জন্য চিহ্নিত থাকবে। সফলতার রাস্তাটি আবিষ্কার করা হয়েছে। এটি জরিপ করা হয়েছে এবং সাইনবোর্ডগুলি পাশাপাশি রাখা হয়েছে। এই সাইনবোর্ডগুলি আপনাকে কী করতে হবে তা বলে। এখানে ১৫টি সাইনবোর্ড রয়েছে এবং আপনি যদি এই বার্তাগুলি পড়েন এবং তারা আপনাকে যা বলেন তা অনুসরন করলে কোনও কিছুই আপনাকে সফল হতে বাধা দিতে পারে না। এই পনেরোটি সাইনবোর্ডগুলি এমন এক ব্যক্তি চিন্তা করছিলেন যিনি এখন খুব সফল। তিনি নিজের বাড়ির মালিক। তার নিজস্ব গাড়ি রয়েছে। তার একটি ভাল মাপের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তার এক স্ত্রী এবং বেশ কয়েকটি সুখী সন্তান রয়েছে। তিনি নিজেই সফল এবং খুশি। তাকে সাহায্য করার মতো তার কোনও ছিল না এবং আপনার মত কোনও সুবিধা ছিল না, তাই তিনি খুব কম বয়সেই কয়লা খনিতে সামান্য শ্রমিক হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। সাফল্যের পথে এই পনেরটি সাইনবোর্ড পর্যবেক্ষণ করে আপনি এখন সফল হতে পারেন ঠিক যেভাবে এই ব্যক্তি সফল হয়েছেন।
আমেরিকায় জন্মগ্রহণ করা অলিভার নেপোলিয়ন হিল আত্মোন্নয়নধর্মী রচনা লেখকদের মাঝে প্রথমদিককার একজন। ব্যক্তিগত উন্নয়ন ও সফলতা লাভের বিভিন্ন দিক লেখনীতে তুলে এনে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সফল আত্মোন্নয়নমূলক লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে হিলের। নেপোলিয়ন হিলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের সাউথইস্ট ভার্জিনিয়ায় ২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ সালে। আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে শেষ পর্যন্ত ল'স্কুলের পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি তিনি। এর আগে থেকেই যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সাথে, সেই ১৩ বছর বয়স থেকে। ১৯০৮ সালে এন্ড্রু কার্নেগীর সাক্ষাৎকার নিতে গিয়ে হিলের জীবনে আসে বিশাল পালাবদল। তখনকার সময়ের অন্যতম প্রভাবশালী শিল্পপতি কার্নেগী তাকে পরামর্শ দেন ধনী ও সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নিতে ও তাদের সাফল্যের সূত্র সম্পর্কে জানতে। এরপর তিনি বিশ্ববিখ্যাত সফল ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন। এই তালিকায় আছেন হেনরি ফোর্ড, আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেলসহ আরো অনেকে। এমন ৪৫টি সাক্ষাৎকারের লব্ধ অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর প্রথম রচনা 'দ্য ল অব সাকসেস'। এই বইয়ে তিনি সাফল্যের সূত্রকে ব্যখ্যা করেছেন গণতন্ত্র, স্বাধীনতা, পুঁজিবাদের সমন্বয়ে মূর্ত দর্শন দিয়ে। নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ সাফল্যগাঁথার চেয়ে সাফল্যের পেছনের সূত্র সহজীকরণের পাথেয় হিসেবে অধিক জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিখ্যাত এই লেখকের চরিত্রের কিছু রহস্যময় বৈশিষ্ট্য মানুষকে ভাবিয়েছেও বটে। তিনি দাবি করতেন, আত্মাদের সাথে তাঁর যোগাযোগ আছে, তাঁকে দেয় আধ্যাত্মিক জ্ঞান, সাফল্যের মন্ত্র। হিল এই বিষয়টি তাঁর ১৯৬৭ সালে প্রকাশিত বই 'গ্রো রিচ(!) উইথ পিস অব মাইন্ড' এ খোলাখুলিভাবে বর্ণনা করেছেন। বর্তমানে তাঁর জীবনের অজানা কিছু অধ্যায় উঠে এসেছে গবেষকদের চোখে। তবে নেপোলিয়ন হিল এর বই সমগ্র বিতর্কিত ব্যক্তিজীবনের প্রভাবেও জনপ্রিয়তা হারায়নি। তাঁর রচিত 'থিংক এন্ড গ্রো রিচ' সর্বকালের সেরা আত্মোন্নয়নমূলক দশটি বই এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী সমাদৃত নেপোলিয়ন হিল এর বই সমূহ হলো 'অ্যাটিটিউড মেন্টাল পজিটিভা', 'দ্য মাস্টার কি টু রিচেস', 'সাকসেস হ্যাবিটস' ইত্যাদি। বিতর্কিত চরিত্রের এই লেখক ১৯৭০ সালের ৮ নভেম্বর বেশ রহস্যজনকভাবে মারা যান। ধারণা করা হয়, তিনি পারকিনসন্স সিন্ড্রোমে ভুগছিলেন।