শুদ্ধাচার শব্দটি আমার কাছে বিশুদ্ধতায় পূর্ণ একটি শব্দ। বাংলায় শুদ্ধাচার বলতে সাধারণভাবে নৈতিকতা ও সততা দ্বারা প্রভাবিত আচরণ ও উৎকর্ষ বোঝায়। যার দ্বারা একটি সমাজের কালোত্তীর্ণ মানদণ্ড, নীতি ও প্রথার প্রতি আনুগত্য বোঝানো হয়। ব্যক্তি পর্যায়ে এর অর্থ হলো কর্তব্য নিষ্ঠা ও সততা, তথা চরিত্র নিষ্ঠা। কিন্তু সমাজে নিষ্ঠাবান চরিত্রের মানুষ পাওয়া তো সহজসাধ্য নয়। নীতি নৈতিকতার বালাই না থাকা মানুষের সংখ্য ক্রমশ বাড়ছে। কর্তব্য কর্মে সবসময় সতর্ক থাকেন এমনটা খুব কমই মেলে। আর সততার লেশমাত্র নেই এমন অনেক ক্ষেত্রেই বিদ্যমান। যেখানে সৎ মানুষের কোন ঠাঁই মেলে না। অসততার দিগন্ত থেকে দিগন্তজুড়ে কেবলই সততাকে গলাচেপে হত্য, করে আসছে। জনগণের সেবাদানই যাদের কর্তব্যকর্ম, সৎ মানুষ হিসেবে দায়িত্বশীলতার নিদর্শন রাখাই তাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত। সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে সরকার জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল প্রয়োগের পদক্ষেপ নিয়েছে, সে লক্ষ্যে বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালু হয়েছে। নাগরিক এবং সরকারী কর্মচারী উভয়ে যার যার আবস্থান থেকে সৎ থাকলেই দুর্নীতিসহ অপশাসনের বাহুল্য মুক্ত হওয়া যায়। তা হলেই প্রতিষ্ঠানগুলোতে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা পায়। আর তা প্রতিষ্ঠিত হলে সমাজ ও রাষ্ট্রের বিশাল গুণগত পরিবর্তন ঘটতে বাধ্য। সমাজ ও রাষ্ট্র এই একটা জায়গায় কন্টকাকীর্ণ হয়ে আছে। দুর্নীতির বিষয়টা উপড়ে ফেলা আর সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বত্রই প্রয়োজন শুদ্বাচার এবং তা জনগণের জন্যও প্রয়োজন। শুদ্ধাচার ভালো মানুষের ভ‚ষণ। শুদ্ধাচারী মানুষই ভালো মানুষ, আলোকিত মানুষ। আসলে যা কিছু ভালো, যা কিছু কল্যাণকর তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু মন্দ, যা কিছু অকল্যাণকর তা-ই অশুদ্ধ। যা কিছু সত্য, সুন্দর ও শুভ তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অসত্য, পঙ্কিল ও অশুভ তা-ই অশুদ্ধ। যা কিছু ন্যায় ও মানবিক তা-ই শুদ্ধ। যা কিছু অন্যায়, জুলুম ও অমানবিক তা-ই অশুদ্ধ। যা শুদ্ধ ও কল্যাণকর তা-ই ধর্ম আর যা অশুদ্ধ ও অকল্যাণকর তা-ই অধর্ম। ধর্মের ফলিত রূপ হচ্ছে শুদ্ধাচার আর অধর্মের ফলিত রূপ হচ্ছে দুরাচার। আচারই বলে দেবে আপনি ধার্মিক, না অধার্মিক। আসলে ধার্মিক যেমন দুরাচারী হতে পারে না, তেমনি দুরাচারীও কখনো ধার্মিক বলে গণ্য হতে পারে না।
সাগরিকা নাসরিন বাগেরহাট জেলার মানুষ। বাবা মীর মোহাম্মদ মুজিবর রহমান মা সাহিদা রহমান সাহিত্যে অফুরান অনুরাগ সেই ছেলেবেলার। যার প্রথম পরিস্ফুটন ' ছুঁয়ে দাও বসন্ত হাত' উপন্যাস (১৯৯৫)।আবৃত্তির আঙিনায় প্রথম পরিবেশনা ' স্বপ্ন ভাঙ্গা ভোর '। রোকেয়া হলে (ঢা.বি.)'র পরিচিত মুখ সাগরিকা 'রোকেয়া নাটক'র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং 'ডাকসু সাংস্কৃতিক দল'র নাটক বিভাগের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ২০ ব্যাচের কর্মকর্তা বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব। প্রকৃতি- মানবতা-নান্দনিকবোধ প্রতিনিয়ত তাকে সৃজনশীল কর্মে প্রাণিত করে।