ভূমিকা শিশুর জন্ম আক্ষরিক অর্থে শিশুর ভূমিষ্ঠ হওয়াকে বোঝালেও প্রকৃতপক্ষে শিশুর জন্ম শুরু হয়ে যায় সাধারণভাবে ভূমিষ্ঠ হওয়ার ২৮০ দিন পূর্বে মাতৃগর্ভে ডিম্বাণু ও শুক্রানুর মিলনে ভ্রূণসঞ্চারের মাধ্যমে। অর্থাৎ গর্ভসঞ্চারের পর মাতৃগর্ভে ২৮০ দিনের পথ শিশুকে একটু একটু করে অতিক্রম করতে হয় ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত।সুতরাং শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য শুধুমাত্র ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই যত্ন নিলে হবে না।সুস্থ-স্বাভাবিক শিশুর জন্ম হতে গেলে ২৮০ দিন মাতৃগর্ভে থাকার সময থেকেই শিশুর যত্ন নিতে হবে। যেহেতু মায়ের স্বাস্থ্য, সুতরাং শিশুর যত্ন আসলে গর্ভবতী মায়ের যত্ন। কেননা, দেখা যায় যে এই সময় মায়ের কোন কঠিন অসুখ হলে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসের মধ্যে মায়ের বিশেষ বিশেষ ওষুধ প্রয়োগের দ্বারা চিকিৎসা হলে তার প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর উপর পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ স্বাভাবিক শিশুর জন্ম হয় না। শারীরিক ও মানসিকভাবে পঙ্গু শিশুর জন্ম হয়।অথবা এই সময় মায়ের যত্ন ঠিক ঠিক না হলে ‘কম ওজনের শিশু’ বা ‘অপরিণত শিশুর’ জন্ম হয়, যারা পরবর্তীকালে সহজেই নানারকম অসুখে আক্রান্ত হয় এবং কখনই সুস্থাস্থ্যের অধিকারী হয় না।ফরে এই সব বিকলাঙ্গ ও মানসিকভাবে পঙ্গু শিশু পরিবার, সমাজ ও জাতির কাছে প্রতিবন্ধক হয়ে দাড়ায়। জন্মের পর শিশু অসুস্থ হলে তাকে যেমন কিচিৎসার মাধ্যমে সুস্থ করে তুলতে হবে, তেমনি সে যাতে ঘন ঘন অসুস্থ হয়ে না পড়ে এবং শিশু যাতে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয় তার জন্য বিশেষভাবে শিশুর যত্ন নিতে হবে।আবার দেখা যায় যে, প্রতি বছর শিশুর জন্ম দিলে মায়ের স্বাস্থ্যের খুবই অবনতি হয় এবং মা খুব বেশি রক্তস্বল্পতায় ভোগে। শিশুর চিকিৎসায় আজকাল হোমিওপ্যাথি এক বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করেছে। যেহেতু হোমিওপ্যাথিক ওষুধের ব্যবহারে শরীরে কোন রকম কুফল হয় না, সেহেতু অনেকেই এখন মা ও শিশুকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করানোর ব্যাপারে বেশি আগ্রহী ।মা ও শিশুর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা স্ংক্রান্ত ব্যাপারে এই বইটি সাধারণের কাছে এবং ছাত্র ও নবীন ডাক্তারদের কাছে বিশেষভাবে উপযোগী।কারণ চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোন্ কোন্ বিশেষ লক্ষণের উপর ওষুধ নির্বাচন করবেন, ওষুধের কত শক্তি এবং কত পরিমাণ, কতক্ষণ অন্তর এবং কতবার খাওয়াবেন তার সঠিক নির্দেশ এই বইতে আছে।এককথায় বইটিতে মা ও শিশুর সঠিক যত্নের কথা বলা হয়েছে। ডাঃ শামীমা সুলতানা