‘এই হেইট পলিটিকস’ গ্রন্থটির নামকরণ দেখে মনে হতে পারে লেখক নিজেই রাজনীতিকে ঘৃণা করেন এবং নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করছেন রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে, ঘৃণা করতে। নাম দেখে পাঠক যদি এ ধারণাটি পোষণ করেন তাহলে দোষ দেওয়ার কোন কারণ নেই। যদি লেখককে না চিনতাম, শুধু একজন সাধারণ পাঠক হতাম তাহলে আমারও সে রকম ধারণা হত নিঃসন্দেহে। লেখক নূরুন্নবী আলী একজন রাজনীতি সচেতন মানুষ , অন্তরে লালন করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মুজিবাদর্শ। স্কুলজীবন থেকেই রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। প্রবাসী জীবনেও রাজনীতি থেকে দূরে নেই বরং রাজনীতি বিমুখ প্রজন্ম যারা তৈরি করতে চায় তাদের বিপরীতেই তাঁর শক্ত অবস্থান। আমাদেরকে প্রায়ই শুনতে হয়, আমি বা আমরা রাজনীতি পছন্দ করি না। কেউ কেউ আবার আরও এককাঠি ওপরে উঠে রাজনীতিকে ঘৃণা করেন বলে আত্ম-সুখ অনুভব করেন। সেক্ষেত্রে যুক্তি বা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন রাজনীতি ও রাজনীতিবিদদের নানা স্খলন ও ত্রুটি। সাদাচোখে তাদের এ যুক্তি বা উদাহরণ অস্বীকার করার সুযোগ নেই। কিন্তু তাই বলে কি রাজনীতি বিবর্জিত পৃথিবী কামনা করা যায়, না ছিল কখনো? অন্যদিকে সমাজের অন্যান্য অংশ যারা, তারা কি স্খলন বা ত্রুটির উর্ধ্বে? মোটেই নয়। এই শ্রেণীভুক্ত যারা তারাও নানা দোষে দুষ্ট। কিন্তু যেহেতু রাজনীতিবিদদের মত জনগণের নিকট দায়বদ্ধতা কিংবা জবাবদিহিতার কোন অবকাশ নেই তাই অবলীলায় অপকর্ম করে যান আর বলির পাঁঠা সাজাতে চান রাজনীতিবিদদের। এই শ্রেণীভুক্তরা নিরপেক্ষতার নামে ভ-ামিও করে থাকেন, রাজনীতি বিমুখ প্রজন্ম তৈরি করতে চান। যা প্রকারান্তরে মূলতঃ যুগে যুগে কখনো সামরিক, কখনো বা বেসামরিক স্বৈরশাসনের পক্ষেই গিয়েছে, প্রতিক্রিয়াশীলদের সহায়ক হিসেবেই শক্তি যুগিয়েছে।