বাইতুল মুকাদ্দাস। প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে আঁকা এক অপরাজেয় ভালোবাসার নাম। মুসলমানদের অন্যতম পবিত্র ভূমি। প্রথম কিবলা—মসজিদে আকসা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ঐতিহাসিক ইসরা ও মেরাজের পুণ্যভূমি। যাঁর পবিত্রতার আলোচনা এসেছে পবিত্র কুরআনে বারবার। শুধু মুসলমান নয়; ইহুদি-খ্রিস্টানরাও এই ভূমিকে পবিত্র মনে করে। তিন ধর্মের মানুষের এই কেন্দ্রবিন্দুকে নিয়ে ইতিহাসে বহু যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে। অনেক জাতি ও সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন হয়েছে। মসজিদে আকসা এ পর্যন্ত কত কুফরি শক্তির বর্বরতার শিকার হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। আজ থেকে প্রায় আশি বছর আগে, বাইতুল মুকাদ্দাসসহ সমগ্র ফিলিস্তিন ইহুদিরা অবৈধভাবে দখল করে নেয়। ফিলিস্তিনি মুসলমান ও মসজিদে আকসার উপর চালাতে থাকে প্রতিনিয়ত নির্যাতন। মসজিদে আকসায় অগ্নি সংযোগ করে এবং একে ধ্বংস করার জন্য ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। সাধারণ মুসলমানদের জন্য মসজিদে আকসার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফিলিস্তিনকে রূপান্তর করা হয় এক বন্দিশালায়। অবৈধভাবে সৃষ্টি করা হয় ইসরাইল নামক রাষ্ট্র। এরপর থেকে বহির্বিশ্বের মুসলমানরা খুব কমই সেখানে সফর করতে পারে। দু-একজন পারলেও শিকার হতে হয় অনেক হয়রানি ও পেরেশানির। কয়েক বছর আগে ভারতের প্রখ্যাত আলেমে দীন মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ রহমানী (হাফিযাহুল্লাহ) ফিলিস্তিন সফর করেন। সেখানে তিনি মসজিদে আকসাসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন করেন। তার সেই সফরের বিবরণ তুলে ধরেছেন "আকসার আঙিনায়" গ্রন্থে। এতে তিনি মসজিদে আকসা ও ফিলিস্তিনি মুসলমানদের বর্তমান চিত্র এঁকেছেন সুনিপুণভাবে। এ বই আপনাকে নিয়ে যাবে হাজার বছরের ইতিহাসের সাক্ষী মসজিদে আকসার আঙিনায়। আপনার হৃদয়ে তড়প সৃষ্টি করবে মসজিদে আকসা স্বাধীন করার...! . বইয়ের অপর সফরনামাটি বিশ্বখ্যাত পীর শায়খ যুলফিকার নকশবন্দীর। এতে তিনি তুর পর্বত ভ্রমণের কাহিনি তুলে ধরেছেন। এছাড়া বইয়ের শেষে রয়েছে মসজিদে আকসার পরিচিতি নিয়ে তথ্যবহুল পরিশিষ্ট।
বিদগ্ধ ফকিহ, বহু গ্রন্থের লেখক এবং ইসলামি জ্ঞানের নানা শাখায় তাঁর গর্বিত বিচরণ। অল ইন্ডিয়া ইসলামি ল বোর্ড এবং ইসলামিক ফিকাহ একাডেমি ইন্ডিয়ার জেনারেল সেক্রেটারি। তার পারিবারিক নাম নুর খোরশেদ। খালেদ সাইফুল্লাহ রাহমানী তার পরিচিত নাম। তিনি বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলায় ১৯৫৬ সনে জন্মগ্রহণ করেন। ফিকহি প্রজ্ঞার গভীরতা, ইসলামি চেতনার স্বাক্ষরতা, ফিকহের অভিধানতত্ত্বের বিজ্ঞতা এবং নতুন নতুন জিজ্ঞাসার ফিকহি সমাধান তার অনন্ত জ্ঞানের উজ্জ্বল উপমা৷ ফিকহি আলোচনা ও মতামতে তঁর অভিমত নিরঙ্কুশ ভারসাম্যপূর্ণ। তিনি মোঙ্গেরের জামেয়া রহমানিয়া থেকে স্নাতক করেন৷ পরে দারুল উলুম দেওবন্দে আবারো স্নাতক করেন৷ পাটনার ইমারতে শরইয়াহ থেকে ইফতা ও বিচারিক প্রশিক্ষণ নেন৷ দারুল উলুম সাবিলুস সালামে তিনি দীর্ঘ বাইশ বছর শিক্ষকতা করেন। তার রচিত গ্রন্থ ও প্রবন্ধের সংখ্যা অনেক। সবগুলো এখনো মুদ্রিত হয়নি। তবে বাংলায় অনূদিত হয়েছে কয়েকটি মাত্র। যেমন মানবতার নবী, হালাল-হারাম।