চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিকাশমান ধারায় জরা ব্যাধির বৈচিত্র বেড়েছে। রোগ নিরসনের ক্ষেত্রেও অব্যাহত রয়েছে পরিবর্তনের ধারা। তবে তা ব্যাধি নিরাময়ের ক্ষেত্রে কতোটুকু সাফল্যের দাবীদার তা প্রশ্নাতীত নয়। বিভিন্ন রোগ চিকিৎসার জন্যে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসালয়। তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে রাজধানী পর্যন্ত তার বিস্তৃতি। মানুষ তাই চিকিৎসার জন্যে ছুটছে গ্রাম থেকে শহরে, শহর থেকে মহানগরীতে। এই পুস্তকের করিমন বেওয়া এক প্রতীকী চরিত্র। আর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রান্তিক পর্যায়ে তার অবস্থান। তিনি তাঁর দুরারোগ্য ব্যাধির চিকিৎসার জন্যে গ্রাম থেকে ছুটেছেন মহানগরীর বড় হাসপাতালে। এই পথচলায় তাকে অবলম্বন হিসেবে নিতে হয়েছে গ্রামেরই এক পল্লী চিকিৎসককে। আমরা স্বীকার করি বা না করি, অদ্যাবধি দুর্গম পল্লীতে চিকিৎসার জন্যে যাকে কাছে পাওয়া যায় তিনি পল্লী চিকিৎসক। চিকিৎসার সীমিত জ্ঞান নিয়েই তিনি মানুষের পাশে দাঁড়ান। দেশের বড় চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে করিমন বেওয়ারা আসেন বহু প্রত্যাশা নিয়ে। সাধারণ মানুষের অর্থে নির্মিত ওসব প্রতিষ্ঠানে তারা কেমন সেবা পান তার বর্ণনাই ধরা হয়েছে এই পুস্তকে। কাউকে ছোট করা বা আহত করার জন্যে নয় চিকিৎসক হিসেবে দীর্ঘ সময়ের সংশ্লিষ্টতায় লেখক যা অনুধাবন করেছেন তা-ই বিবৃত করেছেন। করিমন বেওয়া ছাড়া অন্যান্য নামে উল্লেখিত চরিত্রগুলোও কাল্পনিক।
শফিকুল ইসলাম ১৯৫৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন ধিতপুর গ্রামে। তিনি ১৯৭০ সালে গফরগাঁও-এর কান্দিপাড়া আসকর আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও ১৯৭২ সালে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন । ১৯৭৯ সালে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে এমবিবিএস ও ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ কলেজ অফ ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জন্স থেকে চক্ষু বিজ্ঞানে এফসিপিএস ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি কলেজ জীবন থেকে লেখালেখির সাথে জড়িত—দৈনিক পূর্বদেশের মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। বিভিন্ন দৈনিক ও সাপ্তাহিকে নিয়মিত লিখে থাকেন । তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাকরি করেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের দায়িত্বে ছিলেন। বর্তমানে উক্ত প্রতিষ্ঠানের চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেছেন।