14

কিসমত আলী অথবা শুন্য

কিসমত আলী অথবা শুন্য (হার্ডকভার)

TK. 210 TK. 181 You Save TK. 29 (14%)
book-icon

Cash On Delivery

mponey-icon

7 Days Happy Return

Similar Category eBooks

Customers Also Bought

Product Specification & Summary

ভূমিকা
জামরুল বনে দুপুর ঝিম হয়ে থাকে, শিশুরা গাছে উঠতে পারে না বলে বাবারাসিঁড়ি হয়। কচিকাঁচার ফড়িঙ চুপ হয়ে তাকিয়ে থাকে। হন্যে মুঠোয় কি একটা তেপান্তর, বুকের আনচান হাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দেয়, এমন একটা গ্রীষ্মে রাঙাদির ঘুঙুর ঘনিয়ে আসে। দিঘীর জলে নেমে পড়ে সিঁথিহাঁস। তিতপুঁটি ভাসে। মাছরাঙা ছৌ ফলিয়ে উড়াল দেয় দূরের তালগাছটায়। কিশোরেরা গুলতি ভুলে যায়, কিশোরীরা পাশ ফিরে চায়’ ইচিং বিচিং চিচিং ছা, প্রজাপতি উড়ে যা’ থেকে। আলতো করে কামড় বসায় ম-ম গন্ধ। আকাশ তখন বুক চিতিয়ে দেখায় নীল-নীলিমা। ঘুড়ি উড়ে কত রঙের! গুত্তা খায়। সুতো কেটে যায় বলে কেঁদে ওঠে কেউ। একটা হাওয়াই মিঠাই দিয়ে বলি:আয় কাছে আয়, তোকে পাতার বাঁশি বানিয়ে দিই, একটা আমপাতা আড় চোখে চায়। বেলা পড়ে আসে, ধীরে বয় খোয়াই নদী, নায়রী নৌকায় গান বাজে’ জলে নেমো না লো সই, জলে নেমো না লো সই’ তবু একটা বালিহাঁস জলে নেমে সাঁতার কাটে। বীতস্রোত ঠেলে উজানে যায় খল্লা মাছের ঝাঁক। নদীর কিনার ঘেঁষে, যেখানে চর পড়ে কাশবনের ঝোপ গজিয়ে উঠেছে, তার পাশেই পাতা হচ্ছে দোয়ারী। এ সময় দোয়ারীতে প্রচুর চিংড়ি পড়ে। কারো কারো সংসার এই চিংড়িই হাসিখুশিতে ভরিয়ে রাখে। বৈশাখ ডাক দেয়। ঝোড়ো এবং হালকা বৃষ্টিতে আর্দ্র হয় ভূমি। নতুন আহবানে প্রত্যাশার আলো পেয়ে সুজন কৃষক ফিরে তাকায় দিগন্তের মাঠে। শুরু হয় আগাছা পরিস্কার, সেঁচ দেয়া, বালাই দমনের প্রক্রিয়া। শক্ত হয় বোরো ধানের দানা। সরিয়ে ফেলা হয় জমির পানি। এ মাসে খুশি হয়, মাজরা পোকা, ছাতরা পোকা, সবুজ বাদামি ফড়িং ও পাতা মোড়ানো পোকা। শুরু হয় আমাদের পোকা দমনের প্রচেষ্টা।
এক.
আলোর ফাঁদ পাতি। ক্ষেতে ডালাপালা দিই, যাতে পাখি বসতে পারে। তারপর পাখি আসে, একটা দুইটা, ঝাঁক-ঝাঁক। আবার পাতা পোড়া রোগ, আবার উফরা রোগ। আমরা কৃমিনাশকের খোঁজে। তখন পেন্ডুলামের দোল স্বৈর হাওয়ায়। ঘড়ির কাঁটায় মানুষ বিঁধে আছে, মানষের উহ্য ঘড়ির নিয়ম মানতে নারাজ। ব্যাটারি খুলে ফেলতে চায়। এই সময়ে ভূপৃষ্ঠস্থ অত্যাধিক গরম হয়, বাতাস হালকা ও অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। উত্তপ্ত হালকা বাতাস সোজা উপরে উঠে শীতল হয়ে কিউমুলাস মেঘ সৃষ্টি করে। বায়ুমন্ডলের অস্থিরতা অব্যাহত থাকলে কিউমুলাস মেঘ উল্লম্বভাবে কিউমুলোনিম্বাস নামক কালো মেঘ গঠন করে এবং পরবর্তী সময়ে বজ্রঝড়ের সৃষ্টি করে। আমরা এই ঝড় কবলিত মানুষ, আকাশলীলা দেখার জন্য ফ্যালফ্যাল করে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকি, কাউকে ডাকি হয়তো, কেউ একজন সাড়া দেয় কি! তখন ভাবি দুমড়ে-মুচড়ে গেলে ঘরের আড়া শক্ত করে দিতে হয়। চলে বিনির্মাণ।
দুই.
আষাঢ় ঘোমটা খোলে মুখ দেখায়। তখন জলকাদায় প্রণয়সংগীত। খড়ের পালায়, বয়স্ক গাছের শেকড়ে গোখরো লুকিয়ে থাকে, আবার ঘরেও ওঠে। কখনো ফণা তুলে বেরিয়ে আসে। আমাদের শিশুরা গাছের ছায়ায় খেলতে গেলে ছোবল দেয়, ছোবলে মৃতের মিছিলও চলে। এতে শোক সওয়ার পরিক্ষা যেমন হয়, তেমন হয় না শক্তি। কেবল আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। থেমে যায় পাখির ডাক, শাপলার ফোটা। মতিমহরের বিলে একটাও পানকৌড়ি দেখা যায় না। জল বাড়ে। ঢেউ বাড়ে। বাড়ে ডুবে যাওয়ার ভয়। বাগড়া পড়ে পাথর ভাসানো খেলায়। আমরা থমকে থাকি কাল মহাকালের জলের ঘূর্ণন দেখে।
তিন.
এ সময় হরিবট তলায় মেলা বসে। মেলায় চড়কগাছ আসে, আসে সার্কাসের দল, পুতুল নাচ, সাথে যাত্রা। যাত্রায় একশ্রেণীর তরুণেরা ডুব দেয়। সেই সাথে চলে তাড়ি ও জোয়ার আসরও। বাঁশ ও তালপাতার রঙিন বাঁশি, ভেঁপু, একতারা, দোতারা, ডুগডুগি, বেলুন, লাটিম, মার্বেল, ঘুড়ি-লাটাই, চরকি, পুতুল, মাটির ঘোড়া, কাঠের ঘোড়া, কাঠ, কাগজ ও বাঁশের পাখি, মাটির হাড়ি-বাসন, কলস, কাচের চুরি, পুঁতির মালা ইত্যাদি জিনিসের পসরা সাজিয়ে বসে ছোট ছোট দোকানিরা। বালকেরা পুতুল নাচ দ্যাখে, শিশুরা ভয় পায় চড়কগাছে উঠতে, ওরা বায়োস্কোপ দ্যাখে। শিশুরা বায়না ধরে টমটম গাড়ির, বিভিন্ন খেলনার। রাত হলে লোকাল বখাটেদের ঈদ শুরু হয়। আমাদের ধৈর্যের পরিক্ষা চলতে থাকে আর একটা ভোরের জন্য। ভোরে দোয়ারীতে বেশ চিংড়ি পড়ে। চিংড়ি আড়তে নিতে হয়, আড়ৎ বেঁধে আছে ল্যাংড়া ধলাই খাঁ। আমরা সঠিক দামের অপেক্ষা করতে পারি না। চিংড়ি শহরে চলে যায়।
চার.
কামারের হাঁপরের সাথে উড়ে যায় আমাদের দীর্ঘশ্বাসগুলো। লোহায় আগুন লাল হতে দেখি, লোহা গলে যেতে দেখি। কিছুই গরম থাকে না। সব ঠাণ্ডা হয়ে যায়। লেবু গাছে শিশির পড়তে থাকে। জানলা দিয়ে তবু ঢুকে যায় লেবুর ঘ্রাণ। লেবুর ঘ্রাণে আমাদের ভালো ঘুম হয়। ঘড়ি চলতে থাকে। মানুষ ফুরিয়ে যায়। মানুষ হারিয়ে যায়, ঘর থেকে, মেলা থেকে, রাস্তা থেকে। আবার সূর্যমুখীকে দুলতে দেখি স্বৈর হাওয়ায়। তার অগোচরেই চো চো করে ক্ষিদে বাড়ে। ওদিকে উবুড় হাঁড়ি, উনুন ঘুমিয়ে। তার পেশী শিথিল হয়ে আছে। পেশিতে কি রক্ত চলাচল করছে! হামাগুড়ি দিয়ে কিছুটা দূরে গিয়ে একটা শিশু মুখে মাটি তুলে নিচ্ছে। নিজের প্রয়োজনেই চিমটি কেটে দেখছি:আমি জেগে আছি কিনা।
পাঁচ.
জাগরণে দূর্দশা হৃদয়-প্রণালীর। চেতনার সৌরধূলি হাওয়া চায় ঝড়ো। রসবোধ বর্জিত ন্যাড়া অশ্বত্থের সঙ্গে ক্রুদ্ধ কাঠঠোকরা চায় তৈলচিত্র। এ তবে পৌষ-পার্বণের পালা! অথচ বায়ান্ন ঘুমিয়ে, একাত্তর ঘুমিয়ে, নব্বই জড়োসড়ো এই শীতে। কি একটা শীত পড়ছে, কুয়াশার চাঁদরে মুখ লুকিয়ে রাখে সূর্য!লেপের নিচ থেকে আমাকে বের করা যেন অসম্ভব। অথচ পিঠাপুলির গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। সম্ভবত ভাপা পিঠার গরম ধোয়াও অনন্তের দিকে ছুটে যাচ্ছে। যাওয়ায় আস্ফালন আছে, আছে ফিরে না আসার সংকল্প। আমি লেপ মুড়িয়ে, লেপের আড়ালে উষ্ণতা, শরীরে কি অনুভূতি জাগায়- তা বোঝার জন্য একটু চুপ হয়ে আছি।
অয়ন্ত ইমরুল
Title কিসমত আলী অথবা শুন্য
Author
Publisher
ISBN 978-984-94689-5-0
Edition 1st Published, 2021
Number of Pages 96
Country বাংলাদেশ
Language বাংলা

Sponsored Products Related To This Item

Reviews and Ratings

sort icon

Product Q/A

Have a question regarding the product? Ask Us

Show more Question(s)
loading

Similar Category Best Selling Books

prize book-reading point
Superstore
Up To 65% Off
Recently Viewed
cash

Cash on delivery

Pay cash at your doorstep

service

Delivery

All over Bangladesh

return

Happy return

7 days return facility

0 Item(s)

Subtotal:

Customers Also Bought

Are you sure to remove this from bookshelf?

Write a Review

কিসমত আলী অথবা শুন্য

অয়ন্ত ইমরুল

৳ 181 ৳210.0

Please rate this product