এক অর্বাচীন প্রত্নকর্মীর ভ্রমণ গাঁথা গ্রন্থটি দেশ বিদেশ সফরকে নিয়ে লেখা। ১৯৮০ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত দেশ বিদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ভ্রমণ করেছেন লেখক। ১৯৮০ সালে ছাত্রাবস্থায় তিনি প্রাচীন বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধীয় বিশেষঞ্জ অধ্যাপক ড. আব্দুল মমিন চৌধুরী’র নেতৃত্বে শিক্ষা সফরের মাধ্যমে হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন ও শিখ বিশ্বের এই চার ধর্মের উৎস ভূমি ভারতের প্রাচীন, মধ্যযুগীয় ও আধুনিক স্থাপত্য নির্দশন সম্বন্ধীয় ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানসমূহ পরিদর্শন করে এ বিষয়ে সম্যক জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। চাকুরির সুবাদে ইউনেস্কোর অর্থায়নে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার বিষয়ক জরিপ ও সংরক্ষণ বিষয়ে জাপানের নারা থেকে প্রাতিষ্ঠানিক পাঠ এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ গ্রহণ কালে নারা প্রি—ফিকচার, ফুকওকা,কিইশু জাতীয় জাদুঘর,সাগা প্রি—ফিকচার, ইয়োশী পার্ক,গর্তবসতি, হাজিও সাইট প্যালেস, আসুকা ফুজিয়ারা, ওসাকা জাদুঘর, নারা ডিয়ার পার্ক প্রভৃতি সাইট ভ্রমণের বিবরণ তুলে ধরেছেন গ্রন্থে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহা—পারিচালক জনাব শিরিন আখতার ও সাউথ এশিয়ান ট্যুরিজম ডেভোলপমেন্ট প্রজেক্টের পি ডি মোঃ আবুবকর সিদ্দিক—এর নেতৃত্বে নেপালের কাঠমাণ্ডুভ্যালী, দরবার স্কয়ার, পাতন দরবার স্কয়ার, স্বয়ম্ভুস্তুপ, নগরকোর্ট, ভক্তপুর, পশুপতিনাথ শিব মন্দির ও ভারতের পোড়ামাটির ফলকের মন্দির শহর বিষ্ণুপুর ভ্রমণের বিবরণ বর্ণনা করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে। সৌদি আরবের মক্কা মোকারমা, মসজিদে হারাম (পৃথিবীর বড় মসজিদ) মুযদালিফা, মিনা,মদিনার মসজিদে নব্বী,ওয়াদ্দিয়ে জীন বা জীন পল্লী,মসজিদে কেবলাতাইন, দুই কিবলার মসজিদ,পরিদর্শনের বিবরণ বর্নণা করেছেন। লিখেছেন দেশের দর্শনীয় বিভিন্ন স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সম্পর্কে যথা ময়নামতি, পাহাড়পুর, লালবাগ কেল্লা, মহাস্থানগড়, মোহাম্মদ আলী প্যালেস জাদুঘর, উয়ারি বটেশ্বর, টাঙ্গুয়ার হাওড়, পার্বত্য জেলাসমূহ, কক্সবাজার, কুয়াকাটা , রাজশাহী ভ্রমণ, বহমান জীবনের ভ্রমণ শেষে অবসর প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরেছেন বহুমাত্রিক অভিজ্ঞতায়। ইতিহাস ঐতিহ্য, প্রত্নতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, পর্যটন প্রভৃতি শাখায় তাঁর বিচরণ। লেখকের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা ‘এক অর্বাচীন প্রত্নকর্মীর ভ্রমণ গাঁথা’ একত্র করে কথামালা হিসেবে উপস্থাপন করা হলো। বইটি নাড়িয়ে দেখলেও পাঠক দেশ—বিদেশের ঐতিহাসিক, প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান সম্পর্কে অনুসন্ধিৎসুক পাঠক ধারনা পাবে, এটা আমার বিশ্বাস।