এটা আসলে কোনো কবিতা না, কোনো গল্পনা, এটা কেবলই তোমাকে উদ্দেশ্য করে আমার কিছু কথা। তোমাকে নিয়ে, আমাকে নিয়ে, আমাদের নিয়ে; আর হ্যাঁ, সর্বোপরি তাঁকে নিয়ে। এখানে আমার এই তাঁকে টা হলো, ইশ্বরকে নিয়ে। মূলত পুরুষ বা Person এর গ্রামারটিক্যাল কনটেক্সট থেকে আমরা এই তিনটা পুরুষের অস্তিত্বই দেখতে পাই। You, I and He. - তুমি, আমি আর সে। কিংবা একটা পূর্ণ বাক্য যেভাবে গঠিত হয়, কর্তা কর্ম বিধেয় বা Subject Verb Object. এখানেও মূলত এই তিনটা অস্তিত্বই পাওয়া যায়। আবার আমরা যখন দুজন মিলে কথা বলি, এবং কথার মাঝে যাবতীয় যে কোনো ফ্যাক্টই যখন চলে আসে ঐটা নিঃসন্দেহে তৃতীয় ফ্যাক্টই। কারণ, অলরেডি এখানে আমি এবং তুমি বিদ্যমান। মজার ঘটনা হচ্ছে, এই বইয়ে এখানে যে 'আমি'টা তোমার সাথে বিভিন্ন কথা বলার চেষ্টা করেছে, এটাকে বিভিন্ন আলাদা আলাদা এঙ্গেল এবং লেয়ার থেকেই দেখা যায়। কিন্তু মূল এঙ্গেলটা সবসময় এক জায়গায়ই থাকবে— যে যার সাথে যা কিংবা যাকে নিয়ে বলছে। মোদ্দাকথায়, এই বইয়ের মূল বিষয়বস্তু হলো আলাপচারিতা। এখানে লেখক হিসেবে আমার ব্যক্তিগত অনুভবের কথা বলতে গেলে, আমি এখানে আমার ভেতরের আমির সাথে কথা বলেছি। এখানে বক্তাও আমি, শ্রোতাও আমি। আবার, মাঝে মাঝে উদ্দেশ্য আপামর প্রজন্ম, জনসাধারণও। তবে, পাঠকগণ এখানে কথা বলার হিসেব থেকে বিভিন্ন সেগমেন্টসে আলাদা আলাদা করেও পড়তে পারেন, সেটা পাঠকের ব্যক্তিগত অভিরুচি। যেমন, কোনো প্রেমিক অথবা প্রেমিকা নিজেকে প্রথম পুরুষ ভেবে নিয়ে, তার প্রেমিকা অথবা প্রেমিককে দ্বিতীয় পুরুষের সেগমেন্টে রেখে যাবতীয় সবকিছুতেই তৃতীয় পুরুষের উপস্থিতিটাই ট্যের পাবে। এমনকি সৃষ্টির প্রথম পুরুষ আদম(আঃ)/এডাম/whoever it was, is and will always be the same...whatever, তাকেও যদি কথা বলার সাপেক্ষে প্রথম পুরুষ কিংবা সাবজেক্ট হিসেবে ধরা হয়, তাহলে সেখানে দ্বিতীয় পুরুষটা হাওয়া(আঃ)/ইভ/whoever it was, is and will always be the same...(কথাটা এভাবে লেখার কারণ হলো, এই ব্যক্তিগত বিশ্বাসের জায়গায় সবাই এবং সবকিছুই স্বাধীন, আমারটা আমার কাছেই থাক, চাপিয়ে দিতে চাই না) এবং তারা যদি তাদের থেকে উদ্ভুত বাকি সকল মানুষদের জার্নিগুলো নিয়ে কোনো কথা বলতে চায়, মেটাফরিক্যালি তারও একটা ভিউ পাওয়া যাবে। এটা মূলত 'আমার' কথামালা, যা তোমাকে উদ্দেশ্য করে বলেছি। আমি, তুমি ছাড়া এই কথা গুলা আর একজনই শোনেন, তিনি। অতোএব, তাঁকে এড়িয়ে কোনো কথাই বলতে পারবো না 'আমি'। প্রেমিক/প্রেমিকাকেই উদাহরণ হিসেবে কেন বেছে নিলাম, এমন কোনো প্রশ্নও যদি কারো মগজে আসে কখনো তাহলে আগেই বলে রাখছি, আমি কোনো কিছু জোর করে, সময় নিয়ে ভেবে কিছু লিখি নি, এবং লিখিও না, লিখতে পারিও না। আমি যা অনুভব করি, এবং ঐ অনুভব থেকে যা মনে-মগজে চলমান/স্থির চিত্রের মতো আসে তাকেই ভাষা দিয়ে বোঝার চেষ্টা করতে গিয়ে, যা মাথায় আসে তাই লিখি, যতোটুকু আসে ততোটুকুই। আর অনুভবের সবচেয়ে সাধারণ, অসাধারণ এবং চলিত প্রকাশ হচ্ছে 'প্রেম'। অনুভব ছাড়া কি সত্যিকারের প্রেম হয়?? এই বইয়ে যতোগুলা শব্দ/বাক্য এবং যতিচিহ্ন আছে কিংবা যা কিছুই আছে এ বইয়ে, এর কোনো কোনোটা আজ থেকে এক যুগ আগের, কোনোটা সাত/আট বছরের, আর এইতো কোনোটা এই মাসেরই। কি লিখি জানি না, ২০০৭ সাল থেকে অনুভবকে বুঝে কিংবা না বুঝে ভাবনার ছবি শব্দ দিয়ে আঁকার চেষ্টা করেছি। এই বইটা বলা যায় তখন থেকেই চলমান। অন্যান্য কিছু বিষয় নিয়েও অনেক অনেক ভাবনা আছে, এবং চলছে। কিন্তু এই বইয়ে শুধু এবং কেবলমাত্র, যে কথা গুলা 'আমি' তোমাকে উদ্দেশ্য করে বলতে চেয়েছি, তাই আছে। আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার কাছে অনুভূত হয়েছে যে— এই তাবৎ সম্প্রসারণশীল সৃষ্টিজগতের যেকোনোকিছু, সবকিছু এবং কিছুই না এরও সম্মিলিত বা সামষ্টিক একটা স্বরূপ করলে/ভাবলে/বুঝলে নিঃসন্দেহে তা একটা অনাদি/অবিনশ্বর সত্তাকেই নির্দেশ করবেই। ধর্ম যাকে নিরাকার ইশ্বর বলছে, আর বিজ্ঞান যাকে অফুরান কোনো শক্তির আধার/সোর্স বলছে, এবং নিরাকারই। তো, আমার কাছে ঠিক যা যা মনে হয়েছে তাই আমি 'তোমাকে' উদ্দেশ্য করে বলেছি, তোমার সাথে 'আমার' মনের, অস্তিত্বের, অনুভবের ভাবটা শেয়ার করার চেষ্টাটা করেছি। আমি যাই বলেছি, তার সাথে সহমত কিংবা দ্বিমত পোষণের স্বাধীনতাটা অবশ্যই তোমার আছে। Take it or leave it, but as I'm sharing some feelings of mine to you— এইখানে আসলে কোনো কনফ্লিক্ট নিয়ে আসার কোনো মানে নেই, অহেতুক হবে ব্যাপারটা। মানে, কথা শুনে তুমি যদি 'আমাকে' বলতেও আসো যে, "এইটা এমন না, ঐটা অমন না; আমি মানি না, আমি মানলাম না, আমি মানবো না" তাহলে আসলে কোনো লাভই হবে না। কারণ, তখন আমার জবাব হবে— ''তো?" আমি তোমাকে মানতে বলিই নি কিছু, তোমার নিজের মানার প্রতি আমার পূর্ণ সম্মান আছে এবং সবসময়ই থাকবে। আর তোমার না মানার প্রতিও সেইম, তোমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত কিংবা চিন্তা নিয়ে আমার বলার কিংবা করার কিছুই নেই। আমি শুধু আমার অনুভব, আমার উপলব্ধি, আমার কথাগুলো, আমার চিন্তাগুলা, ভাবনাগুলা তোমার সাথে শেয়ার করেছি। এখানে আমিও স্বাধীন, তুমিও স্বাধীন। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে— I've felt what I've felt, and I've said what I've wanted say. You can also feel what you want to feel and you can say what you want to say. তুমি এরপর আমাকে কিছু বললেও তাতে 'আমার' কিছু যাবে, আসবে না। কারণ, আমি তো অলরেডি অনুভব করে ফেলেছি এবং বলে ফেলেছি। তবে হ্যাঁ, তোমার কথা যদি আমার কাছে যুক্তিসঙ্গত লাগে এবং তুমি যদি কখনো আমার মনোযোগ চাও তোমার কথা শোনার জন্যে, অবশ্যই আমি শোনার জন্যে প্রস্তুত with all my senses. ওখানেও আবার একই চিত্র, মানা কিংবা না মানা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। অতোএব, আমাকে কিছু বলার আগে, পূর্ণ মনযোগে(অন্য কোনো দিকে মনযোগ না দিয়ে) একবার কথাগুলা শোনো, Please. এইটা কোনো কবিতা না, কোনো গল্প না, কোনো বানানো কিছু না। It’s all what I've been feeling and it’s all what I've been sharing with you. So, I am seeking your full attention/concentration here. কোনো কথা বলার সময়, কোনো ভাব শেয়ার করার সময় বক্তা যেমন মনোযোগ, এটেনশন চায়..তেমনি আমিও, আমার কথামালা শুরু করার আগে তোমার পূর্ণ মনোযোগ চাচ্ছি। শুরু করি তাহলে??? শোনো তবে...
ইমাম হোসেন মুবিন, আত্মকৃত ছদ্মনাম ''না রু দা'' পূর্ণরূপে যা নাথরুল রুদ্রকান্ত দাসুদ্দিন। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি, ব্রহ্মপুত্র বিধৌত জামালপুর জেলার "হেলেঞ্চা" গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোঃ বিলাল উদ্দিন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত ছিলেন। মা মোমেনা খাতুন, পেশায় পরিবার পরিকল্পনা ও কল্যাণ অধিদপ্তরে কর্মরত। বড় দুই বোন সুলতানা রাজিয়া এবং মুসলিমাতুল জান্নাত, বিভিন্নভাবে কবিতা এবং সাহিত্যচর্চার সাথে জড়িত আছেন। ঝাওলা গোপালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা এবং ঝাওলা গোপালপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে ২০০৯ সালে ময়মনসিংহ শহরে পাড়ি জমান। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ২০১৪ সালে এস.এস.সি পাশ করেন। পরবর্তীতে ২০১৭ সালে আনন্দমোহন কলেজ, ময়মনসিংহ থেকে এইচ.এস.সি পাশ করেন। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফরাসি ভাষা ও সংস্কৃতি বিভাগে স্নাতক(সম্মান) করছেন। তিনি ২০০৭ সাল থেকে কাব্যচর্চায় নিয়োজিত আছেন। তাঁর কবিতায় প্রকৃতি, প্রেম, সমাজ, রাষ্ট্র, ধর্ম, বিজ্ঞান, দর্শন সহ অনুভব, অনুধাবন এবং উপলব্ধির প্রায় সবকিছুরই একটা ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়। "তুমি, আমি এবং ইশ্বরঃ একই গল্পের অনেক উপাখ্যান" তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ।