উম্মাহদরদি প্রতিটা অন্তর এক পবিত্র চেতনা লালন করে। যে চেতনা হৃদয় থেকে হৃদয়ে স্থানান্তরিত করতে কেউ লড়াই করে, কেউ কলম ধরে, কেউ বাগ্মিতার মসনদে বসে। সকলেই এক পবিত্র চেতনার একেকটি মূল্যবান অংশ। একটি বিনে অন্যটি অপূর্ণ। তবে পরিতাপের বিষয় হলো, বিশ্ব জুড়ে চলমান হক-বাতিলের লড়াই নিয়ে আজ এমন লোকজনও কলম ধরছে, যারা অন্তরে বিষ লালন করে। তারা না এসবের সঠিক তথ্য সংগ্রহের জন্য নির্ভরযোগ্য কোনো লোকের কাছে গিয়েছে, না সরাসরি হকের পথে লড়াইকারী কোনো মুজাহিদের লিখিত বা মৌখিক বর্ণনা শুনেছে। তারপরও তারা বুদ্ধিজীবি এবং আলোচক। জ্ঞান থাকুক আর নাই থাকুক অর্ডার এসেছে, পকেটে পয়সা পড়েছে; কিছু একটা লিখতেই হবে। এসব কথিত বুদ্ধিজীবি, বিশ্লেষক এবং কলামিস্ট নিজেদের লেখায় আপন বানোয়াটি বিদ্যার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করে। টেবিলে বসে পশ্চিমা মিডিয়া থেকে শোনা খবরের ভিত্তিতে রণাঙ্গন এবং লড়াইয়ের ফলাফলের ওপর আনুমানিক প্রবন্ধ, কলাম ও পুস্তক লিখে দেয়। দাজ্জালি মিডিয়ার মিথ্যা প্রোপাগান্ডাকে মুসলমানের সামনে তুলে ধরে নিজেদের উদরপূর্তির জন্য ইহুদি-নাসারাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। আর সরল সহজ মুসলমান কাফেরদের সেসব মনগড়া কিচ্ছা-কাহিনী বিশ্বাস করে, যেগুলোতে মিল্লাতের রাহবরদের আদর্শিক পরাজয় বর্ণিত হয়েছে। তাদের ছড়ানো বিভ্রান্তিতে পড়ে অত্যাধুনিক টেকনোলজির সরব শ্লোগানের সামনে লাচার হয়। তাই প্রকৃত বাস্তবতা হলো হক-বাতিলের লড়াই, আন্দোলন, অভিজ্ঞতা, চাক্ষুস দেখা বিষয়গুলোকে লিখিত আকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে বিলম্ব করা বে-দীন লেখক এবং দাজ্জালি মিডিয়ার জন্য সত্য গোপনের দরজা খুলে রাখার নামান্তর। যার সুযোগে মগজবেচা বুদ্ধিজীবি এবং তাগুতি লেখকরা নিজেদের কলমের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে ধোঁকা, চক্রান্ত, কল্পকাহিনী ও মিথ্যানির্ভর লেখার মাধ্যমে পথভ্রষ্ট করতে সফল হয়ে যাবে। আল্লাহ না করুন, যদি এমনটি হয়ে যায়, তাহলে আমাদের জন্য নিজেদেরকে ভৎর্সনা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না। জখমি হৃদয়ের এক পবিত্র চেতনা উম্মতে মুসলিমার বিভ্রান্ত নওজোয়ানদের হৃদয়ে স্থানান্তর করার উদ্দেশ্যে অযোগ্যতার সকল দায় কাধে নিয়ে কলম নিয়ে বসা। যে চেতনা উদ্যমী নওজোয়ান কাফেলা যুগ থেকে যুগান্তরে বয়ে বেড়াবে এবং মৃতপ্রায় উম্মাহর হৃদয়ে হৃদয়ে তাওহিদের ঝড় তুলবে। গ্রন্থটি রচনায় নিজস্ব কোনো মতামতের ওপর নির্ভর না করে সরাসরি এ ময়দানে যারা কাজ করেছেন, করছেন, তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতার বর্ণনা সম্বলিত গ্রন্থাবলী, বয়ান এবং কিছু দাজ্জালি মিডিয়ার রেফারেন্সকেই তথ্য-উপাত্তে কাঁচামাল হিসেবে গ্রহণ করেছি। গ্রন্থটি পড়ে যদি পাঠকের দীলে উম্মাহর ভালোবাসা ও আপন রবের সাথে কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের স্পৃহা জাগ্রত হয় এবং আপন দায়িত্ব পালনে আল্লাহর রাহে এগিয়ে আসে, তাহলেই ধরে নেব মেহনত বেকার যায়নি। বুঝে নেব এই আজান কবরস্থানে দেয়া হয়নি; বরং এক জীবন্ত জাগ্রত সচেতন মানববসতিতেই দেয়া হয়েছে...