সমস্ত প্রশংসা একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার যিনি বাতিল হতে হককে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এবং দরূদ ও সালাম বর্ষিত হোক মহানবী বিশ্বনবী মুহাম্মদ ( সা.) এর ওপর, তার সাহাবা তাবেঈ, তাবে তাবেঈন আয়েম্মায়ে সালফে সালেহীন ও কিয়ামত পর্যন্ত তার সুন্নাতের ধারক বাহক সকলের ওপর রহমত বরকত বর্ষিত হোক। আলাহুম্মা আমীন। মাযহাবী ও লা মাযহাবীদের মাঝে অনেক বিষয়ে যুগের পর যুগ বাহাস, মুনাযারা হলেও কোন সুরাহা হয়নি তন্মধ্যে অন্যতম: মুসাফাহা। একজন মুসলিম যখন অপর মুসলিম ভাইয়ের সাথে সাক্ষাত করবেন তখন এক হাতে মুসাফাহা না উভয় হাতে মুসাফাহা করবেন তার প্রকাশ্য বিধান সহীহ হাদীসে দেয়া হলেও আরবী ব্যাকরণের মারপ্যাচে ফেলে, মাযহাবী গোড়ামী করে এখনও এর কোন সমাধা দেয়া হচ্ছে না। উল্টো উদ্ভট, কুৎসিত চরিত্রের কিছু মানুষ ইতিহাস নাম করে মিথ্যার বেসাতি করে বেড়াচ্ছে। আল-আবরার ট্রাষ্ট, ৫০ বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০ হতে প্রকাশিত মূল উর্দু কিতাবের লেখক মাওলানা মুহাম্মাদ আমীন সফদর রহ., অনুবাদ মাওলানা আজীজুর রহমান, বিশিষ্ট খলীফা: আরেফ বিলাহ হাকীম মুহাম্মাদ আখতার “ইসলামের দৃষ্টিতে মোসাফাহ্”। ভূমিকার প্রথম প্যারাতে লেখা হয়েছে: “ইহা বাস্তব সত্য যে, ইসলাম পৃথিবীতে এসেছে মহব্বত, ভালবাসা ও বন্ধুত্বের পয়গাম নিয়ে এবং দুনিয়াতে এ পয়গামই বিস্তার করেছে।” পঞ্চম পৃষ্ঠায় শেষের দিকে একটি ঐতিহাসিক মিথ্যা লিখে বইখানায় কদর্যতার আরম্ভ করলেন এভাবে, “ভারতের আহলে হাদীস গ্র“পের কর্ণধার মাওলানা হুসাইন সাহেব বাটালবী...।” তারপর বইয়ের মূল আরম্ভ করলেন এভাবে, “ইসলামের দৃষ্টিতে মোসাফাহ্ এক হাতে মোসাফাহ্ করার ইতিহাস যখনই দুই মুসলমান একত্রিত হত তখন একে অন্যকে সালাম করত, যা মুসলমানদের জন্য ছিল ভালবাসা ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের প্রতীক। দুই হাতে মোসাফাহ করা মুসলমানদের একটি মুতাওয়ারেস (ধারাবাহিক) আমল ছিল। ব্রিটিশ আমলের পূর্বে কোন ইসলামী কিতাবে দুই হাতে মোসাফাহ করাকে খেলাফে সুন্নত বা বিদায়াত বলা হয় নাই। ব্রিটিশ শাসনকালেও মুসলমনারা যখন পরস্পরে মিলিত হত তখন দুই হাতে মোসাফাহ করত আর ব্রিটিশেরা যখন পরস্পর মিলিত হত তখন এক হাতে মোসাফাহ করত। কি আশ্চর্য ব্যাপার ব্রিটিশদের এ পথ অনুসরণ করল সর্বপ্রথম নেচারিরা (অর্থাৎ স্যার সাইয়েদ আহম্মদ এর অনুসারীরা)... অতঃপর নেচারিদের অনুকরণে তথা কথিত আহলে হাদীসগণও কেবল ডান হাতে মোসাফাহ করা শুরু করল।” মুসাফাহা বিষয়ে ভারতবিখ্যাত মুহাদ্দিছ শায়খ আবদুর রহমান মোবারকপুরী সাহেবের লিখিত ও বন্ধুবর কামাল আহমদের অনুদিত বইখানা এ ব্যাপারে একটি প্রতিবাদ গ্রন্থ হিসেবে মুসলিম সমাজে গৃহীত হয়েছে। অতঃপর যখন আমীন মুহাম্মাদ আমীন সফদর সাহেবের বই হাতে এল আর তাতে এ রকম তথ্যবিকৃতি করা হলো তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম “ইটের বদলে পাটকেল” মারব। আর তাই এর শেষে পরিশিষ্ট আকারে বাংলাদেশ জমঈয়ত আহলে হাদীসের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আলামা আব্দুলাহেল কাফী আল-কুরাইশী ( )এর লিখিত “মুছাফাহা দক্ষিণ হস্তে, না উভয় হস্তে” যোগ করে দিব। সত্য চির ভাস্বর, মিথ্যা যতই শক্তিশালী হোক তা অবিমৃশ্য। আলাহ আমাদের হক প্রচারে সাহস দাও, তাওফীক আতা ফারমাও যাতে মুসলিম সমাজ হতে মিথ্যা, ভুল, ও বিকৃতি দূর করতে পারি। আমীন।