জনসংযােগ এবং জনসংযােগ পেশা সম্পর্কে আগ্রহী যে-কেউ বইটি পড়ে এই পেশা সম্পর্কে যেমন একটি স্বচ্ছ ধারণা পাবেন, তেমনি জানতে পারবেন আধুনিক যুগে জনসংযােগের প্রয়ােগ কৌশলও। সাবেক পাকিস্তান আমলে এদেশে জনসংযােগ পেশার তেমন কোন অস্তিত্ব ছিলনা। জনসংযােগ কার্যক্রম কয়েকটি সরকারি অফিসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। সাধারণ মানুষ এমনকি শিক্ষিত জনগােষ্ঠীর বৃহত্তর অংশ জনসংযােগ বিষয়টি সম্পর্কে খুব একটা সচেতন ছিলেন না। জনসংযােগ বিষয়ে প্রচ্ছন্ন কোন ধারণাও ছিলনা তাদের মধ্যে। বস্তুতপক্ষে জনসংযােগ বিষয়ক শিক্ষার অভাব এই পেশার বিকাশে অন্যতম প্রধান অন্তরায় হিসেবে কাজ করছিল। ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন সাংবাদিকতা বিভাগ প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে জনসংযােগ নিয়ে আলােচনা শুরু হয়। বিষয়টি সম্পর্কে মানুষের ধারণাও আস্তে আস্তে পাল্টাতে থাকে। অনস্বীকার্য, স্বাধীনতাত্তোরকালে বাংলাদেশে জনসংযােগ পেশা আস্তে আস্তে বিকশিত হওয়া শুরু করে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে জনসংযােগ কর্মকর্তা নিয়ােগ প্রাপ্ত হন। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের কারণে জনসংযােগ পেশাজীবীদের সংখ্যা এখন যেমন বাড়ছে, তেমনি জনসংযােগ শব্দটির সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষেরও একটি পরিচিতি গড়ে উঠেছে। আবার তরুণ প্রজন্মের অনেকেই বিশেষত গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা এখন জনসংযােগ পেশায় কাজ করতে বিশেষভাবে আগ্রহী।
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ৯নং ভোলাকোট ইউনিয়নের টিওরী গ্রামের কৃতি সন্তান প্রথিতযশা গণসংযোগ বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক, শিক্ষক, সংগঠক, গবেষক ও লেখক মির্জা তারেকুল কাদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সম্মান প্রথম ব্যাচের (১৯৭৭-১৯৮১) শিক্ষার্থী মির্জা তারেকুল ১৯৭৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। শিক্ষাজীবন শেষে তিনি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি ঢাকায় বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব জার্নালিজম অ্যান্ড ইলেকট্রনিক মিডিয়া (বিজেম) নামের একটি ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি এই ইন্সটিটিউটের নির্বাহী পরিচালক। এই ইন্সটিটিউটে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন দেশে ও বিদেশে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক, মুদ্রণ ও অনলাইন গণমাধ্যমে সাফল্যের সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রথম নির্বাচিত সভাপতি এবং বাংলাদেশ জনসংযোগ সমিতির সাবেক সভাপতি মির্জা তারেকুল কাদের বেশ ক’টি জনসংযোগ ও চলচ্চিত্র বিষয়ক গবেষণা গ্রন্থের প্রণেতা।