কাউকে দেব না তোমাকে' ড. কাজী ইকবাল জামান প্রবাসী কবি ঔপন্যাসিক ও গল্পকার ড. কাজী ইকবাল জামান সমকালিন বাংলা উপন্যাসের এক উদীয়মান নক্ষত্র। ভিন্ন ভাষা সংস্কৃতি দেশ সুদূর জাপানে বসবাস করেও তিনি ভুলে যাননি তাঁর প্রিয় মাতৃভাষা বাংলার- দুখিনি বর্ণমালার কথা। ভুলে জাননি শৈশব কৈশোরের ফেলে যাওয়া প্রিয় জন্মভূমির স্মৃতির মিনার। যে জনপদের পথের ধুলা থেকে স্বর্ণরেনু কুড়িয়ে আজও বিনির্মাণ করে যাচ্ছেন- 'কাউকে দেবো না তোমাকে'-এর মতো অসামান্য উপন্যাস। 'কাউকে দেবো না তোমাকে' লেখকের তৃতীয় উপন্যাস।
উপন্যাসটি সাগরকন্যা চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড রেল কলোনীকে ঘিরে আখ্যানভাগ জন্ম নিয়ে এখানেই তার পরিণতি পেয়েছ। উপন্যাসের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ক্ষণে ক্ষণে নাটকীয় পট পরিবর্তনের ক্ষমতা। যেখানে পাঠককে গল্পের ভেতর দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় না, গল্পই পাঠকের হাত ধরে ধারাবাহিকভাবে ক্রমাগত সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। সেখানে দেখা হয় লেখকের অনন্য মুন্সিয়ানায় সৃষ্টি গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র 'পথিক'- যাকে তিনি অনন্ত রহস্যময়তা দিয়ে সৃষ্টি করে, তার মুকুটে পরিয়ে দিয়েছেন একজন মানবিক প্রেমিক পুরুষের দুর্লভ খেতাব। আমার কাছে সম্পূর্ণ উপন্যাস পড়ে মনে হয়েছে পথিক চরিত্রটি ড. কাজী ইকবাল জামান-এর এক কালজয়ী সৃষ্টি।
এই উপন্যাসে গল্পবলার এক আসামান্য ক্ষমতা রয়েছে ঔপন্যাসিকের। যা বয়ানের সাবলিলতার স্রোতধারায় ক্রমাগত সামনে গিয়ে মিশেছে নায়েগ্রা জলপ্রপাতের উত্তাল জলরাশীর মতো। যা পাঠককে বুঝতে দেয় না লেখক গল্পের মোড় ঘুরিয়ে কোন দিকে নিয়ে যাবেন। যে কারণে গল্পের ঘটনা প্রবাহ মুহূর্তেই বিদ্যুৎ চমকের মতো আলোর রেখায় দেখা দিয়ে আবার মিলিয়ে যায়।
সর্বোপরি উপন্যাসটি মানব জীবনের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, প্রেম-বিরহ ও জীবনের উত্থান-পতনের এক ত্রিবেনী সংগমে পরিণত হয়েছে। 'কাউকে দেবো না তোমাকে' উপন্যাসটি সেদিক দিয়ে কবি ড.কাজী ইকবাল জামান-এর এক সার্থক সৃষ্টি।
আশাকরি লেখকের এই উপন্যাস ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পাবে। জয় হোক লেখকের, জয় হোক বাংলা সাহিত্যের। লেখকের জন্য শুভ কামনা। মাহবুব খান কবি ও ঔপন্যাসিক, প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব অনুশীলন সাহিত্য পরিষদ