স্বাধীনতা, বিজয়, মুক্তিযুদ্ধ শব্দগুলো আমাদের নিঃশ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে মিশে আছে। স্বপ্ন, সম্মিলন, সুখ, সান্ত্বনা আর সামগ্রিকের সাধনায় বিজয়ের দৃপ্ত ও সুকুমার আগমন আমাদের দিয়েছে পরিপূর্ণতা। দিয়েছে একটি দেশ, ভূখণ্ড আর একটি লাল-সবুজ পতাকা। কিন্তু এই বিজয় আগমনের পথ কি ছিলো ফুল বিছানো? যখন আমাদের কণ্ঠে ধ্বনিত হয়েছে, ‘স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে’ তখন হিংস্র হায়েনার দল আমাদের দাসত্ব শৃঙ্খল দিয়ে বাঁধতে চেয়েছিল। কিন্তু ওরা ভাবতেই পারেনি বীর বাঙালি ভয়কে জয় করতে জানে হেসে হেসেই। তিরিশ লক্ষ প্রাণ কত অকুতোভয়। এই প্রাণ দানের উৎসবে ওরা ভড়কে গিয়েছিলো। ওরা থমকে গিয়েছিলো। এমন জাতি তারা দেখেনি কখনই। আজ আমরা নিঃশঙ্ক চিত্তে শ্বাস নিচ্ছি সোনার বাংলায়। সোনার বাংলার স্বাধীন মাটিতে দাঁড়িয়ে দেখছি মুক্ত আকাশ। বুক ফুলিয়ে বলতে পারছি, ‘দাম দিয়ে কিনেছি বাংলা কারো দানে পাওয়া নয়...।’ একাত্তর-এক বিভীষিকাময় যুদ্ধকাল। কিন্তু এ বিশ্ব সেদিন অবাক হয়ে দেখেছিল এক জাতিকে যারা পরভব মানে না। রক্তকবলিত এই দেশ তখন অনেক ভয়াবহতা আর নৃশংসতার নীরব সাক্ষী। মহান মুক্তিযুদ্ধের সেই সব মর্মদাহী ঘটনাকে ধারণ করে গল্পকারেরা বিস্ময় জাগানিয়া সব গল্প লিখেছেন, এখনও লিখছেন। ভবিষ্যতেও লিখবেন। আমরা এমন কয়েকজন গল্পকার বেছে নিয়েছি যুদ্ধের আঁচ যাদের মননে প্রভাব ফেলেছিলো বটে কিন্তু বয়সের কারণে অংশ নেয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যারা হৃদয়ে ধারণ করেন ছাপ্পান্ন্ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশকে। শিশুমনে সেই রক্তাক্ত সময়ের অনুভবকে পুষে রেখে সেই শিশু, কিশোর আজ মুক্ত বাংলার স্বনামধন্য গল্পকার ও কথাসাহিত্যিক। সমৃদ্ধ এই গল্পকারদের গল্পে সেই যুদ্ধকাল কতটা ছাপ ফেলে তা পাঠকের কাছে পৌঁছে দেবার জন্যেই আমাদের এই প্রয়াস। মুক্তিযুদ্ধ- আমাদের চেতনার চৌকাঠ আমাদের বোধের বারান্দা আমাদের বিশ্বাসের বাগান