আযাদ কামালের ছড়ার বই ‘মুগ্ধ হাসে ফোকলা দাঁতে’ শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা আযাদ কামালের প্রথম বই। ছোট পত্রিকা সম্পাদনা ও অধ্যাপনা করার পাশাপাশি তিনি শিশু সাহিত্যের প্রতিও বেশ মনোযোগী। ছড়া শিশুদের ভাষা শিক্ষা ও কল্পনার বিকাশকে বেগবান করে। ছড়া দিয়ে খুব সহজেই প্রকাশ করা যায় মনের ভাব। হাসি আনন্দের প্রকাশ মাধ্যম যেন ছড়া। মুগ্ধ হাসে ফোকলা দাঁতে ছড়ায় তারই প্রকাশ দেখতে পাই- দম ফুরানো হাসির সাথে চাঁদ জোছনা হাসে হাসতে হাসতে হাসির রাজাও মনের গাঙে ভাসে।
মন ভুলানো মনের সুরে হাসতে যদি চাও ফোকলা দাঁতের হাসি দেখে একটু হেসে নাও।
বাংলা ছড়ার একটি বড় বৈশিষ্ট হলো এ ছড়া খুব বেশি ছন্দপ্রবন। ছন্দের মাত্রা ছুটে গেলেই ছড়ার গতি রোধ হয়ে পড়ে। ছড়ার শব্দগুলো হতে হয় যতোটা সম্ভব যুক্তবর্ণহীন। তা না হলে ছড়া পাঠের প্রবাহমানতা কমে আসে। এ বিষয়ে ছড়াকারকে আরো সচেতন হতে হবে। ঋতু প্রকৃতি পশুপাখি ও দেশপ্রেমের অনেক ছড়া আছে এ বইটিতে। স্বাধীনতা শিরোনামের একটি ছড়ায় ছড়াকার লিখেন- মধুর মধুর স্বাধীনতা বুকের ভেতর বাজে ফুল পাখিরা গান গেয়ে যায় অবাক করা সাজে।
স্বাধীনতা স্বপ্ন ছড়ায় শহর কিংবা গাঁয়ে জল পরিরা ঢেউ খেলে যায় নদীর জলে নায়ে।
শুধু অন্তমিলই যেমন ছন্দ না তেমনি অর্থহীনতাও ছড়ার দাবি পূরণ করে না। ছড়ায় দক্ষ হয়ে উঠতে দরকার নিরবচ্ছিন্ন চর্চা ও সাধনা। আযাদ কামাল সে পথ দিয়ে এগিয়ে চলছেন যে পথ দিয়ে শিশু মনের প্রবেশ করা যায় খুব সহজে। বাংলায় এতো এতো বিখ্যাত ছড়া ও ছড়াকার আছে যে তাদের অতিক্রম করে যাওয়ার মতো ছড়া ও ছড়াকার হওয়া সহজ কোন কাজ নয়। তবু চেষ্টা থাকলে একদিন না একদিন একটি হলেও স্মরণীয় ছড়া জন্ম নিতে পারে। সেই ছড়াটির সকলকেই মুগ্ধ করবে। চব্বিশ পৃষ্ঠার এ বইটিতে আঠারোটি ছড়া সূচিবদ্ধ হয়েছে। ফোকলা দাঁতের এ হাসি যেন সব শিশু-কিশোর মনেই ছড়িয়ে পড়বে এ ছড়াগুলো পাঠ করলে।
১৯৭৬ সালের ৩ জানুয়ারি ঘাটাইলের এম. গলগন্ডায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলাভাষা ও সাহিত্যে সম্মানসহ এমএ ডিগ্রি লাভ করে অধ্যাপনায় নিযুক্ত হন। পিতা- মির্জা সৈয়দ আলী, স্কুল শিক্ষক ছিলেন। মাতা- সবজান বেগম, সুগৃহিণী। স্ত্রী- রেখা মির্জা দর্শনশাস্ত্রে বিএ (সম্মান)সহ এমএ ও একমাত্র সন্তান যারীন তাসনিম মুগ্ধকে নিয়ে তার যাপিত সংসার। কাব্যগ্রন্থ : স্বপ্নের ভেতর এক স্বপ্ন (২০০৫), ঘাসফুল কিংবা শ্রাবণের জল (২০১০)। ছড়াগ্রন্থ : মুগ্ধ হাসে ফোকলা দাঁতে (২০২০)। সম্পাদিত সাহিত্যকাগজ : অমৃত অন্বেষা। স্বীকৃতি: টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদ পুরস্কার (২০২০) কবি আযাদ কামাল শিক্ষানুরাগী এবং দক্ষ সাংস্কৃতিক সংগঠক। তিনি ঘাটাইলের সিংগুরিয়ায় প্রতিষ্ঠিত ‘সিংগুরিয়া মহিলা বি.এম কলেজ’র উদ্যোক্তা ও অধ্যক্ষ। তিনি বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ, টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও টাঙ্গাইল সাহিত্য সংসদ’র সহ-সাধারণ সম্পাদক।