খুব অনায়াসে যারা পাপ করেন, তারা চোখের একেবারে সামনে থাকলেও সবসময় তাদের অপরাধ আমাদের চোখে পড়ে না। আবার কখনো পাপের প্রায়শ্চিত্তের জন্য মানুষটি হয়তো নিজের মনেই অপেক্ষা করেন। ‘পাপ’ গল্পটি তেমনি। মুক্তিযুদ্ধের প্রায় অর্ধশতক পেরিয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এই দেশের অনেক মানুষ চুপচাপ, কিংবা সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। পরবর্তীতে তাদের অনেকেই সমাজপতি সেজেছেন, তেমনি একজন ‘পাপ’ গল্পটির ওসমান মুন্সি। ‘পাপ’ গল্পটির ছত্রে ছত্রে আছে সেই ওসমান মুন্সির অপরাধের কথা। মহান মুক্তিযুদ্ধেই আবার অনেকে নিতান্ত অনিচ্ছায় শান্তি কমিটিতে যুক্ত হয়েছিলেন। সেই দুঃসহ বেদনাদায়ক ঘটনা কী করে স্বাধীনতার প্রায় অর্ধশতক পর তার উত্তরসূরির বেদনার কারণ হয়ে যায়, সেই কাহিনি শান্তি কমিটির মেম্বার গল্প। অন্তঃপুরবাসিনী নারী কিংবা আধুনিক নারী- কখনো সে বঞ্চিত সমাজ সংসার কিংবা সঙ্গী দ্বারা। কখনো নিজেই নিজের ঈর্ষার বিষে নীল। কখনোবা শুধুই নিয়তির জালে বন্দিনী। নারীর অন্তর্দহন যেমন শক্তিদায়ী, আবার সে মাতৃরূপেও শক্তিশালী। দহন, মানুষ, আড়াল, পিসফুল ডেথ গল্পে নারীকে আঁকা হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে। ‘শিকার’ গল্পটি একেবারেই ভিন্নধারার। ভদ্রগৃহে গৃহকর্মী যৌন নিপীড়নের শিকার হলে প্রথাগত যে চিত্র দেখা যায় তার চেয়ে ভিন্ন একটি চিত্র আঁকার চেষ্টা শিকার গল্পটিতে। পাঠকের আপত্তি থাকতেই পারে নারী চরিত্র প্রাধান্য পাওয়ায়। কিন্তু নারী ছাড়া এই গল্পগুলো পূর্ণতা পেতো কি-না সেটি পাঠক ভেবে দেখবেন।