হিন্দু’’র হাতে লেখা হয়রত মুহম্মদ (সাঃ) জীবনী! শুনে অনেকেই আঁতকে উঠতে পারেন। গিরিশচন্দ্র আল কোরান অনুবাদ করেছেন জেনে অনেকে যেমন চমকে ওঠেন। কিন্তু কোনো একটি ধর্ম, ধর্মগ্রন্থ, ধর্মগুরুকে ওই ধর্মের অনুসারীরা বিশেষভাবে অনুসরণ করলেও ধর্মীয় বিষয়গুলো নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর একলার সম্পদ ও সম্পত্তি নয়। অন্য ধর্মের অনুসারীরাও পড়তে পারেন, বোঝার চেষ্টা করতে পারেন। এমনকি পাঠ- পুনঃপাঠের মাধ্যমে নতুন ব্যাখ্যাও তৈরি করতে পারেন। আর তাই হিন্দুর হাতে কোরান অনুবাদ বা মহম্মদের জীবনী রচনা কোনো সংকটের ব্যাপার নয়। আর তাই ১৮৮১ সালে শ্রীকৃষ্ণকুমার মিত্র লিখেছিলেন ‘‘মহম্মদ- চরিত ও ইসলাম ধর্ম্মের সংক্ষিপ্ত বিবরণ।’’ বইটি পাঠ ও আলাপ দাবি করে। কারণ এই বই হিন্দু-মুসলমানের পারস্পরিক রাজনৈতিক অবিশ্বাসের সময়ে রচিত। হিন্দু ও মুসলমান মধ্যবিত্ত যখন চাকরির বাজারে লড়াইয়ে নামতে আরম্ভ করেছে তখন এই বই ভিন্ন একটি বক্তব্য নিয়ে হাজির হয়েছে। শ্রীকৃষ্ণকুমার মিত্র বিজ্ঞাপনে বলেছেন, ‘‘হিন্দু ও মুসলমান বঙ্গের প্রধান অধিবাসী। দুঃখের কথা হিন্দু মুসলমানে তেমন সদ্ভাব নাই। হিন্দু মুসলমানকে যবন বলিয়া ঘৃণা করেন। হিন্দু যদি জানিতেন বেদান্ত যে এক পরব্রহ্মকে মানবের উপাস্য বলিয়া গিয়াছেন, কোরাণও সেই পরব্রহ্মকে মানবের একমাত্র। ১৮৮৩ সালে প্রথম প্রকাশিত এই বইটি নতুন করে রিপ্রিন্ট করছে বুকস অব বেঙ্গল।