সৈয়দ আবদুস সাদিক আমাদের কাব্যাঙ্গানে একজন পরিচিত শক্তিমান কবি। তবে কালোত্তীর্ণ কিনা সে বিচার কালের উপরেই; কিন্তু তাঁর কবি প্রতিভা নিশ্চয়ই গুণমুগ্ধ পাঠক ও পোড় খাওয়া বিদগ্ধজন ঠিকই বুঝে নেবে। তাঁর কবিতার উৎসারণের মুহূর্তগুলো ভীষণ ব্যঞ্জনাময়। বিষয়বস্তুর সাথে সাদামাটা অলঙ্কার, উপমা, নির্মাণের কৌশলে কাব্য-রসের প্রতিভাস ও বহুমাত্রিক রঙের রেখায়, অনুভবের প্রগাঢ় প্রমায়, উপমায় ও উপাচারে প্রতিষ্ঠিত কবিতাসমূহ। সৈয়দ আবদুস সাদিক অত্যন্ত আত্ম-সচেতন, সমাজ-সচেতন, নিমগ্ন-নিসর্গ ও প্রেমের কবি। অসাধারণ বোধ, অনুসন্ধানী দৃষ্টি, নন্দন প্রকাশের সৃজনশীলতা ও বিমুগ্ধ চিত্রময়তা তাঁকে নিজস্ব কাব্যাকৃতিতে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটি তাঁর “কবিতাসমগ্র দ্বিতীয় খণ্ড”। এই গ্রন্থে সামাজিক অনাচার, রাজনীতি ও নীতি-নৈতিকতার অবক্ষয়, আমাদের ছদ্মবেশী জীবনাচারণ, পরিবেশ, প্রতিবেশ, প্রাকৃতিক ও প্রকৃতি বিপর্যয়ের বিষয়গুলোকে ভাঙতে ভাঙতে কবি নিজেই নিজেকে ভেঙেছেন বারবার, বহুবার। দ্রোহে, ক্ষোভে, লজ্জায়, বিদ্রুপে, বিরহে ও প্রেমে, সময়ের চাহিদায় তাঁর কবিতা বারবার উঠে এসেছে; এইখানে কবি হয়ে উঠেছেন আপোসহীন নাঙ্গা-তলোয়ার, শিল্পের মধ্য থেকেই কবিতাকে কোরে তুলেছেন দ্রোহের হাতিয়ার, প্রেমের মণিহার। তিনি রুবাইয়াৎ ও গজল রচনায় সমান সিদ্ধহস্ত। ১৯৭৯ সালে তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ “রুবাইয়াৎ” প্রকাশ পায়। ১৯৯৩ সালে “সৈয়দ আবদুস সাদিকের নির্বাচিত কবিতা” এবং ২০১২ সালে “সৈয়দ আবদুস সাদিকের কবিতাসমগ্র” প্রকাশিত হয়। অর্ধ শতাব্দীরও অধিক কাল তাঁর নিরলস কাব্যচর্চা এবং সৃজনশীল সৃষ্টির গৌরব আমাদেরকেও সমানভাবে গৌরবান্বিত করে; যা আমাদের কাব্যধারাকে করেছে সমৃদ্ধ।