আর রাহীকুল মাখতুম ’ সীরাতের উপর যুগের সেরা বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী অনবদ্য একটি গ্রন্থ । যা বর্তমানে বিশ্বে বেশ আলোচিত ও প্রশংসিত । নবী প্রেমিকদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার একটি সফল ফসল । সৌদি আরবের সরকারি উদ্যোগে ১৩৯৬ হিজরীতে রাবেতায়ে আলমে ইসলামীর পক্ষ থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের জীবন - চরিত বিষয়কের উপর একটি রচনা প্রতিযোগিতা ঘোষণা করা হয় । প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানে । ঘোষণার পর বিভিন্ন দেশে এর বেপক সাড়া পড়ে যায় । সারা বিশ্ব থেকে নির্ধারিত সময়ে রচনা জমা হতে লাগলো । আরবী , ইংরেজি , উর্দুসহ বিভিন্ন ভাষায় সর্বমোট ১৭১ টি রচনা জমা পড়লো । তন্মধ্যে ৮৪ টি আরবী , ৬৪ টি উর্দু , ২১ টি ইংরেজি , ১ টি ফরাসি এবং ১ টি হুসাবী ভাষায় । তন্মধ্যে জামেয়া সালাফিয়া আল - হিন্দ থেকে অংশগ্রহণকারী আল্লামা সফিউর রহমান আল মুবারকপুরীর রচনাটি রাবেতার নিরীক্ষণ কমিটির যাচাই – বাছাইয়ের পর ১৭১ টি রচনার মধ্যে প্রথম স্থানের দূর্লভ গৌরব অর্জন করে এবং তৎকালীন ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল পুরস্কার হিসেবে লাভ করে । পরবর্তীতে রাবেতার ঘোষণা অনুযায়ী তা আরবী ভাষায় গ্রন্থ হিসেবে ‘ আর রাহীকুল মাখতুম ' নামে প্রকাশ করা হয় । পরে উর্দু ও।
আল্লামা সফিউর রহমান মুবারকপুরি (১৯৪৩-২০০৬) পুরো নাম সফিউর রহমান ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ আকবর ইবনে মুহাম্মাদ আলি ইবনে আব্দুল মুমিন মুবারকপুরি আযমি। তিনি একজন স্বনামধন্য ইসলামিক লেখক এবং ভারত উপমহাদেশের বিখ্যাত মুহাদ্দিস। তার লেখা রাসূল সা.-এর জীবনীগ্রন্থ আর-রাহিকুল মাখতুম সারা বিশ্বে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং বহু ভাষায় অনুদিত একটি বই আধুনিক সিরাতগ্রন্থ। তিনি ১৯৪২ সালের ৪ জুন ভারতের আযমগড় জেলার হোসাইনাবাদের মোবারকপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তিনি স্থানীয় শিক্ষকদের কাছে লেখাপড়া করেন এবং আরবী ভাষা, ব্যকরণ, সাহিত্য, ফিকাহ, উসূলে ফিকাহ, তাফসির, হাদিস ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে তিনি শরীয়াহ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন একই সাথে মাদরাসায় শিক্ষকতা এবং লেখালেখি শুরু করেন। ১৯৬৯ সালে মুবারকপুরের দারুত তালিম মাদরাসায় এবং ১৯৭৪ সালে বেনারসের জামিয়া সালাফিয়ায় শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৮ সাল হতে তিনি মদিনাস্থ আন্তজার্তিক ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাসূল সা. বিষয়ক গবেষণা ইন্সটিটিউটে কর্মরত থাকেন। সর্বশেষ রিয়াদের মাকতাবায়ে দারুস সালামে গবেষণার দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। এছাড়া বেনারসের মাসিক মুহাদ্দিস পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেছেন। আরবী ও উর্দু ভাষায় তাঁর রচিত গ্রন্থসংখ্যা ত্রিশোর্ধ্ব। ২০০৬ সালের ১ ডিসেম্বর জুমাবার বেলা দু’টায় এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে এই মহান মনীষী মাওলার সান্নিধ্যে চলে যান।