প্রতি যুগে যে গোষ্ঠীর মানুষ যে যে বিষয়ে উৎকর্ষের অহঙ্কার করেছে, আল্লাহ তাদের সেই সর্বোচ্চ পারফর্মেন্সকে চ্যালেঞ্জ করেছেন নিজ প্রেরিত নবীদের সত্যতা প্রমাণের জন্য। একে মুজিযা বলে। মুসা আলাইহিস সালামকে দিয়ে ‘যাদুবিদ্যা’কে চ্যালেঞ্জ করিয়েছেন, ঈসা আলাইহিস সালামকে দিয়ে ‘চিকিৎসাশাস্ত্র’কে। শেষনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সব দেশের জন্য, সব যুগের জন্য। তাই তাকে এমন একটা কিছু দিতে হবে, যা সব দেশের উৎকর্ষের মোকাবেলায় তাদেরকে হতবাক করে দেবে। সব যুগের উৎকর্ষকে চ্যালেঞ্জ করে অবাক করে দেবে বোদ্ধাদের। আরবে প্রথম যুগ ছিল কাব্যসাহিত্যের, কুরআন এসে সেই সর্বোচ্চ পারফর্মেন্সকে চ্যালেঞ্জ করেছে-সমালোচনা নয়; পারলে এরকম একটা কিতাব, নয়তো একটা সূরা, কমসেকম একটা আয়াতই লিখে নিয়ে এসো। আরব স্বভাবকবিরা হয়রান হয়ে ঘোষণা করে দিয়েছে- এটা কোন মানুষের রচনা নয়। বর্তমান যুগ-পর্যবেক্ষণলব্ধ জ্ঞানের, যাকে আমরা ‘বিজ্ঞান’ নামে চিনি। আমাদের সর্বোচ্চ পারফর্মেন্স বিজ্ঞান, আমাদের অহংকার। মানবসভ্যতা এতো ক্ষমতা আগে কখনও পায়নি। আজও তাহলে কুরআনের চ্যালেঞ্জ করার কথা আধুনিকতম সব আবিষ্কারকে। আর বোদ্ধাদের হবার কথা হয়রান, নির্বাক, হতবুদ্ধি। এসো, সমালোচনা তো রাস্তার পাগলেও করতে পারে; পারলে এর মত বা আরও ভাল সমাধান বাতলে দেখাও। চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশের জনগণের বেশিরভাগই ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী, আর সংখ্যাগরিষ্ঠ এই মুসলিম জনগোষ্ঠীর নিজেদের ধর্মের বিভিন্ন বিষয়ে সম্যক জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রয়োজন হয় নানাবিধ পড়াশোনার। আর বিস্তৃত এই পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে গবেষণা ও আলোচনা নিয়ে এবং বিভিন্ন ইসলামি আদর্শ ও মতবাদমূলক বই রচনা করে সম্প্রতি আলোচনায় এসেছেন ডা. শামসুল আরেফীন। পেশাগত জীবনে তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী হলেও একজন মুসলমান হিসেবে ইসলামি আদর্শে বলীয়ান হয়ে তিনি রচনা করেছেন বেশ কিছু ইসলাম সম্পর্কিত বই, যেগুলোর কোনোটি রচিত হয়েছে গল্পের আকারে, আবার কোনোটি রচিত হয়েছে প্রবন্ধ হিসেবে। ইসলাম বিষয়ক এই লেখক জন্মগ্রহণ করেন ১৯৮৯ সালে। সাদামাটাভাবে জীবন পার করা শামসুল আরেফীন শিক্ষাজীবন অতিবাহিত করেছেন ক্যাডেট কলেজে। ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ থেকে তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। এরপর ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি এমবিবিএস ডিগ্রি অর্জন করেন। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই এদেশীয় মুসলমানদের মাঝে লাভ করেছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই সমূহ-তে ইসলামি মতবাদ ও আদর্শ প্রকাশের পাশাপাশি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ের যৌক্তিক ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, এবং ইসলামের বিরুদ্ধে আসা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়াও সমাজের বিভিন্ন বিষয়ের ইসলামি ব্যাখ্যা ও ইসলামি উপায়ে চলার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিধানও উঠে এসেছে তাঁর বইগুলোতে। ডা. শামসুল আরেফীন এর বই সমগ্র এর মাঝে 'কষ্টিপাথর', 'ডাবল স্ট্যান্ডার্ড', 'মানসাঙ্ক' ইত্যাদি অন্যতম। মানুষকে দিনের শেষে সৃষ্টিকর্তার দেয়া সমাধানের পথেই ফিরে আসতে হবে- এ কথাই ফুটে ওঠে তার রচিত বইগুলোতে।